অ্যান্ড্রয়েড ফোনের পুরো মজা পেতে হলে আপনার ফোনে যেই অ্যাপগুলো অবশ্যই থাকতে হবে। সব প্রো ভার্সন।

আসসালামু আলাইকুম। সুপ্রিয় টেকটিউনস বন্ধুরা, এক রাশ উষ্ণ শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা নিবেন। অনেকদিন পর টেকটিউনস এ লিখতে বসলাম। টেকটিউনস এ এখন খুব বেশী মান সম্মত টিউন হয় না। অধিকাংশ টিউন এ সাধারন। এন্ডয়েড নিয়ে প্রতিদিন এ অনেক টিউন হয়। আসলে এন্ডয়েড এমন এক প্লাটফর্ম, যেখানে ভালো এপ্লিকেশন এর অভাব নেই। সবাই নিজের প্রয়োজন অনুসারে তার মোবাইল সাজায়। তারপর ও কিছু কমন এপ্লিকেশন আছে, যেগুলো আমার মত অলস ও অকাজের লোকদের অনেক বেশী লাগে। মুলত আজকের টিউন টি এসব এপ্লিকেশন নিয়ে, যেগুলো আপনার এন্ডয়েড মোবাইল চালানোর অভিজ্ঞতা বদলে দিবে। আমি সব গুলো এপ্লিকেশন এর প্রো ভার্সন দিব, সুতরাং বিরক্তিকর অ্যাড এর হাত থেকে ও মুক্তি। তাহলে কথা না বাড়িয়ে চলুন কাজে নেমে পড়ি।

১. আপনার মোবাইল এ সবচেয়ে বেশী কোন কাজ টি আপনি করেন? আমার মতে অধিকাংশ এ বলবেন গান শুনা ১ নাম্বার এ। অন্তত আমার বেলায় এটা সত্য। গান শুনার জন্য সবাই খুঁজেন এমন এক টি অ্যাপ যেখানে সব কিছু নিজের মত করে কাস্টমাইজ করতে পারবেন। হ্যা, এখন আমি যে অ্যাপ তার কথা বলব, সেটা আপনার গান শুনার অভিজ্ঞতা বদলে দিবে। চাইলেই আপনি রেন্ডমলি গান শুনতে পারবেন। অথবা চাইলে ফোল্ডার ভিত্তিক ও গান শুনতে পারবেন। শুনতে পারবেন আর্টিস্ট, অ্যালবাম, জেনেরি অথবা নিজে প্লেলিস্ট তৈরি করে। গান এর উপর নির্ভর করে, Classic, Bass, Rock, Metal ইত ্যাদি অথবা নিজে কাস্টমাইজ করে। গানের লেভেল এডিট করে অ্যালবাম আর্ট এবং গানের লিরিক অ্যাড করতে পারবেন।
আপনারা এতক্ষনে নিশ্চয় রেগে মেগে অস্থির, আরে মিয়া কি প্যাচাল শুরু করছেন? অ্যাপ এর নাম বলেন। অ্যাপ টি হল জেট অডিও (JET AUDIO)

Jet Audio, Music Player
Jet Audio

২. এন্ডয়েড ফোন ব্যবহার করেন অথচ বাংলা লিখা লাগে না, এরকম লোক খুবি অল্প। বাংলা লিখার জন্য সেরা অ্যাপ রিদমিক কীবোর্ড। এটা নিয়ে কারো কন দি্বমত থাকার কথা নয়। কেউ বিশ্বাস করেন আর নাই করেন, আমার এই টিউন টি ও অভ্র দিয়ে লিখতেছি।

৩. পড়া লিখা এখন আর ছাত্রদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। অন্তজালের উম্মুক্ত পাঠশালায় এখন সবাই কোন কিছু খুঁজে না পেলে বা বুঝতে না পারলে একবার ডু মারে গুগল মামার সমীপে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ভালো ওয়েবপেজ গুলো ইংরেজিতেই থাকে। সেক্ষেত্রে আপনি ব্যবহার করতে পারেন গুগল এর ট্রান্সলেট। যদিও ১০০% ঠিক বাংলা ট্রান্সলেট হয় না, তবুও বুজা যায়।

৪. একি সাথে বাংলা থেকে ইংরেজি এবং ইংরেজি থেকে বাংলা অবিধান যদি পেতে চান, তাহলে চোখ বন্ধ করে নিচের অ্যাপ টি নামান। সাথে অবিধান এ না থাকা শব্দ অ্যাড করতে পারবেন। ওয়ার্ড পাজেল খেলতে পারবেন। এবং স্টাডি প্লান সেট করতে পারবেন। সাথে পাবেন প্রত্যেকটা শব্দের Noun, Adjective এবং Verb from.

৫. আপনার কন্টাক্টস, মেসেজ, গুরুত্বপুর্ন অ্যাপ, কল হিস্টরী ব্যাকআপ রাখার জন্য ব্যবহার করতে পারেন সুপার ব্যাকআপ অ্যাপ টি। ব্যাকআপ রাখতে পারবেন ইমেইল এ অথবা মেমরিকার্ড এ।

৬. ফাইল ম্যানেজার আপনি অনেক ব্যবহার করেছেন। ব্যবহার করে দেখতে পারেন ES FILE EXPLORER. ফাইল ম্যানেজার ব্যবহারের অভিজ্ঞতা বদলে যাবে।

৭. ভিডিও প্লেয়ার হিসেবে যদি এখন MX PLAYER এর নাম বলি তাহলে অনেকেই রেগে যাবেন। রাগার দরকার নাই, আমি জানি সবাই এটাই ব্যবহার করেন। তাও লেটেস্ট প্রো ভার্সন দিলাম, যার লাগে নামাইয়া নিয়েন।

কোডেক ফাইল টা দিয়ে দিলাম। নামিয়ে ইন্সটল দিয়ে সেটিং ঠিক করে দেন, সব ধরনের অডিও ফাইল সাপোর্ট করবে।

৮. স্মার্ট ফোনের সব চেয়ে বেশী মজা ইবুক পড়তে। আমি আমার ফোনের মাধ্যেমে প্রায় ১০০ এর উপর বই পড়েছি। যাদের মোবাইল এ বই পড়ার অভ্যাস আছে, তাদের জন্য অদৃতীয় অ্যাপ হল মুন+ রিডার। অটো স্ক্রল সুবিধা থাকার কারনে আপনি বার বার পাতা উল্টানোর হাত থেকে রেহাই পাবেন। ইংলিশ বই হলে আপনাকে পড়ে ও শুনাবে। স্ক্রিনশট দিলাম। ভালো লাগলে প্রো ভার্সন টা সংগ্রহে রাখতে পারেন।


৯. যারা মোবাইল এ ডি এস এল আর এর মজা নিতে চান তারা ব্যবহার করতে পারেন এই ক্যামরা অ্যাপ টি। যাদের মোবাইল ক্যামেরায় অটো ফোকাস আছে, তাদের ফোন এ এই অ্যাপ টি কাজ করবে। উদাহরন হিসেবে আমার সিম্ফনি মোবাইল দিয়ে তোলা কয়েক টা ছবি দিলাম।

১০. যাদের মোবাইল এ অটো ফোকাস নাই তাদের মন খারাপ করার দরকার নেই। আপনাদের জন্য এই অ্যাপ টি। এটা দিয়ে ছবি তোলার পরে আপনি এফেক্ট দিতে পারবেন। অ্যাপ টি হল আফটার ফোকাস। প্রো ভার্সন দিয়ে দিলাম।

১১. এন্ড্রয়েড ফোনের বড় সমস্যা হয় র্যাম নিয়ে। যাদের ফোনের র্যাম কম তাদের তো আরো বিপদ। র্যাম ক্লিনার হিসেবে আমি এই অ্যাপ টি ব্যবহার করি। চাইলে নামিয়ে নিতে পারেন।

১২. অনেকে ফোন এর ইন্টারপেস পরিবর্তন করার জন্য লঞ্চার ব্যবহার করেন। আমি ও কয়েকটা ব্যবহার করেছি। আমার কাছে সেরা মনে হয়েছে নোভা লঞ্চার। প্রথম কথা হচ্ছে যাদের ললিপপ ভার্সন না, তাদের জন্য এটা আনন্দের খবর। এই লঞ্চার এ আপনি পাবেন ললিপপ এর ইন্টারপেস। এই লঞ্চার এ মাল্টি টাস্কিং সুবিধাটা অস্থির। মেনু আইকন পরিবর্তন, মেনু কাস্টমাইজেশন সহ আর অনেক সুবিধা আছে। প্রো ভার্সন দিলাম।

১৩. ইন্টারনেট থেকে কোন লিখা কপি করলেন, দৃতীয় বার আরেক টা লিখা কপি করলে আর আগের টা পাবেন না। এই সমস্যা এখন থেকে আর হবে না। ক্লিপার নামের এই অ্যাপ টি আপনার সমস্যার সমাধান করে দিবে। আপনি ইন্টারনেট থেকে কোন লিখা কপি করলে অটোমেটিক সেভ করে নিবে ক্লিপার। তাছাড়া ও দৈন্দদিন সব নোট লিখে রাখতে পারবেন এখানে। শেয়ার করতে পারবেন সব সোস্যাল মিডিয়াতে।

১৪. মোবাইল এ সব চেয়ে বেশী বিরক্তিকর কাজ হচ্ছে বার বার আনলক বাটন চাপা। যদি এমন হত আপনি ফ্লিপ কভার উঠালেই মোবাইল আনলক হয়ে যাবে, আবার ফ্লিপ কভার ফেল্লেই মোবাইল লক হয়ে যাবে। অথবা আপনি সেন্সর বরাবর আঙুল নাড়িয়েই মোবাইল কে লক, আনলক করতে পারবেন। হ্যা, আসলেই আপনি তা পারবেন। অটোম্যাশন লকার নামের এই অ্যাপ টি বেবহার করেই আপনি অতি সহজে লক, আনলক এর কাজ করতে পারবেন। আপনাদের সুবিধার জন্য এক টা ভিডিও দিয়ে দিলাম।

১৫. ফাইল, ফোল্ডার অথবা অ্যাপলিকেশান লক এর জন্য এই অ্যাপ টি বেবহার করতে পারেন।

১৬.ব্যাটারীর কত পার্সেন্ট চার্জ আছে, তা দেখার জন্য ব্যবহার করতে পারেন "পার্সেন্ট এনাবেলার". বেবহার করে মজা পাচ্ছি। উপরের নোটিফিকেশন বার এ ব্যাটারির লোগো টার মধ্যে ব্যাটারির পারসেন্টেজ দেখা যাচ্ছে।

১৭. ইন্টারনেট এর স্পীড দেখার জন্য ব্যবহার করছি এই অ্যাপ টি। ভালোই লাগে।

১৮. অনেক সময় ই লজ্জায় পড়তে হয়, যখন কেউ জিজ্ঞেস করে আজকে বাংলা মাসের কত তারিখ। দেখা যায় বাংলা কোন মাস চলে সেটাই জানি না। আবার তারিখ! সেই ক্ষেত্রে আমি বং ক্যালেন্ডার নামক অ্যাপ টি বেবহার করে মজা পাচ্ছি। অস্থির ফিচার হচ্ছে ডিস্পলে তে ইংরেজী তারিখের সাথে বাংলা মাস ও তারিখ ও শো করে।

১৯. স্ক্রিনশট নেওয়ার জন্য ব্যবহার করতে পারেন এই অ্যাপ টি।

২০. মাইক্রোসফট অফিসের সব কাজ এখন মোবাইল এই করতে পারবেন। তার জন্য ব্যবহার করতে পারেন অফিস স্যুইট নামক অ্যাপ টি। অনেক মোবাইল এ ডিফল্ট হিসেবেই দেওয়া থাকে। তাও দিলাম, প্রয়োজন মনে করলে নামিয়ে নিতে পারেন।

২১। আপনি অ্যান্ড্রয়েড ফোন এর প্লে স্টোর এ লগিন করেছেন মানে আপনার ও একটা জিমেইল আইডি আছে। আর জিমেইল আইডি থাকা মানে আপনি গুগল এর ১৫ জিবি ক্লাউড স্টোরেজ এর মালিক। হ্যাঁ গুগল ড্রাইভ এ আপনি ১৫ জিবি স্টোরেজ এ আপনি আপনার গুরুত্বপূর্ণ সব ফাইল আপলোড করে রাখতে পারবেন। মোবাইল হারিয়ে গেলে ও আপনি জিমেইল আইডি তে লগইন করে আপনার সব ফাইল খুব সহজে ফিরে পেতে পারেন।

২২। ইউটিউব থেকে ভিডিও ডাউন লোড এর সেরা অ্যাপ হচ্ছে টিউবম্যাট। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে আপনি শত বার খুঁজে ও প্লে স্টোরে এই অ্যাপটি পাবেন না।
তাই চাইলে এখান থেকে নামিয়ে নিতে পারেন।

অ্যান্ড্রয়েড এ আরও শত শত ভালো অ্যাপ আছে। যে যার প্রয়োজন মত অ্যাপ প্লে স্টোর থেকে নামিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। তবে আমি যেই অ্যাপগুলো দিলাম এগুলো আমি মনে করি সব ফোনে থাকা উচিত। আজকে এই পযন্ত। হাজির হব অন্য কোন টিউন নিয়ে।

Level 0

আমি নূর মোহাম্মদ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 10 বছর 6 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 5 টি টিউন ও 32 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস