অটোক্যাড শিখুন আর উজ্জল ক্যারিয়ার গড়ুন

টেকটিউনসের সাথে অনেকদিন যাবত যুক্ত আছি সময়ের অভাবে কোনদিন টিউন করা হয়নি। কিন্তু প্রতিদিন আমি টেকটঊনসের সবগুলো টিউন পড়ি যেগুলো আমার খুব ভাল লাগে। কিন্তু কম্পিউটারে বাংলা আমি খুব একটা টাইপ করতে পারিনা তাই টিউন করা হয়নি।

অটোক্যাড হচ্ছে এই সময়ের সবছেয়ে জনপ্রিয় এবং সহজ একটি সফটওয়্যার এর নাম। যা দিয়ে খুব সহজে যেকোনো ডিজাইন বানানো যায়। আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব আমি যেভাবে অটোক্যাড এ আমার একটি সোনালি ক্যারিয়ার গড়েছিলাম।

সালটা ছিল ২০০৮ সবে ডিগ্রি বর্ষ বা ফাইনাল ইয়ারে পড়ছিলাম। বড় ভাই সৌদি আরবে একটা এলুমিনিয়াম কোম্পানিতে অটোক্যাডে কাজ করত। ভাইয়া বলল ভাই বিদেশ চলে আই ব্যবসা করবি। আমি ও আর অমত করলাম না চলে গেলাম দূর প্রবাস সৌদি আরবে।

এরপর সেখানে বড় ভাইয়ার কোম্পানিতে জয়েন করলাম একজন এলুমিনিয়াম ফ্যব্রিকেটর হিসাবে। আমাকে নিতে ভাইয়ার অনেক টাকা খরচ হল তাই ভাইয়া বলল কিছুদিন চাকরি কর তারপর কিছু টাকা জমা হলে তুকে ব্যবসা করার জন্য দোকান নিব। ২মাস হল সেখানে কাজ করতে করতে একদিন সুপারজার আমাকে সাইটে পাটাল এলুমিনিয়াম এর দরজা জানালা ফিটিং করার জন্য। সাথে ছিল একজন ফিলিপিনি যে অনেকদিন যাবত ওই কম্পানিতে কাজ করত। যখন কাজে গেলাম দেখলাম বিশাল এক রাজ প্রাসাদ অনেক উপরে কাজ করতে হবে। আমি দেখে ভয় পাচ্ছিলাম এতো উপরে কাজ করতে। ফিলিফিনি লোকটা আমাকে বলল ৭ তলার উপরে উটে জানালা গুলো লাগিয়ে ফেলতে। নিছে দেখছি যেন মনে হচ্ছে আমি আকাশে আর এখান থেকে পড়লে হাড্ডি ও আর খুঁজে পাবেনা। আমি ওখানে উটে কাজ করতে পারবনা বলে দিলাম। সাথে সাথে ওই ফিলিপিনি ধারালো চুরি বের করল বলল না করলে এটা ঢুকিয়া দেব। চারিদিকে দেখলাম সবগুলো ফিলিফিনি কাজ করতেছে ভাবলাম এখন যদি কিছু করি তাহলে সবাই এসে আমাকে মারা শুরু করবে। তাই এক দৌড় দিয়ে সেখান থেকে বাংগালি যেখানে ছিল সেখানে গেলাম কোম্পানির আর ও অনেক বাংলাদেশি কাজ করত। যখন অই ফিলিপিনি কে বাংলাদেশিদের সামনে পেলাম তখন ইচ্ছেমত কিছুক্কন পিটালাম। আর কাজ করলাম না ফ্যাক্টরিতে আসলাম বড় ভাইয়াকে বললাম পুরো ঘটনা তখন ভাইয়া মালিক কে জানাল ব্যাপারটা। মালিক একদিন খারখানার ভিতর আসল আমাকে দেখল তারপর অফিসে গিয়ে বড় ভাইয়াকে বলল তোর ভাই কতোটুকু পড়ালেখা করেছে? ভাইয়া বলল ডিগ্রি তখন মালিক বলল তোর ভাইকে কাল থেকে অফিসে তোর সাথে কাজ করতে বলবি।

কি সুন্দর অফিস আমি ওখানে কাজ করব আমি ভাবতেই পারছিলাম না। ভাইয়া তখন ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপারমেন্টের হেড। অটোক্যাড যদি ও আগে ভাইয়া একটু একটু তালিম দিয়েছিল। সেই শেখায় কিচ্ছু হবেনা। মালিক বলে দিল আমাকে ভাল করে তালিম দেওয়ার জন্য। ভাইয়া অল্প দিনের মাঝে আমাকে অনেক টা এগিয়ে নিয়ে গেল। অফিসে তখন অনেক ফিলিপিনি ও ভারতিয় কাজ করছিল কিন্তু আমার মত কাজ পারত না। অনেকএ আছে ৩ বছর যাবত কাজ করছে কিন্তু প্রোপাইল বানানো এলিভেশন প্লান কিছুই পারত না। আমি এত তারাতাড়ি কাজ পারাতে অনেকে আমাকে হিংসা করতে লাগল। ওখানে শিখা অবস্তায় অনেক কম বেতন দেয়। দেখতে দেখতে ২ বছর হয়ে গেল কিন্তু দেখলাম বেতন বাড়ল খুব কম। যারা আমার হাফ কাজ ও পারেনা তাদের বেতন আমার ৪ গুন। কারন আমার বাংলাদেশ থেকে অই কাজের অভিজ্ঞতা আছে এমন কো সাটিফিকেট নাই তাই আমার বেতন ও অনেক কম। তখন ও আমি ওই কোম্পানিতে পাসপোট জামা দেয়নি। তাই আমি ভাবে লাগলাম কিভাবে একটা ভাল জব পাওয়া যায়।

বড় ভাইয়াকে ছূটিতে পাটিয়ে আমি একদিন বের হলাম নতুন চাকরি জন্য। ৩টি কোম্পানিতে সেদিন সিভি জমা দিয়েছিলাম সেম এলুমিনিয়াম কোম্পানিতে। দেখলাম তার থে ২টি কোম্পানি আমাকে ডেকেছে। তার থেকে দেখলাম একটি অনেক বড় গ্রুপ অব কোম্পানি ও আছে। আমার প্রথম পচন্দ সেটি। সেখানে তারা ইন্টারভিউ নিল প্রায় ৫হাজার রিয়াল বাংলার প্রায় ১ লাখ টাকা বেতন দেবে টিক করল। গাড়ি দেবে এবং কোনদিন ফ্যামিলি আনতে চাইলে কোম্পানি সব খরচ বহন করব। আমি তো ভাবছিলাম সব সবপ্ন মনে হচ্ছিল। কিন্তু একটা প্রবলেম পাসপোট দিতে হবে কপিলের কাছে গেলাম কিন্তু সাপ জানিয়ে দিল এখন কপিল ট্রান্সপার বন্ধ তাই পাসপোট দিবেনা। কি করা যায় এবার কোম্পানির লোক দিয়ে ফোন করালাম এবং অনেক টাকা দেব জানালাম তারপর ও পাসপোট দিলনা। তাই এবার অই চাকরির আশা আমাকে ছাড়তে হল। কারন ওরা পাসপোট জমা দিতে না পারলে কোন অফিসিয়াল কাজে লোক নেবেনা।

এবার অপার পাওয়া অন্য কোম্পানিতে গেলাম্ সেখানে ও আমাকে নেওয়ার জন্য একেবারে উটেপড়ে লেগেছে। আমি পাসপোট পরে জামা দেব বলে সেখানে ডুকে গেলাম। আমার কাজ বিভিন্ন এলুমিনিয়ামের ডিজাইন গুলো দেখে আমার প্রতি যেন তাদের অনেক সম্মান বেড়ে গেল। ওখানে আর ও ৪জন অটোক্যাড ডিজাইনার কাজ করত কিন্তু আমার মত করে ইঞ্জিনিয়ারিং ডিজাইন বানাতে পারত না। তাই অল্প দিনে আমি মালিকের চোখের মনি হয়ে গেলাম। যেকোনো ডিজাইনের আলোচনা করত আগে আমার সাথে। আমার অনেক ভাল লাগত এমন জক জকে তকতকে পরিবেশে কাজ করতে আমি আমাকে হারিয়ে ফেলেছি। একের পর এক বড় বড় ডোম ডিজাইন অনেক বড় বড় কোম্পানির এক্সটেরিয়র ডিজাইন গুলো আমি খুব ভালভাবে শেষ করছিলাম। ফিলিস্তিনি বস আমাকে অনেক ভালবাসত তাই যেকোনো কাজ আমাকে দিয়ে চেক করাত। মাঝে মাঝে সাইট বিজিট করতে হত।

আপনারা যারা এই অটোক্যাড এ ক্যারিয়ার গড়তে চান তারা এই কাজে ভাল্ ভাল ফিল্ড রয়েছে। পারলে কাজের শিখেছেন তার সাটিফিকেট নিয়ে নেওয়া ভাল। কারন অনেক কোম্পানি আছে সাটিফিকেট ছাড়া অফিসিয়াল কাজে নিতে চাইনা। এডুকেশনাল সাটিফিকেট গুলো অনেক বেশি প্রয়োজন হয়ে পড়ে।

অটোক্যাডে কাজের কোন অভাব নাই যেখানে যাবেন সেখানে অনেক চাহিদা ব্যাপক। যেমন এলুমিনিয়াম কোম্পানি, কন্সট্রাকশন কোম্পানি, এক্সটেরিয়র ডিজাইন কোম্পানি এরকম আর ও শত শত কোম্পানি আছে অটোক্যাড কাজ করার জন্য। তাই ভাল অভিজ্ঞতা করতে পারলে যেকোনো যায়গায় আপনার সোনালী দিন ওয়েট করছে আপনার জন্য।

 

মোঃ মনজুর আলম

অটোক্যাড ডিজাইনার

Rafco Aluminium and Metal furniture Ltd.

Riyadh Saudi Arabia

আমার ওয়েবসাইট http://www.sameotech.com

আমার ইউটিউব চ্যানেল https://www.youtube.com/channel/UC99TLo5fAEovY9gTaIlPU6Q?view_as=subscriber

ফেসবুক আইডি https://web.facebook.com/manju.alam.3

 

 

Level 1

আমি মনজুর আলম। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 3 বছর 11 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 8 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 2 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 13 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস