বর্তমানে আমরা মোবাইল ছাড়া অচল কিন্তু আমরা কি কেও একবার এর জন্যও ভাবি যে এই মোবাইল আমাদের ঠিক কতটা ক্ষতি করছে ? ঘণ্টার পর ঘণ্টা নিশ্চিন্তে কথা বলে যায় মোবাইল এ।
আজকে আমি যে টিউনটা করতে যাচ্ছি সেটা একটা সতর্কতা মুলক টিউন।
বিপদ সমূহ
১) বিজ্ঞানীদের মতে, একটি পরমানবিক চুল্লির যে বিপদ তার থেকে মোটেও কম নয় এই ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড এর ক্ষতি। যাদের করোটি যত পাতলা, তাদের মোবাইল এফেক্ট তত বেশি। ব্রেন টিউমার থেকে শুরু করে নার্ভাস সিস্টেম ব্রেকডাউন, হার্ট অ্যাটাক সব কিছুরই সম্ভবনা বেড়ে চলেছে।
২) মোবাইল ফোন ব্যবহার এর ফলে আমাদের মস্তিস্কের একটা অংশ উত্তপ্ত হয়ে উঠে। তার ফলে মস্তিষ্কের টিস্যু গুলি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। মগজেও থাকে তার প্রতিক্রিয়া।
৩) ঝড়ের সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার করলে সমূহ বিপদ দেখা যেতে পারে।
৪) বুক পকেটে মোবাইল রাখলে হার্টের সমস্যা হবার সম্ভবনা বেশি থাকে।
৫) ইয়ার ফোন ব্যবহার না করে, কানের গোড়ায় রেখে মোবাইল এ বেশি কথা বললে কানে কম শোনা এমনকি বধিরতার আশঙ্কা পর্যন্ত থাকতে পারে।
৬) বন্ধ্যাত্ব বাড়ছে। অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার করলে মুখে ক্যানসার বা মেলিগনানট টিউমার এর ঝুঁকি বাড়ে।
৭) শিশুদের মস্তিস্কের কোষ নরম বলে তাদের মারত্মক ক্ষতি হচ্ছে। বিজ্ঞানী হাইল্যান্ড দেখিয়েছেন, তড়িৎ চুম্বকীয় দূষণের কারনেই শিশুরা এপিলেপসি ও অ্যাজমায় ভুগছে।
৮) লেফ সেলফড তথ্য-প্রমানের ভিত্তিতে সুদৃঢ় হয়ে যথেষ্ট জোরের সঙ্গে বলেছেন, সেলফোন এর প্রতিটা কল আমাদের মস্তিস্কের ক্ষতি করে। এমন কি প্যাসিভ স্মকারদের মত যে লোকটা মোবাইল ফোন ব্যবহার করছে না কিন্তু মোবাইল ব্যবহারকারির কাছে রয়েছে সেও ক্ষতি গ্রস্থ হচ্ছে। ফ্রান্সে সান্তিনি আর সুইডেন এ সানডস্তরম আর মাইলড এর সমীক্ষার ফলাফল লেফ সেলফড এর বক্তব্য কে আরও সুদৃঢ় করে তোলে। এঁদের সমীক্ষা অনুযায়ী, সেলফোন ব্যবহারকারি, ২৫% পর্যন্ত বিভিন্ন স্নায়বিক সমস্যায় ভুগছেন। যেমন, মাথাঘোরা, ক্লান্তি, স্মৃতি শক্তি হ্রাস, মাথা ঝিম ঝিম করা, ক্লান্তি প্রভৃতি।
তাহলে এখন কি করবেন ? মোবাইলটাকে কি জলে ছুঁড়ে ফেলে দিবেন ? নাকি কিছু নিয়ম মেনে দিব্যি মোবাইল ব্যবহার করবেন ? আসলে দ্বিতীয়টাই সত্য। আমরা যদি কিছু নিয়ম মেনে মোবাইল ব্যবহার করি তাহলে আমরা অনেক রোগের হাত থেকে রক্ষা পাবো।
নিয়মাবলী
১) মোবাইল ফোন এর স্পিকার অন করে কথা বলার চেষ্টা করুন যাতে আপনার মাথা মোবাইল থেকে দূরে থাকে। যদিও এটাও ক্ষতিকর কিন্তু ঠিক ততটা নয় মাথার সামনে মোবাইল ধরলে যতটা ক্ষতি হবার সম্ভবনা থাকে তার থেকে অনেক কম।
২) সম্ভব হলে earbuds ইউজ করুন। এগুলো মুলত আপনার মাথাকে মোবাইল থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করবে।
৩) মোবাইলটাকে সারাদিন অন করে রেখে আপনার দেহের সাথে সংযুক্ত থাকতে দেবেন না। অথবা যদিও রাখেন তাহলে দেখবেন যেন মোবাইল এর অ্যান্টেনা কোনোভাবেই আপনার দিকে না থাকে (সাধারনত মোবাইল এর পেছনে থাকে)।
৪) গাড়ি, ট্রেন, অথবা প্লেন এ মোবাইল এর ব্যবহার যতটা সম্ভব কম রাখুন। মোবাইল ফোন লোহা নির্মিত জায়গায় বেশি পাওয়ার ইউজ করে আর অনেক বেশি radiation ও ছড়ায়। এছারা গাড়ি বা ট্রেন এ মোবাইল ব্যবহার করলে অ্যাকসিডেনট হবারও ভয় থাকে।
৫) যখন আপনি ঘরে থাকবেন তখন মোবাইল এর পরিবর্তে ল্যান্ডলাইন ব্যবহারের চেষ্টা করুন। মনে রাখবেন কর্ডলেস ল্যান্ড ফোন গুলি কিন্তু মোবাইল থেকে কম radiation ছড়ায় না। তাই কর্ড যুক্ত ল্যান্ড ফোন ব্যবহার করুন।
৬) আপনার মোবাইল এর জন্য একটা কাভার কিনুন যেটা ফোনের radiation ছড়ানোকে কিছুটা হলেও রোধ করবে।
৭) এমন একটা ফোন ব্যবহার করুন যেটা কম radiation ছড়ায়। বর্তমানে মোবাইল ফোন কোম্পানি গুলো স্বাস্থ্যের ব্যাপারে সচেতন হয়েছে, এবং তারা এমন ধরনের মোবাইল তৈরির চেষ্টা করছে যেগুলো কম radiation ছড়ায়। এখনো পর্যন্ত তৈরি মোবাইল গুলোর মধ্যে সবথেকে কম radiation ছড়ায় LG Quantum মোবাইলটা।
৮) ভিটামিন C আর E সমৃদ্ধ খাবার খান যেগুলো আপনার দেহের কোষগুলোকে ধ্বংস হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করবে। লঙ্কা, পেয়ারা, পেঁপে, কমলা লেবু, Strawberries প্রভৃতি খান এতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন C আছে আর লাল লঙ্কা পাওডার, পাইন বাদাম, রান্না করা শাক প্রভৃতি খান এতে ভিটামিন E আছে।
৯) রাত্রে যখন শোবেন তখন মোবাইল নিয়ে শোবেন না কারন রাত্রে মোবাইল আপনার দেহের সঙ্গে অনেকক্ষণ ধরে সংযুক্ত থাকে বলে আপনার দেহে এর প্রভাব অনেক বেশী পরতে পারে।
১০) মোবাইল এর সিগন্যাল লক্ষ্য করুন। যখন কম থাকে তখন মোবাইল আরও বেশী radiation ছড়ায় তাই আগে সিগন্যাল পুরো আসতে দিন তারপর নাহয় ফোন করবেন।
১১) মোবাইল এ কথা বলার থেকে ম্যাসেজে কথা বলুন, এতে অন্তত মোবাইলটা আপনার মাথার কাছ থেকে দূরে থাকবে ফলে ক্ষতি হবার সম্ভবনা কিছুটা হলেও কমবে।
যাই হোক ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন এই কামনা করে বিদায় নিচ্ছি।
ও আর যাবার আগে একটা কথা না বলে পারছি না সেটা হল শনিবার টেকটিউনস এ একটা টিউমেন্ট করা হয়েছিল, কিন্তু আমি বুঝতে পারছি না কেন টিউমেন্টটা এখনো ডিলিট করা হয় নি। প্রত্যেক কে অনুরোধ করছি টেকটিউনস এ ভালো ভাষায়, ভদ্র ভাষায় কথা বলতে। এটা ভদ্র মানুষদের জায়গা, অভদ্রদের জন্য নয়। আমি কেন এই কথা গুলো বললাম সেগুলো আপনারা এই টিউমেন্টটা দেখলেই বুঝতে পারবেন। টেকটিউনস এর কাছে অনুরোধ যত শীঘ্র সম্ভব টিউমেন্টটা ডিলিট করে দেওয়া হোক। ধন্যবাদ।
আমি Raja Banerjee। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 6 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 43 টি টিউন ও 268 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
মানুষ ভাই আপনার টিউনটা অনেক সুন্দর হয়েছে। শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
আর আমার মনে হয় ঐ কমেন্টকারীকে স্থায়ীভাবে ব্যান করা উচিৎ। কারণ টেকটিউসে অভদ্র লোকের কোন দরকার নাই। লক্ষ করলে দেখবেন টেকটিউনসে এক ধরণের ইউজার আছে যাদের কাজ শুধু উল্টা-পাল্টা কমেন্ট করা।
এই টিউনের বহু বিষয়ের সাথে একমত হতে পারলাম না। বলতে পারেন ৮৮% ভুল তথ্য রয়েছে, যেগুলোর কোন ভিত্তি নেই।
এই টিউনের বেশিরভাগ বিষয়বস্তু মোবাইল থেকে আসা রেডিয়েশন নিয়ে। হ্যাঁ, মোবাইল থেকে রেডিয়েশন নির্গত হয়। বলতে পারেন অনেক ধরনের ইলেকট্রনিক থেকেই রেডিয়েশন বেড় হয়, আবার ওয়াইফাই থেকেও রেডিয়েশন বেড় হয়, কেনোনা এই ডিভাইজ গুলো চলার জন্য রেডিও সিগন্যাল ব্যবহার করে, যেখানে ইলেক্ট্রিসিটি এবং ম্যাগনেটিজম থাকে। কিন্তু সব প্রকারের রেডিয়েশন আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর নয়, আমাদের চারপাশেও কমবেশি রেডিয়েশন ঘুরে বেড়াচ্ছে, কিন্তু সেটা আপনাদের ক্ষতি করতে পারবে না, যতক্ষণ সেটা একটা নির্দিষ্ট মাত্রায় গিয়ে না পৌছায়।
রেডিয়েশন প্রধানত ২ ধরনের হয়ে থাকে। নন-আয়োনাইজিং রেডিয়েশন এবং আয়োনাইজিং রেডিয়েশন। নন-আয়োনাইজিং রেডিয়েশন কম ফ্রিকোয়েন্সি হয়ে থাকে এবং কম ফ্রিকুএন্সি মানে কম এনার্জি। কিন্তু রেডিয়েশনের ফ্রিকোয়েন্সি যতো বাড়ে এটি ততো বেশি এনার্জি সম্পূর্ণ হয়ে উঠে এবং হাই ফ্রিকোয়েন্সি রেডিয়েশনকে আয়োনাইজিং রেডিয়েশন বলা হয়।
আপনি জানেন কি, বৈদ্যুতিক তারের লাইন থেকেই রেডিয়েশন বেড় হয়? কিন্তু সেটা আমাদের জন্য কি ক্ষতিকারক? না! কেনোনা সেটা নন-আয়োনাইজিং রেডিয়েশন, আর নন-আয়োনাইজিং হিউম্যান ফ্রেন্ডলি।
রেডিও, সেলফোন, ওয়াইফাই, ব্লুটুথ এগুলোর রেডিয়েশন সমস্ত নন-আয়োনাইজিং ক্যাটাগরিতে পড়ে। আপনি জানেন কি, আপনার ধরের সাধারণ লাইট, যেটা সেলফোন থেকে বেশি রেডিয়েশন নির্গত করে? লাইটের ফ্রিকোয়েন্সি টেরাহার্জ!!! আপনার ফোনের ফ্রিকোয়েন্সি কতো? ৭০০-২,০০০ মেগাহার্জ ভাই!! ওয়াইফাই? ২.৪-৫ গিগাহার্জ!!! টেরাহার্জ মানে গিগাহার্জ থেকে হাজার গুনবেশি। যদি লাইট বাল্ব নিয়ে চিন্তা না থাকে তো মোবাইল ফোন নিয়ে কেন?
আমাকে একটি লিঙ্ক শেয়ার করুন, যেখানে বিজ্ঞানিরা গবেষণা করে রিপোর্ট প্রদান করেছে “সেলফোন ক্ষতিকারক, ব্যবহার করা বন্ধ করুন”। এ বিষয়ে অনেক তর্ক বিতর্ক রয়েছে, কিন্তু কেউই বা কোন গবেষণায় এটি প্রমানিত হয় নি। যদি সেলফোন ক্ষতিকারক প্রমানিত হতো, সেখানে সেলফোনের গায়ে সিগারেটের প্যাকেটের মতো কি লেখা থাকতো না ,সেলফোন স্বাস্থ্য়ের জন্য ক্ষতিকর’?
যেহেতু এই রেডিয়েশন, অর্থাৎ নন-আয়োনাইজিং রেডিয়েশন আমাদের জন্য ক্ষতিকর নয়, তো কেন ক্যান্সার হবে? নন-আয়োনাইজিং রেডিয়েশনের এতোটা ক্ষমতা থাকে না যে সেটা আমাদের কোষের ডিএনএ গঠন নষ্ট বা ব্রেক করে দেবে ফলে কোষটি মরে যাবে বা ক্যান্সার হবে।
ফোন দেহের সাথে রাখা যাবে না, মোবাইল ফোন মুখের ক্যান্সার ঘটাবে এগুলো সম্পূর্ণ বেতুকি কথা। আর মোবাইল ফোন যদি ক্ষতিকর রেডিয়েশন ছড়ায় আপনি ব্যাস কভার ব্যবহার করেই সেটাকে আটকে ফেলবেন?? ভাই ক্ষতিকর বা আয়োনাইজিং রেডিয়েশন এতোটা শক্তিশালী যে, অনেক পুরু ম্যাটেরিয়াল পর্যন্ত আরামে ভেদ করে ফেলে, যেমন আলট্রা ভায়োলেট রে, এক্সরে, গামা রে। এক্সরে দেখেছেন, আপনার শরীর ভেদ করে ভেতরে প্রবেশ করে।
তো ভাই, এই টিউনের তথ্য গুলো ঠিক না, আর এরকম তথ্য ছড়ানোর পূর্বে বিষয় গুলো ভালভাবে জানা প্রয়োজনীয়, কেনোনা আপনার টিউনে বা যেকোনো প্রচারে মানুষের মধ্যে ভুল ধারনার সৃষ্টি ঘটতে পারে।
আমি টেকটিউন্সের কাছে আবেদন জানাচ্ছি, এই পোস্টটিকে আর না ছড়াতে, সেলফোন থেকে তেমন কোনই ক্ষতি হয় না, যেটা এই পোস্টে উল্লেখ্য করা হয়েছে।
আপনার সাথে সম্পূর্ণ একমত। মোবাইল ব্যাবহার করে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আজ পর্যন্ত শুনিনি। আপনি কমেন্ট এ যত সুন্দর করে বর্ণনা করেছেন, অনুরধ থাকল আপনি এই বিষয়টি নিয়ে একটি টিউন করুন। ধন্যবাদ।
অনেক সুন্দর ও তথ্যবহুল টিউন। ভাই অনেক কষ্ট করে অনেক সময় নিয়ে লিখেছেন বুঝা যাচ্ছে। ধন্যবাদ জানাচ্ছি