অ্যাপলের সিইও স্টিভ জবসের পাচটি সিক্রেট মিথ!

আমরা “বিজনেস” এবং “সেলিব্রেটি” শব্দ দুটিকে এক সাথে কোন সময়ই দেখি না, কিন্তু স্টিভ জবস ছিলেন দুটি শব্দেরেই অধিকারী। একটি জিনিস লক্ষ্য করবেন, আমরা শুধু এ্যাপল ইংকস এর পন্যটিই বা তার মূল্যই বিবেচনা করি নাই, বরং আমরা স্বয়ং সিইও কে দেখেছি, তার আলাপ আলোচনা শুনেছি। অক্টোবর ৫, ২০১১ সালের মৃত্যুর পর আমরা দেখেছি যে, অসংখ্য ওয়েবসাইট, সেলিব্রেটিস, প্রযুক্তি পন্ডিত এবং এমেরিকার প্রেসিডেন্ট পর্যন্ত তাকে শ্রদ্ধাঞ্জলী দিয়েছেন। জবসকে নিয়ে আমরা এতো আলোচনা করতে চাই কেন? কোন ব্যক্তিকে তখনই স্টাডি করতে প্রলুব্ধ করে, যখন আসলেই ব্যক্তিটি থাকে আইডিয়াতে পরিপূর্ণ, যখন সে তার নিজস্ব রাজত্ব তৈরি করে নেন। মানুষ তখন তার মিথগুলো বের করার কাজে লিপ্ত থাকেন।

jobs-jpg

তাছাড়াও, জবস ছিলেন একজন আকর্ষনীয় ব্যক্তি। তিনি ছিলেন কলেজ ছিটকে পড়া ছাত্র যিনি জিতেছিলেন “ন্যাশনাল ম্যাডেল অব টেকনোলজি”। রহস্যময় ব্যক্তি ও আকাংখিত বস হিসেবে তার ব্যাপক সুনাম ছিলো । জবস তার জীবনের বিস্তারিত খুব গোপন রেখেছিলেন এবং তার কোম্পানিও তার গোপনীয়তা রক্ষা করেছে, যা আমাদেরকে আরও প্রলুব্ধ করে। এখন আমরা দেখবো তার জনপ্রিয় পাচটি জনপ্রিয় মিথগুলো:

১. স্টিভ জবস তার কর্মচারীদেরকে কোন কারন ছাড়াই ভয় দেখাতেন

জবসের রহস্যময় ভার্সন তাকে দিয়েছে বিভিন্ন গঠন। যে ব্যক্তিটি ছিলেন একজন সেলসম্যানগুরু, সম্পূর্ণ বিকৃত (ডিসটর্টেড) মার্কেটে ক্রেতাদেরকে নতুন পন্যের প্রতি আকৃষ্ট করতেন খুব সহজে- এবং তিনিই একজন অনমনীয় বস, প্রতিযোগী এবং কর্মচারী সবার কাছেই ছিলেন নির্মম ব্যক্তি।

বাস্তবতা আরও জটিল। স্টিভ জবস ছিলেন খুতখুতে এবং খুব ছোট বিষয়ে মনোযোগ দিতে পারতেন খুব ভালোভাবে। একজন ইঞ্জিনিয়ারের কাছ হয়তো এটাকে গুরুত্বপূর্ণ মনে না ও হতে পারে। কিন্তু যদি তার কাজ জবসকে খুশি করতে না পারতো তিনি সব শো বন্ধ করে দিতেন।

যে ভালো করতো এবং কোন ফলাফল বয়ে আনতে পারতো, তার প্রশংসায় স্তুপ ফেলে দিতেন। কিন্তু যে কর্মচারীটি একদিন এতো প্রশংসিত হয়েছে, ঠিক অন্যদিন তাকে সমালোচনা করতে পিছ পা হতেন না। জবস অনেক সময় তার কর্মচারীদেরকে অযথাই রাগ দেখাতেন এবং তাদের কাজ ভালো হলেও তর্ক করতেন। তার কারন ছিলো কর্মচারীরা তাদের অবস্থানকে ডিফেন্ড বা রক্ষা করতে পারে কিনা।

২. জবস কখনো জাপান ফিরে যাবেন না বলে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন

এটি একটি মহান গল্প: ২০১০ সালে কিয়োটো, জাপানে অবকাশ যাপন করেছিলেন। অবকাশ যাপনের পর তিনি এয়ারপোর্টে গেলেন তার প্রাইভেট জেট প্লেন দিয়ে দেশে ফিরবেন। কিন্তু এয়ারপোর্টের নিরাপত্তাকর্মী জানালো তার ব্যক্তিগত বিমানে যাওয়ার অনুমতি নাই। তারা কেন এ কথা বলবে? কারন তিনি নিনজা থ্রোয়িং স্টারস কিনেছিলেন। তারপর তিনি প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যে আর জাপান আসবেন না। (তথ্যসুত্র)

৩. প্রতিদিন একই পোষাক পরিধান করতেন

আড্রিয়ান মঙ্ক ছিলেন একজন টিভি ডিটেকটিভ যার পোশাক নির্বাচনের ক্ষেত্রে অত্যাধিক-বাধ্যতামূলক ব্যাধি কাজ করতো। তার জন্য পোশাকটি ছিলো প্লেইড এর উপর ব্রাউন কালার। কিন্তু এটা ছিলো তার ডিজাইনার কর্তৃক দেয়া কস্টিউম। রিয়েল স্টিভ জবস কোন ওযার্ডরোব ব্যবহার করতেন না এটা আমরা নিশ্চিত (তথ্যসূত্র)। তিনি সবসময় পাবলিক এর সামনে কালো মক টার্টলনেক (mock turtleneck) এবং জিন্স পড়তেন। কেন? তিনি কখনই বলেন নাই।

৪. নিরাপত্তা এবং গোপনীয়তার জন্য জবস সবসময় নাম্বার প্লেটের বদলে গাড়িতে বারকোড ব্যবহার করতেন

একদা এক ব্লগার এ্যাপল এর পার্কিং লটে পার্ক করা সিলভার কালারের মার্সিডিজ এর একটি ছবি শেয়ার করেছিলো। গাড়িটির পিছনের দিকে কোন লাইসেন্স প্লেট নাই, এবং ফ্রেমের ভিতরে একটি বারকোড স্টিকার লাগানো ছিলো (তথ্যসূত্র)। ফরচুন ম্যাগাজিন এ বলা হয়, তিনি পার্কিং টিকিট না কিনার উদ্দেশ্যেই লাইসেন্স প্লেটটি খুলে রাখতেন। তাছাড়া, জবস গাড়ীর আরও অন্যান্য নিয়মনীতিও ভঙ্গ করতেন। এ ব্যাপারে ‍গুগলে সার্চ দিলে আরও অনেক আর্টিকেল পাবেন।

steve_jobs_mercedes_barcode_2

৫. এ্যাপল কর্পোরেশন তাকে কম্পানি চালানোর জন্য এক ডলার পরিশোধ করে

১৯৯৭ সাল থেকে ২০১১ পর্যন্ত যখন তিনি সিইও থেকে নেমে যান, বছরে এক ডলার বেতন হিসেবে পেতেন(তথ্যসূত্র)। প্রকৃতপক্ষে, কখনো কখনো কয়েক বছর মিলিয়ে এক ডলার হতো। তার যা ইনকাম ছিলো তা দিয়ে আইটিউন্স থেকে ট্যাক্স সহ একটি গানও কিনতে পারেন নি। তাহলে কেন সেখানে চাকরী করেছিলেন? কারন, এ্যাপল উচ্চ বেতন এর পরিবর্তে এমপ্লয়ীদেরকে পারফরমেন্স এওয়ার্ড দিতো যা তাদেরকে বহুদিন ধরে এই প্রতিষ্ঠানে চাকরী করার জন্য আকর্ষিত করতো। অবশ্যই জবস বছরে এক ডলারের বেশি আয় করতো। ২০০০ সালে রেকর্ড পরিমান কম্পিউটার বিক্রি করতে পারার কারনে তাকে ৮৮ মিলিয়ন ডলার দিয়ে প্রাইভেট জেট প্লেন দিয়ে ধন্যবাদ জানানো হয়। ফোর্বস ২০১০ এর মতে, তিনি ছিলেন বিশ্বের ১৩৬ তম ধনী ব্যক্তি।

জবস এর নেতৃত্বদান পদ্ধতি অন্যান্য সকল গাইডের বিপক্ষে যেতে পারে। তবে তার নেতৃত্ব ভোক্তাদের জন্য এ্যাপলকে এনে দিয়েছিলো সফল কিছু ইলেক্ট্রনিকস যা মার্কেট শেলভকে নাড়া দিয়েছিলো। তার কঠোর ও নির্মম হওয়ার রেকর্ড থাকা সত্বেও, জবস অর্জন করেছিলেন ব্যাপক সম্মান।

টিউনটি এখান থেকে সংগৃহীত

ZubyTech (ব্লগিং এর নতুন দুনিয়া। আজকেই ভিজিট করুন আর আপনার প্রযুক্তির জ্ঞান বৃদ্ধি করুন)

ZubyTech পেইজ (টেক সম্পর্কিত সমস্ত খবরাখবর ফেসবুকেই পেতে এখনই একটি লাইক দিয়ে রাখুন!)

ফেসবুকে আমাকে অ্যাড করতে পারেন

Level New

আমি প্রীতম চক্রবর্তী। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 9 বছর 8 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 82 টি টিউন ও 155 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 2 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

বাংলা ভাষাভাষীদের জন্য ফ্রি লার্নিং প্ল্যাটফর্মঃ https://www.eduquarks.com


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস