ব্রিটিশ বিশেষজ্ঞগন সতর্ক বার্তা দিয়ে বলছেন, ২০২৩ সালের মধ্যে সারা বিশ্বের ইন্টারনেট ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়তে পারে!

বৃটিশ গবেষকদের দ্বারা পরিচালিত একটি গবেষনা বলছে যে, ২০২৩ সালের মধ্যে আমাদের ইন্টারনেট বিশ্ব তার সার্মথ্যের সর্বোচ্চ সীমায় পৌছাবে যখন, ক্যবল ও ফাইবার অপটিকগুলো এর ব্যবহার কারীদের ডেটা বা তথ্য আদান প্রদানের সবোচ্চ সীমাবদ্ধতায় পৌছবে। বিজ্ঞানীরা আরও সতর্ক করে দিয়ে বলছেন, ক্যাবল ও ফাইবার অপটিকসমুহ কেবল একটি অপটিকাল ফাইবারের মধ্য দিয়ে ডেটা বা তথ্য নেওয়ার মত অবস্থায় আর থাকবেনা যা সমগ্র ইন্টারনেট ব্যবস্থা বিপর্যয়ের একটি বড় কারন হয়ে দাঁড়াবে। কম্পিউটার, স্মার্টফোন, ল্যাপটপ সহ অন্যান্য আরও অনেক ডিভাইসে তথ্য প্রেরনের প্রথম ও প্রধান মাধ্যম হল ফাইবার অপটিকস ও ক্যাবল। আসলে ফাইবার অপটিক ক্যাবলস কি? এটি হল মানুষের মাথার চুলের থেকে সুক্ষ ও সরু একটি স্বচ্ছ তন্তু। আমাদের সঞ্চিত তথ্য প্রথমে আলোক রশ্মিতে রুপান্তরিত হয় এবং এই সুক্ষ তন্তুর মধ্যদিয়ে পাঠানো হয় এবং তা পুনরায় তা তথ্যে রপান্তরিত হয়ে আবার তা বিভিন্ন ডিভাইসে ধরা দেয়।

ডেইলি মেইল এর রিপোর্ট অনুযায়ী কিছু নেতৃস্থানীয় প্রকৌশল,পদার্থবিদ এবং টেলিকম কোম্পানীকে গত ১১ ই মে লন্ডনের রয়্যাল সো্সাইটিতে অনুষ্ঠিত একটি সভায় আমন্ত্রন জানানো হয়েছিল, কিভাবে এই বিশাল ওয়েব সংকট এড়ানো যায় এবং কি কি পুর্ব-সতর্কতামুল পদক্ষেপ নেওয়া যায় তা আলোচনার জন্য। এ্যস্টন ইউনিভার্সি টির বামিংহাম এর প্রফেসর এবং রয়্যাল সোসাইটির সহ-সমন্বয়ক Andrew Ellis ডেইলী মেইলকে বলেন, "আমরা আমাদের গবেষণা ল্যাবে পরীক্ষার এমন একটি জায়গায় পৌছাতে যাচ্ছি যেখানে আমরা একটি মাত্র ফাইবার অফটিক তন্তুর মধ্য দিয়ে আর কোন ডেটা বা তথ্য আদান প্রদান করতে পারব না। আমরা যে গবেষেনা এখন করছি তার ফলাফলটা আপনারা হয়ত বা ৬ থেকে ৮ বছর পরে দেখতে পাবেন। তাই এইটুকু বলতে পারি ৮ বছরের মধ্যেই এমন এক সময় আসবে যখন আমরা আর কোন তথ্য আদান প্রদান করতে পারবনা।"  তিন আরও বলেন, " চাহিদা দিন দিন উর্ধ্বমুখী হচ্ছে, আর দিন দিন এটা আরও বেড়ে চলেছে। এতে সামনের দিনগুলো আরও বেশি কঠিন হয়ে আসছে। আমরা যদি আমাদের বহুমুখী পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে না আসি, তবে আমরা হয়ত দেখব আমাদের ইন্টারনেট খরচ রাতা-রাতি নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। কারন তাৎক্ষনি প্রতিকার হিসাবে ইনটারনেট কোম্পানীগুলো হয়তবা তখন অতিরিক্ত ক্যাবল সংযোগ দেবে তথ্য প্রবাহ স্বাভাবিক রাখার জন্য যার বিনিময়ে তারা অতিরিক্ত বিল দাবী করতেই পারে। কিন্তু তা বেশি দিন কাজে দেবে বলে মনে হয় না কারন এর দ্বারা হয় ব্যবহার কারীরা নিরবিচ্ছিন ইনটারনেট সেবার একটা নির্দিষ্ট সীমায় গিয়ে বাধাগ্রস্ত হবে নতুবা তাদের এজন্য ইন্টারনেট সেবা সরবরাহকারীদের নিকট হতে অতিরিক্ত দ্বিগুন বিলের বোঝা বহন করতে হবে।" প্রফেসরস Andrew Ellis আরও সতর্ক করে দিয়ে বলেন, আর সেটা হবে একটি সম্পুর্ন নতুন বিজনেস মডেল। আমার মনে হয় ব্রিটিশ জনগনের সাথে এনিয়ে আমাদের একটি আলোচনা দরকার তারা এ নতুন বিজনেজ মডেল এর সাথে তারা নিজেকে খাপ খাওয়াতে প্রস্তুত কিনা। ইন্টারনেট বিপর্যয়ের পেছনে যে কারন সব থেকে সামনে চলে আসে তা হল বিদ্যুৎ সরবরাহ সংকট! ক্রম বর্ধমান ইন্টারনেট চাহিদার সাথে তাল রাখতে বিশাল পরিমান বিদ্যুৎ প্রয়োজন কারন তথ্য আদান-প্রদান করতে বিশাল পরিমানে বিদ্যুৎ সরবরাহ অবশ্যম্ভাবী। তাই বলা যায়, ইন্টারনেটের গতি বৃদ্ধি যা নামান্তরে বিদ্যুৎ সরবরাহের পরিমান বৃদ্ধিকেই বুঝায়। যার মানে হল আমাদের যে পরিমান বিদ্যুৎ আছে তা দিয় হয়তবা আমরা বড়জোর ২০৩৫ সাল পর্যন্ত চলতে পারব।

এই প্রেক্ষাপটটাকে উল্লেখ করে প্রফেসর Andrew Ellis বলেন,“ এটা বেশ একটি বিশাল সমস্যা। যদি সামনে এগোনোর জন্য আমাদের অসংখ্য ফাইবার অপটিক ক্যাবলস ব্যবহার করতে হয়, আমরা নিশ্চিতভাবেই প্রায় ১৫ বছরের মধ্যেই এনার্জি সংকটে পড়তে যাচ্ছি।

একটি গবেষণায় দেখা যাচ্ছে যে, ‍বৃটিশদের উৎপাদিত মোট বিদ্যুতের শতকরা প্রায় ১৬ ভাগ খরচ হয় ইন্টারনেট সিস্টেমে। অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে এটি প্রতি চার বছর পর পর দিগুন হচ্ছে। সারা পৃথিবীতে ইন্টারনেট এর জন্য মোট উৎপাদিত বিদ্যুতের শতকরা ২ ভাগ ইন্টারনেট সিস্টেমে খরচ হয়।

এছাড়া এটা আরও পরিলক্ষিত হয় যে, ২০০৫ সালে যেখানে ইন্টারনেটের সর্বোচ্চ গতি ছিল প্রতি সেকেন্ডে ২ মেগাবাইট সেখানে কেবল মাত্র দশ বছরে এই গতি আশ্চর্য জনকভাবে বেড়ে গিয়েছে এবং আজ পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে এ গতি সর্বোচ্চ প্রতি সেকেন্ডে ১০০ মেগাবাইটে পৌছেছে। এদিক থেকে ইন্টারনেটের দিকপালগন অগ্রগামী যার ফলে তারা সফলভাবে বিগত দশ বছরে ইন্টারনেটের গতিকে ৫০ গুন বাড়াতে সক্ষম হয়েছেন।

অবশ্য কিছু কিছ গবেষনা আশাবাদী করে এবং গবেষকগন মনে করেন নিশ্চয় এ সমস্যার একটি সমাধান আমরা পাব। বৃটিশ টেলিকমিউনিকেশনের অপটিক্যাল গবেষক প্রধান প্রফেসর Andrew Lord এবং এসেক্স ইউনিভার্সিটির একজন প্রফেসর ডেইলী মেইল কে বলেন, “ তথ্য আদান প্রদানের পরিবর্তে একে একটি বিশাল সার্ভারে জমা রেখে এই ’ইন্টারনেট বিপর্যয়’ সমস্যাটিকে মোকাবেলা করা সম্ভব।” প্রফেসর Lord বলেছিলেন, ”ইন্টারনেট বিপর্যয় সম্ভবত হবেনা কারন প্রচুর ব্যান্ডউইথ অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থাকে।”

তাই আমরা ও আমাদের বিশ্ব হয়ত তাদের এ পুর্ব সতর্কতামুলক পদক্ষেপের ফলে আমরা যেটাকে ইন্টারনেট বিপর্যয় বলছি সেটাকে কাটিয়ে উঠতে পারব। কিন্তু কে জানে অনাগত ভবিষ্যতের খাতায় কী লেখা আছে? কোথায় চলেছি আমরা! মানুষের এই জয়যাত্রা কতদিন বহমান থাকবে?

জানিনা লেখাটা কেমন লাগল। ভাল লাগলেই আমার স্বার্থকতা। ইচ্ছে হলে আমার প্রযুক্তি ব্লগ থেকে একবার ঘুরে আসুন

আমার ব্লগ ও অন্যান্য এড্রেস

Website: http://infotechlife.com

http://patroblogger.blogspot.com

Facebook Page : http://www.facebook.com/goljar.ali
Twitter : https://twitter.com/MdGoljarAli1
YouTube : http://www.youtube.com/goljar123

 

Level 0

আমি গোলজার আলী। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 10 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 15 টি টিউন ও 79 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 2 টিউনারকে ফলো করি।

আমি পেশায় একজন টিচার। লেখা আমার নেশা। লেখা নিয়েই থাকতে চাই। আমাকে নিচের ঠিকানায় পাবেন Website: http://infotechlife.com http://patroblogger.blogspot.com Facebook Page : http://www.facebook.com/goljar.ali Twitter : https://twitter.com/MdGoljarAli1 YouTube : http://www.youtube.com/goljar123


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস