স্মার্টফোন নিয়ে যত কথা [পর্ব:২]::জেনে নিন কোন সেন্সর এর কী কাজ।

আসসালামু আলাকুম ।কেমন আছেন সবাই? আমি আইটি কথন থেকে তৌহিদুর রহমান মাহিন সবাইকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা।

সূচনা :

আমরা সবাই  তো সেন্সর সম্পর্কে কম বেশি জানেন এগুলো গ্যাজেটস বা প্রযুক্তি পন্যে স্নায়ুকোষ হিসেবে কাজ করে।আপনারা কি জানতে চান? কোন সেন্সর এর কাজ কি? আজ আমার টিউন এই সেন্সর নিয়ে।আশা আজকের টিউনটি সবার ভালো লাগবে।

বর্তমানে স্মার্টফোন কেনার ক্ষেত্রে আমাদের এই সেন্সর এর ব্যাপারটিকে বেশি করে প্রাধান্য দিতে হবে,কেননা এর ব্যবহারে একটি স্মার্টফোন আরও বেশী উপকারী এবং কার্যকর হয়ে ওঠে।

Accelerometer:

এই সেন্সরটি ফোনের সফটওয়্যার কে বলে দেয় ফোন বা ডিভাইসটি কিভাবে ধরা রাখা হয়েছে এবং এই জন্য তাকে কি করতে হবে।যেমন : ব্যবহারকারী ফোনের।  auto-rotation এনেবল করে রাখলে ফোন বা ডিভাইস সোজা করে ধরে রাখলে সবকিছু সোজা দেখাবে বা Portrait মোড এ থাকবে আবার বাকা করে ধরলে Landscape  মোড এ দেখা যাবে।
অনেক ডিভাইস এ বেশ কিছু advanced  ফিচার রয়েছে; কল আসলে ডিভাইস উল্টো করে রাখলে কল silent মোড এ চলে যাবে; আবার ডিভাইস উল্টো করে রাখলে পাওয়ার সেভিং মোড এ চলে যাবে,এই সবই Accelerometer সেন্সর এর সাহায্যেই হয়।

Gyroscope:

Accelerometer এর থেকে আরেকটু আপগ্রেড হল Gyroscope বা Gyro. Sensor। এটি সফটওয়্যার কে ডিভাইসটি কত অ্যাঙ্গেল বা কত ডিগ্রীতে রাখা আছে এ বিষয়ে।বর্তমান সময়ে বেশ কিছু গেমস বিশেষ করে সিমুলেটর বা রেসিং গেমস এর কন্ট্রোল সম্পূর্ণ ভাবে Gyro. Sensor এর ওপর নির্ভরশীল।তাছাড়াও ৩৬০ ডিগ্রী ছবি তোলার জন্য এই সেন্সর এর বিকল্প নেই।

Magnetometer:

প্রথমত এটি ডিভাইস এ কম্পাস এর কাজ করে; এই সেন্সর ছাড়া ম্যাপ বা কম্পাস অ্যাপলিকেশন এ অবস্হান পূর্ব-পশ্চিম বা উত্তর-দক্ষিন নির্নয় করা যাবে না।
দ্বিতীয়ত এটি মেটাল ডিটেক্টর এর কাজ করবে।যেহেতু চুম্বক তাই ডিভাইস এর আসে পাশে মেটাল এর সন্ধান পেলে এর আউটপুট এর পরিবর্তন হয়ে অ্যাপ বা ডিভাইসকে মেটাল এর অস্তিত্ব সম্পর্কে জানাবে।

Proximity Sensor:

স্মার্টফোন এর বাইরের দিকে সাধারনত ফ্রন্ট ক্যামেরার পাশে একে দেখতে পাওয়া যায়।এর কাজ মূল কাজ হল স্ক্রীন এর আসেপাশে অদৃশ্য আলো ফেলে নড়াচড়া পর্যবেক্ষণ করে সে অনুযায়ী সফটওয়্যারকে অবগত করা। মোবাইলে কথা বলার সময় যখন আমরা ফোন কানের কাছে ধরি তখন স্ক্রীন অটোমেটিক অফ হয়ে যায়,আর এতে করে
কথা বলার সময় স্ক্রীন অফ হয়ে যাওয়ার কারণে ব্যাটারি সাশ্রয় হয়।
কথা বলার সময় স্ক্রীন অফ হয়ার কারনে গাল বা কান দ্বারা স্ক্রীনে কল হোল্ড বা কল স্পিকার ইত্যাদি বাটনে চাপ লাগে না আর এতে করে নির্বিঘ্নে কথা বলা যায়।
বর্তমানে motorola সহ বেশ কয়েক ব্র্যান্ডের স্মার্টফোনে এই সেন্সর এর ব্যবহার বেশি পরিমানে দেখা যায় আর এর মাধ্যমে ফোনের স্ক্রীন এর ওপর হাত ঘুরালেই ফোন অন হয়া সহ আরও অনেক গুরুত্ব পূর্ন কার্য়কলাপ করা সম্ভব হয়।

Light Sensor:

যে ডিভাইসে এ সেন্সরটি থাকে তার আসে পাশেই Proximity সেন্সর এর অবস্হান।আর এই সেন্সর এর মূল কাজ হল ফোনেট ব্রাইটনেস এডজাস্ট করা।এই সেন্সর এর কারনে বেশি আলোকিত জায়গায় স্মার্টফোন বা অন্যান্য ডিভাইস ব্যবহার করলে ব্রাইটনেস অটোমেটিক বেড়ে যায়,আবার কম আলোকিত জায়গায় গেলে ব্রাইটনেস অটোমেটিং কমে যায়।

Barometer:

এই সেন্সর এর কাজ হল বায়ুমন্ডলীয় চাপ নির্নয় করা এবং সমুদ্রপৃষ্ট থেকে কত উচুতে রয়েছে তা নির্নয় করা।স্মার্টফোনে যদি gps থাকে তবে আরও নিখুতভাবে অবস্হান সনাক্ত করা সম্ভব হবে।আবার অনেক সময় অনেক Health related অ্যাপস এ আমরা দেখতে পারি কত সময়ে কতটুকু উচু বা নিচুতে আমরা উঠানামা করছি,এটি এই সেন্সর এর মাধ্যমে নির্নয় করা হয়।
Thermometer :
সাধারনত প্রত্যেক স্মার্টফোন এবং ডিভাইস এ ইন্টারনাল থার্মোমিটার থাকে আর এর মাধ্যমে ফোনের cpu, battery ইত্যাদি যন্ত্রপাতি এর তাপমাত্রা নিনর্য় এবং সে অনুযায়ী সেটি সফটওয়্যার কে তথ্য পাঠায়।
তবে বর্তমানে বেশ কিছু স্মার্টফোন ও ডিভাইস এ এক্সটারনাল থার্মোমিটার দেখা যায় আর এর মাধ্যমে আসে পাশের পরিবেশ এর তাপমাত্রা নির্নয় করা সম্ভব হয়।
Air Huminity Sensor: এর মাধ্যমে আসে পাশের পরিবেশের huminity বা ঘনত্ব নির্নয় করা যায় আরও নির্নয় করা যায় সে জায়গাটি থাকার উপযোগী কি/না। এটি বেশি স্মার্টফোনে দেখা যায় না।

Padometer:

এটি Accelerometer এর advanced ভার্সন, এর মাধ্যমে কত পা হাটা হল তা একদম শুদ্ধভাবে পরিমাপ করা যায়,Accelerometer এর মাধ্যমে অনেকসময় বিশেষ অ্যাপ এর মাধ্যমে এ কাজ করা যায় তবে তা নির্ভূল হয় না।
Radiation Sensor :
বিশেষ করে জাপানের স্মার্টফোন ও স্মার্ট ডিভাইস গুলোতে এ সেন্সর বেশি দেখা যায় আর এর মাধ্যমে আসে পাশের যন্ত্র এবং প্রকৃতি থেকে আাসা ক্ষতিকর রেডিয়েশন সম্পর্কে অবহিত হওয়া যায়।

Fingerprint Sensor :

বর্তমান সময়ে আমরা বেশির ভাগই এই সেন্সর এর সাথে পরিচিত। এই সেন্সর এর ব্যবহার ব্যক্তি গোপনীয়তা রক্ষায় এনেছে এক নতুন মাত্রা,এর মাধ্যমে ফোন লক আনলক সহ প্রাইভেসি সম্পর্কিত আরও অনেক কাজ সহজেই করা যায়।এখন প্রায় নতুন স্মার্টফোন এ এই সেন্সর এর দেখা পাওয়া যায়,অচিরেই প্রায় সব ফোনেই এই সেন্সরটি পাওয়া যাবে আশা করা যায়।

Heart Rate Sensor :

এই সেন্সর এর মাধ্যমে হৃদস্পন্দন মাপা যায়,এবং বিশেষ বিশেষ অ্যাপ এর ব্যবহারে হৃদরোগ সমন্ধে নানা তথ্য সম্পর্কে অবহিত হওয়া যায়,  স্যামসাং এর গ্যালাক্সি ও নোট সিরিজের বেশ কয়েক স্মার্টফোনে এটি রয়েছে।

Blood Oxyzen Sensor:

এই সেন্সর এর মাধ্যমে মানব শরীরের ও রক্তের অক্সিজেন এর মাত্রা সম্পর্কে জানা যায়। স্যামসাং এর গ্যালাক্সি ও নোট সিরিজের বেশ কয়েক স্মার্টফোনে এটি রয়েছে।

পরিশেষে :
সময় এবং ধৈর্যের সাথে পড়ার জন্য ধন্যবাদ।কেমন লিখেছি আমি জানি না, তাই টিউমেন্ট এ অবশ্যই জানাবেন।টিউনটি ভালো লেগে থাকলে নির্বাচিত টিউন মনোনয়ন দিতে ভুলবেন না কিন্তু।আল্লাহ হাফেজ।

সৌজন্যে : আইটি কথন

Level 12

আমি Touhidur Rahman Mahin। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 8 বছর 9 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 326 টি টিউন ও 88 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 24 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।

ভালোবাসি প্রযুক্তি নিয়ে লিখতে, ভালবাসি প্রযুক্তি নিয়ে ভাবতে।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

ভালো লেগে থাকলে নির্বাচিত পোস্ট মনোনয়ন দিন