রাক্ষুসে মেগালোডন হারিয়ে যাওয়ার রহস্য

মেগালোডন আমাদের মাঝে গল্প উপন্যাস এবং মুভিতে মাঝেমাঝেই ফিরে এসেছে। ২০০৩ সালে বিবিসির সি মনস্টার সিরিজ নির্মিত হয় তিনটি মেগালোডনের গল্পকে কেন্দ্র করে। হিস্ট্রি চ্যানেলের জুরাসিক ফাইট ক্লাবেও মেগালোডন তার মুখ দেখিয়েছে। তাছাড়া মেগা শার্ক সিরিজের কয়েকটি ছবিতে মেগালোডনকে দেখা গেছে। বলতে গেলে ফ্যান্টাসি-এডভেঞ্চার ঘরানার জনপ্রিয় চরিত্র বহু আগে হারিয়ে যাওয়া এই মেগালোডন।

ভিডিওটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন

মেগালোডনরা ছিল উষ্ণ রক্তের প্রাণী। এটাই কাল হয়ে দাঁড়িয়েছিলো তাদের জন্য। আজ থেকে পঁয়ত্রিশ মিলিয়ন বছর পূর্বে পৃথিবীর তাপমাত্রা হঠাৎ ঠান্ডা হওয়া শুরু করে। ফলে তারা যে খাদ্যের উপর নির্ভরশীল ছিল তারাও খাদ্যের অভাবের কমে যেতে থাকে এবং বরফ যুগ শুরু হওয়ার সাথে সাথে অনেক প্রাণী মেরু অঞ্চলে চলে যায়। মেগালোডনের পক্ষে তাদের পিছু নেওয়া সম্ভব ছিল না। তাদের শরীরকে উষ্ণ রাখার জন্য তারা উষ্ণ জলের উপর নির্ভরশীল ছিল।

তাছাড়া বরফ যুগের আগমনের সাথে সাথে সমুদ্রতলের উচ্চতা কমে যায়। ফলে তাদের চারণক্ষেত্র কমে যেতে থাকে। এ সময় তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখা দেয় খুনে তিমি সহ আরো কিছু শিকারী প্রাণী।

কন্সপিরেসি থিওরিস্টদের গল্প

স্বাভাবিকভাবেই  ধরে নেওয়া হয়েছে, মেগালোডনেরা হারিয়ে গিয়েছে পৃথিবী থেকে। কিন্তু এ নিয়েও বিস্তর জল ঘোলা হয়েছে। সত্যিই কি তারা হারিয়ে গিয়েছে? মেগালোডনদের অস্তিত্ব প্রমাণ করতে ইউটিউবে সার্চ দিলে শতশত ভিডিও আসতে শুরু করে।

আমরা বরং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকে ঘুরে আসি। নাৎসি বাহিনী তখন সবকিছু তছনছ করে প্রবল বেগে এগিয়ে যাচ্ছে। ফ্রান্সের কয়েকটি নৌ বন্দর জার্মানীর হাতে চলে গেলো। এ সময়কার একটি গোপন নথি পরে উন্মুক্ত হয়, যেখানে দেখা যায় হাঙ্গর সদৃশ অতিকায় প্রাণী।

২০১৩ সালে কয়েক বন্ধু মিলে গিয়েছিলো মাছ ধরতে। জায়গাটি আফ্রিকার কেপ টাউনের উপকূলে। ইউটিউবের যুগে ভিডিও করার প্রবণতা সবার মধ্যে বেড়ে গেছে। তারাও এর বাইরে ছিল না। সমস্ত অভিযান ক্যামেরাবন্দী করার সমস্ত আয়োজন সম্পন্ন করেই তারা গিয়েছিল সেদিন। কিন্তু সেটা ছিল তাদের শেষ যাওয়া। কেননা তাদের আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি কখনো। পরে সমুদ্রের তল থেকে তাদের ভাঙ্গা বোটের অংশ বিশেষ আর ক্যামেরা উদ্ধার করা হয়। সেখানে দেখা যায় অজ্ঞাত এক প্রাণী তাদের বোটটাকে আক্রমণ করেছে। বোটের ভাঙ্গা অংশের গায়ে পাওয়া যায় বিশালাকার কামড়ের চিহ্ন, যার সাথে মিলে যায় আজকের হোয়াইট শার্কের দাঁতের কামড়ের। কিন্তু হোয়াইট শার্কের কামড়ের চেয়ে অনেক বেশি বড় ছিল সেগুলো।

বিশেষজ্ঞদের কাছে অবশ্য কোনোটিই ধোপে টেকেনি। তারা মেগালোডনের টিকে থাকার সম্ভাবনা একেবারেই বাতিল করে দিয়েছেন। অধিকাংশই ভুয়া প্রমাণিত হয়েছে। তবে কল্পনাপ্রিয় মানুষেরা মেগালোডনের টিকে থাকার গল্পকেই সত্য বিশ্বাস করতে ভালোবাসে, অন্তত কিছু উত্তেজনা বাড়ে তাতে। আর কন্সপিরেসি থিওরিস্ট? তারা বিশ্বাস করে,  সমুদ্রের তলে আজও হয়তো টিকে আছে পৃথিবীর ইতিহাসের সবচেয়ে খুনে প্রাণীদের কয়েকটি। আমাদের অগোচরে, আমাদের অলক্ষ্যে!

Level 0

আমি মার্স টেক। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 6 বছর 2 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 35 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 4 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 4 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস