হাঁস পালনের মাধ্যমে বেকারত্ব দূর করূন পর্ব-৬ খামার ব্যবস্হাপনা ও ডিম সংগ্রহ, সংরক্ষণ

  • খামার ব্যবস্হাপনা ও দৈনিক কার্যক্রম সূচিঃ
    যে কোনো ধরনের খামারই হোক না কেনো তার ব্যবস্হাপনা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, প্রকৃতপক্ষে খামার ব্যবস্হাপনার উপরই খামারের লাভ লোকসান এমনকি খামারের ভবিষ্যত সসপ্রসারণ নির্ভর করে। ক) সকাল ৭ - ৯ টাঃ
    ১. জীবাণুমুক্ত অবস্হায় শেডে প্রবেশ করতে হবে এবং হাঁস-মুরগির সার্বিক অবস্হা ও আচরণ পরীক্ষা করতে হবে।
    ২. মৃত বাচ্চা/বাড়ন- বাচ্চা/মুরগি থাকলে তৎক্ষণাৎ অপসারণ করতে হবে।
    ৩. ডিম পাড়া বাসার দরজা খুলে দিতে হবে।
    ৪. পানির পাত্র/ খাবার পাত্র পরিস্কার করতে হবে।
    ৫. পাত্রে খাবার ও পানি না থাকলে তা পরিস্কার করে খাদ্য ও পানি সরবরাহ করতে হবে।
    ৬. লিটারের অবস্হা পরীক্ষা করতে হবে ও প্রয়োজন হলে পরিচর্যা করতে হবে।
    ৭. খাবার দেবার পর কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে আচরণ পরীক্ষা করতে হবে।
    সকাল ১১- ১২ টাঃ
    ১. খাদ্য নাড়াচাড়া করে দিতে হবে।
    ২. পানি গরম ও ময়লা হলে পরিবর্তন করে পরিস্কার ও ঠান্ডা পানি দিতে হবে।
    ৩. ডিম সংগ্রহ করতে হবে।
    বিকাল ৪ - ৫ টাঃ
    ১. পাত্রে খাদ্য পানি না থাকলে তা সরবরাহ করতে হবে।
    ২. ডিম সংগ্রহ করতে হবে।
    ৩. ডিম পাড়ার বাসা/বাক্সের দরজা বন্ধ করতে হবে।
    ৪. আচরণ পরীক্ষা করতে হবে। সাপ্তাহিক কাজঃ
    ১. খাদ্য তৈরি করতে হবে।
    ২. বাচ্চা/ডেকী মুরগী/মুরগীর নমুনা ওজন গ্রহণ করতে হবে।
    ৩. ঘর পরিস্কার করতে হবে।
    ৪. ঘরের বাতি সপ্তাহে ২ দিন পরিস্কার করতে হবে। খাদ্য ও পানির পাত্র পরিস্কার করতে হবে এবং লিটার পরিচর্যা করতে হবে।
    ৫০০ টি মুরগীর খামারের বিভিন্ন খরচ, আয় ও নীট মুনাফার হিসাবঃ 

     

    ঢাকার বাইরে হাঁস পালন বেশ লাভজনক। তবে প্রশিক্ষণ না থাকলে ক্ষতির আশঙ্কা থাকে। দেশের বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে হাঁস প্রজননকেন্দ্র। এখান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে ব্যবসা হিসেবে দিতে পারেন খামার। বিস্তারিত জানাচ্ছেন সিদ্ধার্থ সাই

    হাঁসের থাকার জন্য এমনভাবে ঘর বানাতে হবে যেন আলো-বাতাস যাওয়া-আসা করতে পারে। ঘরের আশপাশে জলাধার থাকলে ভালো হয়। ১০০টি হাঁস নিয়ে শুরু করতে পারেন আপনার হাঁসের খামার। ১০০টি হাঁসের খামার গড়তে ১৫টির বেশি হাঁসের বাচ্চা নিয়ে শুরু করতে হবে। প্রজননের জন্য হাঁসের খামারে ১০ : ১ পরিমাণে হাঁস এবং হাঁসা রাখতে হবে। বড় হলে প্রয়োজনীয় হাঁস ও হাঁসা রেখে অন্যগুলো সরিয়ে ফেলতে হবে। প্রথমে বাচ্চা এনে অন্তত সাত দিন সেগুলোকে নিয়ন্ত্রিত তাপমাত্রায় রাখতে হবে। এ জন্য শীতের সময় বেশি তাপ ক্ষমতাসম্পন্ন লাইট দিয়ে ঘরের তাপমাত্রা বাড়িয়ে রাখা জরুরি। গরমের দিনে ঘর ঠাণ্ডা রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। ঘরে হাঁসগুলো থাকার জায়গায় ধানের তুষ অথবা কাঠের গুঁড়া দিয়ে বিছানা তৈরি করতে হবে। ঘরের আশপাশ পরিষ্কার করাটাও জরুরি। কারণ অপরিষ্কার জায়গা থেকে রোগ-জীবাণু ছড়ানোর আশঙ্কা থাকে।

  • ডিম সংগ্রহ : সব জাতের হাঁসি সাধারণত ২২-২৩ সপ্তাহের মধ্যে ডিম পাড়া আরম্ভ করে। ডিম পাড়া শুরুর পূর্বে হাঁসিকে সঠিকভাবে খাদ্য দিতে হবে। যদিও ডিম পাড়ার ১৫ দিন আগে থেকে তাদের খাদ্য চাহিদা কমে যায়। ডিম পাড়া অবস্থায় তাদের খাদ্য চাহিদা বৃদ্ধি পায়। ডিম পাড়া অবস্থায় হাঁসিকে পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবারের জোগান দিতে পারলে দীর্ঘদিন ধরে ডিম পাওয়া যায়। হাঁসি সাধারণত খুব সকাল বা সকালের দিকে ডিম পাড়ে। এজন্য হাঁসিকে খুব সকালে ঘর থেকে ছাড়া যাবে না। একটু দেরি করে ছাড়তে হবে নতুবা পানির মধ্যে ডিম পাড়ার প্রবণতা দেখা যাবে। প্রথম অবস্থায় হাঁসির ডিম একটু ছোট আকারের হলেও পরবর্তীতে তা স্বাভাবিক আকারের হয়ে যায়। হাঁসের ডিম মুরগির ডিমের চেয়ে আকারে বড় ও ওজন বেশি হয়। সকালের ডিম সংগ্রহ করার সময় খাদ্য খেতে দিতে হবে। ডিম সংগ্রহের পর ওই ডিমে বিষ্ঠা লেগে থাকলে তা পানি দ্বারা ধুয়ে ফেলতে হবে। যদি কোন হাঁসি ডিম না পাড়ে সে ক্ষেত্রে ওই হাঁসিটি চিহ্নিত করে ঝাঁক থেকে বাদ দিতে হবে। এজন্য হাঁসির সংখ্যা ও ডিম উৎপাদন নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতে হবে। হাঁসি ডিম পাড়বে কি পাড়বে না তা হাত দিয়ে ডিমের থলি পরীক্ষা করে বোঝা যায়। শুধু ডিমের জন্য হাঁস পালন করলে ওই হাঁসের সঙ্গে কোন পুরুষ হাঁস রাখার দরকার নেই। কিন্তু ডিম থেকে বাচ্চা ফোটানোর প্রয়োজন হলে ৭-৮টি হাঁসির জন্য ১টি হাঁসা (পুরুষ হাঁস) পালন করতে হবে।
    • ডিম সংরক্ষণডিম সংরক্ষণের কয়েকটি পদ্ধতি আছে যেমন:১. ঠান্ডা জায়গায় ঘরের কাঁচা মেঝেতে গর্ত করে মাটির হাঁড়ি বসাতে হবে। হাঁড়ির চারপাশে কাঠ কয়লা ভিজিয়ে দিলে হাড়ির মধ্যে বেশ ঠান্ডা হবে। হাঁড়ির মধ্যে ডিম রেখে মাটির সরা দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। এ পদ্ধতিতে বেশ কিছুদিন ডিম ভালো থাকবে।

      ২.  ১৪০ ফাঃ তাপমাত্রার গরম পানিতে ১৫ মিনিট ডিম সিদ্ধ করে বেশ কিছুদিন ডিম সংরক্ষণ করা যাবে

      ৩. ডিমের উপরিভাগের অসংখ্য ছোট ছোট ছিদ্র বন্ধ করার জন্য এক মিনিট খাঁটি সরিষার তেলের মধ্যে ডুবিয়ে রাখতে হবে। এ পদ্ধতিতে ডিম বেশ কিছুদিন ভালো থাকলেও এ ডিমে সরিষার তেলের ঝাঁজ পাওয়া যাবে।

       

      চুনের পানিতে ডিম ডুবিয়ে রেখে ডিমের ছিদ্র বন্ধ করা যাবে। এক্ষেত্রে নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করতে হবে:

       

      ১ম ধাপ

      একটি পাত্রে ১ লিটার পানি নিয়ে তার মধ্যে ১০০ গ্রাম চুন গুলে গরম করতে হবে।

      ২য় ধাপ

      লবণ পানি ঠান্ডা হলে তার মধ্যে ২৫০ গ্রাম চুন ভালোভাবে গুলাতে হবে।

      ৩য় ধাপ

      পাত্রটি একদিন রেখে দিলে নিচে তলানি জমবে।

      ৪র্থ ধাপ

      নিচের তলানি না নেড়ে উপরের পরিষ্কার পানি আলাদা পাত্রে ঢেলে নিতে হবে।

      ৫ম ধাপ

      এই পরিষ্কার পানিতে ২০ মিনিট তারের খাঁচায় করে ডিম ডুবাতে হবে।

      ৬ষ্ঠ ধাপ

      খাঁচাসুদ্ধ ডিম ছায়ায় শুকিয়ে নিতে হবে।

       

       

    • ডিম পচে কেন?
      ডিম সংরক্ষণ ব্যাপারে প্রশ্ন আসা স্বাভাবিক ডিম পচে কেন? আগেই বলা হয়েছে ডিমের মোটা মাথা অংশটায় থাকে বাতাস।
      এই বাতাসে অক্রিজেন ভাগ কমে যখন কার্বন ডাই- অক্রাইড ভাগ বেড়ে যায় তখনই ডিম পচে যায়। ডিম পচার আরো একটা কারণ হলো বীজণু। ডিমের খোসার অজস্র সূক্ষ সূক্ষ ফুটো দিয়ে ডিমের ভিতরে ঢুকে ডিমকে পচিয়ে দেয়।
  • ডিম বাজারে পাঠাবার সঠিক উপায়
    ডিম বাজরে পাঠাবার আগে পরিষ্কার করে ফেলতে হবে ডিমের বাইরের গা অথার্ৎ খোসার নোংরা। নোংরা খাবার জিনিসে কেউ পছন্দ করে না। ডিম পানিতে পরিষ্কার না করাই ভাল। ওতে খোসার সূক্ষ ফাঁক দিয়ে পানি ডিমের ভেতরে ঢুকে যেতে পারে। খোসার নোংরা ছুরি দিয়ে চেঁচে শিরিষের কাগজ বা খসখসে তোয়ারে দিয়ে পরিস্কার করে ফেলুন।
  • ডিম বাজারে বা দূরের জায়গায় পাঠাবার নানা উপায় আছেনিচে সে গুলো বর্ণনা করা হলো
    (১) ডিমের কার্টুন বা কেস এ করে। আর এটাই সবথেকে বেশি প্রচলিত। কারণ এইসব কার্টুনে ডিম রাখার জন্যে গর্তগুলোতে ডিম রাখলে সেটা থেকে গড়িয়ে পড়ে যাবার সম্ভাবনা একেবারে নেই বললেই চলে। তাছাড়া এক একটি কার্টুন বা কেস- এ সর্বনিম্ন ত্রিশটা করে ডিম নেয়া যায়। এভাবে একসঙ্গে অনেকগুলো কাটুর্ন পরপর (ভ্যান অথবা ট্রাকে) চাপিয়ে তারপর বাইরে শক্ত দড়ি দিয়ে বেঁধে যতো দূর ইচ্ছে চালান করা যায়।
    (২) কাঠের ফোকর ওলা ট্রেতেঃ কাঠের ট্রের ওপরে একটা হ্যাল্ডের লাগানো। ধরে বয়ে নিয়ে যাবার জন্য। আর সবই আগের বলা কার্টুনের মতো। তবে কাঠের ট্রেগুলো পিচ বোর্ডের বাক্রে ভরবার দরকার পড়ে না। হাতে করে বয়ে নেওয়া যায় বা সুবিধা মতো কিছুতে বসিয়েও নেওয়া চলে।
    (৩) ঝুড়িতে: প্রথমে খড়/ বিচুলির একটা স্তর। তারপর একস্তর ডিম। আবার একস্তর খড়/বিচুলি এবং তার ওপর ডিম। এভাবে ঝুড়ি যত বড় হবে ডিমের স্তর তত বাড়িয়ে নেয়া যায়। শেষে সমস্ত ঝুড়ি একটা দড়িতে বেঁধে নিয়ে যতো দূর ইচ্ছা গরুর গাড়িতে, বাসের মাথায়, ট্রেনে চালান দেয়া যায়।
    (৪) মাটির হাঁড়িতেঃ ওপরের নিয়মে সবটাই। তবে এখানে অতিরিক্ত সাবধান হতে হবে যাতে মাটির হাঁড়ি ভেঙ্গে না যায়।

Level 0

আমি রায়হান আহমেদ জয়। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 5 বছর 2 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 7 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস