৬ টি সহজ পদ্ধতিতে অর্থ উপার্জন করুন ওয়েবসাইট দিয়ে!

আমরা মানুষ তাই আমাদের চাহিদা রয়েছে। জীবন চলার পথে আমাদের অর্থের প্রয়োজন রয়েছে। অর্থ ছাড়া একজন বাক্তিকে কেহ মূল্যায়ন করে না। তাই অর্থের প্রয়োজন অপরিসীম। আমরা যারা চাকরি করি, বেকার অথবা গৃহিণী। আমাদের অবশর সময় টুকু কাজে লাগিয়ে বারতি একটা অর্থ উপার্জন পথ তৈরি করতে পারি।
যাদের লেখা লেখি করার অভ্যাস আছে, ব্লগিং করে থাকি, ফিল্ম এক্টর্স অথবা ফিল্ম মেকার, স্টুডেন্ট অথবা বেকার। আমরা প্রতেকেই নিজের ক্রিয়েটিভিটি আইডিয়া দিয়ে একটা ব্লগিং ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারি। সেটা, হতে পারে ফুড ব্লগিং, শিক্ষা বিষায়ক, ফুড রেসিপি অথবা তথ্য ও ইনফর্মাটিক ব্লগ। আমরা আজ দেখবো কিভাবে একটা ওয়েবসাইট দিয়ে ছয়ের অধিক উপায়ে অল্প সময়ে খুব সহজে উপার্জন করতে পারি।
এই ছয়টি পদ্ধতি আপনাকে আপনার ওয়েবসাইটে অর্থোপার্জনে সঠিক পথে দেখাবে। তো চলুন বিস্তারিত দেখে নেয়া যাক।

১। নিজেস্ব পণ্য বিক্রয়ের মাধ্যমে উপার্জন

মনে করুন, আপনার একটি ওয়েবসাইট আছে, এই সাইটটি বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠেছে এবং প্রতিদিন বেশ ভাল ভিজিটর আসে, তাহলে আপনি আপনার নিজের তৈরি করা কোন পন্যের বিজ্ঞাপণ সেখানে দিতে পারেন অথবা আপনার নিজেস্ব পণ্য আছে (Fhysical, Digital, Vartual or Electronics Products), সেগুলো সম্পর্কে রিভিউ লিখে আপনার ওয়েবসাইট এ পাবলিশ করতে পারেন এবং সেখান থেকে আপনি আপনার পন্যের জন্য বেশ ভাল সেল জেনারেট করতে পারবেন। যদি আপনার তৈরি করা কোন প্রোডাক্ট থাকে তাহলেই ভাল সেল করতে পারবেন। আপনার যদি বিক্রি করার মত কোন পণ্য না থাকে তাহলে অনন্যার পণ্য নিয়েও কাজ করতে পারবেন তবে উপার্জন টা খুব একটা বেশি হবে না।

২। বিজ্ঞাপণ থেকে আয়

আপনার ওয়েবসাইটে যদি বেশ ভাল ভিজিটর আশাকরিয়ে সেখান থেকে আয় করতে পারেন খুব সহজে।

যেমন- বিভিন্ন প্রয়োজনে, অনেক ওয়েবসাইটেই বা ব্লগে ঢুকতে হয়ে। সেখানে ওয়েবসাইটের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন পন্যের বিজ্ঞাপণ দেখি। এই জাতীয় বিজ্ঞাপণ গুলো আপনার ওয়েবসাইটে প্রদর্শন করানোর মাধ্যমে আপনিও উপার্জন করতে পারবেন। আপনার ওয়েবসাইটে বা ব্লগে যে কোম্পানির গুলো বিজ্ঞাপণ প্রদর্শন করতে চায়, সেই কোম্পানী আপনাকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ডলার পে করে তাদের বিজ্ঞাপণ আপনার ওয়েবসাইটে প্রদর্শন করাবে।

এবার আসি, এই বিজ্ঞাপণ গুলো কথা থেকে পাব? আমি বলি, বিজ্ঞাপণ দুইটা পদ্ধতিতে আপনি পাবেন।

প্রথমত, আপনি দেশিও অনেক কোম্পানী রয়েছে যেমন ঃ টেলিকম কোম্পানি, ই কমার্স কোম্পানি সহ অনেক প্রতিষ্ঠান। এছাড়াও আপনি বিভিন্ন ওয়েবসাইট গিয়ে দেখবেন তারা দেশীয় কোন কোন কোম্পানির স্পন্সর এড ব্যবহার করচ্ছে, তাদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করবেন। এতে আপনি দেশীয় স্পন্সর পেয়ে যাবেন।

দ্বিতীয়ত, আপনি বিদেশিও অনেক ভালো জনপ্রিয় স্পন্সর সাইট পাবেন যেমনঃ গুগল এডসেন্স, মিডিয়া ডট নেট সহ অনেক প্রতিষ্ঠান। এই সকল সাইট থেকে কিভাবে অ্যাড নিবেন সে সম্পর্কে গুগলে অনেক উৎস রয়েছে। এই সাইট গুলোতে Registration করতে হবে এরপর অ্যাকাউন্ট Approved হলেই আপনি আপনার ওয়েবসাইট এ অ্যাড পাবলিশ করতে পারবেন। এর ফলে আপনি প্রতি ১০০০ ভিজিটর এর সাপেক্ষে আপনি একটা নিদিস্থ ডলার পাবেন। এটা দেশ ভেদে আয় তারতম্য হয়ে থাকে।

৩। অ্যাফিলিয়েট ও সিপিএ মার্কেটিং করে অর্থ উপার্জন

আপনার সাইটটি যদি নিদিস্থ কোন বিষয়ের উপর হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে আপনি ওই বিষয়ে অ্যাফিলিয়েট অথবা সিপিএ মার্কেটিং সাইট গুলোতে রেজিস্টার মেম্বার হয়ে তাদের প্রোডাক্ট গুলো আপনার সাইট পাবলিশ করে সেখান থেকে আপনি উপার্জন করতে পারবেন। এই প্রধতিতে আপনাকে বিভিন্ন কোম্পানির পণ্য বিক্রি করে দিতে হবে এবং প্রতিবার যখন আপনি পণ্য সেল করবেন এর বিনিময়ে একটা কমিশন পাবেন সেটা হতে পারে ১% থেকে ৯০% পর্যন্ত। এই কমিশন নির্ভর করে মুলত প্রোডাক্ট ও কোম্পানির উপর।

আপনি চাইলেই, আপনার ওয়েবসাইটে এই জাতীয় মার্কেটিং করতে পারেন। নিজের সাইট বা ব্লগ করে আমাদের দেশে অনেকেই অ্যাফিলিয়েট ও সিপিএ মার্কেটিং করছেন। কাজেই আপনিও এই ধরনের কাজ করে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।

৪। অডিয়েন্স সাপোর্ট ও পেইড গেস্ট কনটেন্ট টিউন

আপনার সাইটটি যদি monthly খুব ভাল ভিজিটর আসে আপনার সাইট কন্টেন্ট পড়ার জন্য বা ভাল কোন সার্ভিস পেতে তাহলে সেই ভিজিটর গুলোকে অর্থে রুপান্তর করতে পারবেন। মনে করুন, আপনার একটি ই-বুক রিভিউ সাইট রয়েছে অথবা ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট বিষয়ক ব্লগ বা সাইট রয়েছে। কোন এক নতুন ব্লগ সাইট রয়েছে যাদের Audience কম সে ক্ষেত্রে তারা আপনার সাথে কন্ট্যাক্ট করল যে ভাই আপনার সাইট যে ভিজিটর গুলো আসে সেগুলো আমার সাইট পাঠানোর বাবস্থা করবেন আমি প্রতিমাসে ১০০ থেকে ২০০ ডলার দিব। এই রকম কন্ট্যাক্ট বেস কাজ করাই হল Audience Support and Paid Guest Content post.

৫। ইমেইল লিস্ট বিল্ডিং করে উপার্জন

ইমেল মার্কেটিং লিড জেনারেশন প্রক্রিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, আপনার ওয়েবসাইট এ মেম্বারশিপ সাবস্ক্রাইবার অপশন রাখবেন। কারন ভিজিটর যেন আপনার সাইটে মেম্বার হতে পারে। সুভিধা দুই দিকেই সাবস্ক্রাইবার হলে সে তার কাঙ্ক্ষিত টিউন তার ইমেইল পাবে। অপর দিকে আপনার এই ইমেইল লিস্ট বিক্রি করে আয় করতে পারবেন। ভ্যালিড ইমেইল লিস্ট যে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের অনেক বড় একটি অ্যাসেট। আপনি চাইলে এই লিস্ট ব্যবহার করে আপনার প্রোডাক্ট সেল বাড়াতে পারবেন। এছারাও পুরাতন কাস্টমারদের আপনার প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ইভেন্ট সম্পর্কে আপডেট দিতে পারবেন। এই ইমেইল লিস্ট দ্বারা নতুন নতুন ভ্যালিড কাস্টমার পাবেন এবং আপনার কাঙ্খিত টার্গেটে পৌঁছিতে পারবেন।

৬। ডোনেশন বাটন অথবা প্রিমিয়াম কন্টেন্ট লাইব্রেরি

আপনার সাইট যদি হয় ডাউনলোড রিলেটেড ওয়েবসাইট তাহলে আপনি এখান থেকে প্রতি ১০০০ ডাউনলোড এর সাপেক্ষে ৩ ডলার থেকে ১২ ডলার পর্যন্ত উপার্জন করতে পারবেন। এ রকম অনেক সাইট বা কোম্পানি রয়েছে পৃথিবীতে। অথবা অনেক ডিজিটাল প্রোডাক্ট বা ডকুমেন্ট রয়েছে যা মানুষকে ডলার দিয়ে কিনতে হবে। এছারাও অনেক ইম্পরট্যান্ট ডকুমেন্ট বা কন্টেন্ট রয়েছে যা সবার জন্যই ফ্রী সেক্ষেত্রে আপনি ডোনেশন বাটন অ্যাড করে দিতে পারেন। যাদের আপনার ডকুমেন্ট বা কন্টেন্ট ভাল লাগে বা প্রয়োজন সে ক্ষেত্রে অনেকই আপনাকে ডোনেট করবে।
এই ভাবেই আপনি অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।

এই ছয়টি পদ্ধতির বাহিরেও অনেক ভাবেই অর্থ উপার্জন করা যায়, একটা ওয়েবসাইট দিয়ে। আমার কাছে যেটা মনে হয় সেটা হল একটা ভাল ওয়েবসাইট একটা সৎ সন্তানের মত। একটা ভাল মানের ওয়েবসাইট থাকলে অবসর জীবনে বা বৃদ্ধ বয়সেও আপনাকে সাপোর্ট দিবে। একটা ওয়েবসাইট থাকা মানে কোন এক শহরে আপনার একটা ফ্ল্যাট বা বাড়ি থাকার মত।

শেষ কথা

ভাবছেন কি বিষয়ে ওয়েবসাইট বা ব্লগ তৈরি করবেন?
মুলত প্রথম অবস্থায় সবচাইতে বড় যে সমস্যাটি হয়ে থাকে সেটি হল, কোন বিষয়ে ওয়েবসাইট করবেন সেটাই খুঁজে পাচ্ছেন না? এটার মূল কারন হচ্ছে তাড়াহুড়া করা। আমরা যখন কোন উৎসাহমূলক লিখা পড়ি বা শুনি তখনই মনে মনে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি যে আমিও তার মত হব, কঠোর পরিশ্রম করব। হ্যা, এমন টাই ভাবা ভাল।
কিন্তু আমাদের প্রধান সমস্যা হচ্ছে ধৈর্য্য শক্তি কম, আমাদের সব কিছু ইন্সট্যান্ট চাই। এই জন্যই শেষ পর্যন্ত আমাদের তেমন কিছুই হয় না। যেহেতু আপনার ওয়েবসাইট একদিন বা দুইদিনের জন্য নয়, যেহেতু এটা সারা জীবনের জন্য, তাই হুট হাঁট সিদ্ধান্ত নিবেন না। দেখুন, ভাবুন, শুনুন, বুঝুন, এক্সপার্ট দের সাথে আলোচনা করুন। তারপর সিদ্ধান্ত নিন কোন বিষয়ে আপনি এক্সপার্ট সেই বিষয় গুলো প্রাধান্য দিন। ধন্যবাদ

আশা করি  লেখাটি ভাল লেগেছে, ভাল লেগে থাকে বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করুন। সবাই ভাল থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ

সৌজন্যঃ Apon Academy

Level 3

আমি ইঞ্জিনিয়ার জসিম উদ্দিন। Head Of Operation, Apon Academy, Dhaka। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 4 বছর 6 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 14 টি টিউন ও 2 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

সিনিয়ার সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার জে কে গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রি এবং আপন একাডেমীর সহ প্রতিষ্ঠাতা। আমি আইটি বিষয়ে পড়া শোনা করেছি (MSc in IT ) জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে । আমার আইটি বিষয়ে লেখা লেখি করতে ভাল লাগে, তাই টেকটিউনে এর পাশাপাশি AponAcademy.Com তে নিয়মিত আইটি ও সম-সাময়িক বিষয় নিয়ে লিখে থাকি।...


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস