ভূমিকম্প নিয়ে আমার নিজের কিছু ভাবনা আপনার কাছে আজগুবিও মনে হতে পারে

২০০৯ সালে ভূমিকম্প নিয়ে https://www.techtunes.io/reports/tune-id/9900 এই টিউনটি করেছিলাম। সেখানে আমি সবাইকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেছিলাম ছোট ছোট ভূমিকম্প গুলো বড় ভূমিকম্পের আশঙ্কা কমিয়ে দেয়। কারন তাতে ভূ অভ্যান্তরে থাকা খনিজ তার শক্তি ভূপৃষ্ঠে উদগীরন করে দেয় যার ফলে জমা থাকা শক্তির পরিমান কমে বড় ভূমিকম্পের সম্ভাবনা কমে যায়। তখনকার বাস্তবতায় হয়ত এটা সঠিক ছিল কিন্তু বর্তমান বাস্তবতায় এখন আর মনে হচ্ছে না।

কিন্তু কেন?

গত কয়েকদিন আগে নেপালের প্রথম দফায় ভূমিকম্পটি হবার পর থেকেই আমি পরিচিত সবাইকে বলে আসছিলাম এখন থেকে নিয়মিতই এ ধরনের ভূমিকম্প এখানে হবে আর নেপালের পরিস্থিতি ভয়ানক হয়ে উঠতে পারে। কতটা সেটা না বলাই ভাল। কিন্তু যে আমি আগে বলছিলাম এ ধরনের ভূমিকম্প বড় ভূমিকম্পের ঝুকি কমিয়ে দেয় সে আমিই কেন বলছি বড় ভূমিকম্পের কথা। যেখানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ববিদ কিংবা পরিবেশ বিজ্ঞানীরা দাবী করছেন বেশ কয়েক দশকের জন্য ভূমিকম্পের আশঙ্কা কমে গেল। আসলে আগের ভূমিকম্প গুলো হত ভূঅভ্যান্তরের জমা থাকা শক্তি থেকে যার ফলে প্লেট বা ফল্ট গুলোও প্রভাবিত হত। কিন্তু নেপালের প্রথম দফা ভূমিকম্পের পর  ভূঅভ্যান্তরে বেশ বড় ধরনের একটা পরিবর্তন এসেছে, কাঠমান্ডু প্রায় ১০ ফুট সরে গেছে। এর ফলে যেটা হচ্ছে এখন ভূ অভ্যান্তরের অল্প পরিমান শক্তি থেকেই ভূপৃষ্ঠে প্রমাণ মাত্রার ভূকম্পন অনুভূত হচ্ছে। একটা উদাহরণ দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করি।

ধরুন একটি কাঠ ভেঙে উপরের ছবির মত দুটো টুকরা তৈরী হল এ দুটি জোড়া লাগানোর সময় যদি ঠিক খাপে খাপে লাগে তবে কিন্তু মজবুত ভাবে লেগে যাবে। কিন্তু খাপে খাপে না মিললে দূর্বল কোন আঘাতেও ভেঙে যেতে পারে। কাঠমান্ডুর ভূঅভ্যান্তরে অবস্থা এখন অনেকটা এরকম প্রথম ভূমিকম্পে ১০ ফুট সরে যাওয়াতে।

শুধুই কি নেপাল?

আমার কাছে মনে হয় নেপালে এধরনের বিভিন্ন মাত্রার ভুমিকম্প হতে থাকলে তার প্রভাব বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব দিকেও পড়তে পারে। যমুনা করতোয়ার স্রোতধারাতে পরিবর্তন আসতে পারে। প্রভাব দেখে যেতে পার ঢাকা এর আশপাশেও। তবে বেশ কিছুদিন থেকে আমি যেটা বলছিলাম হয়ত পৃথিবীর মানচিত্র থেকে হারিয়ে যেতে পারে নেপাল। এমন মনে করার যুক্তি না হয় আরেকদিন ব্যাখ্যা করব।

তাহলে?

আসলে এ মুহূর্তে আমাদের প্রস্তুতি নেয়া ছাড়া কোন কিছুই করার নাই। আমি সবসময়ই যেটা করছি সেটা অনেকের কাছে হাস্যকর মনে হলেও ভূমিকম্প বোঝার জন্য আমার কাছে সহজ উপায় মনে হয়েছে। আমি আশপাশে একটি বোতলে অর্ধেক পানি ভরে রাখি। ভূমিকম্প হলে বোতলের পানির দিকে তাকালেই বোঝা যাবে। 😛 এছাড়া সবাই একটি হালকা ব্যাগ তৈরী রাখতে পারে যেখানে কিছু শুকনো খাবার পানি প্রয়োজনীয় ঔষধ থাকবে। ভূমিকম্প হলে যারা নীচতলা বা দোতলায় থাকেন তাদের বের হয়ে যাবার চেষ্টা করাটাই উত্তম। কারন এখানকার বিল্ডিং গুলো রডের হওয়াতে খুব জোরালে ভূমিকম্প হলেও ধসে পড়ার আগে রড গুলোর কারনে কিছুটা সময় নেবে খুব দূর্বল ভবন না হলে। আর এই সময়টাতেই বাচার জন্য নিরাপদ জায়গায় চলে যেতে হবে। সেটা হতে পারে কোন মাঠ কিংবা সড়কদ্বীপ। আর ভবনের স্থাপত্য দূর্বল না হলে অন্তত প্রথম কোন একটি ছাদ ধসে পড়ার আগে ভবন ধসার সম্ভাবনা কম, একটি ছাদ ধসে পড়লে তার চাপে নীচের গুলোও ধসবে যেটা আমরা টুইনটাওয়ার কিংবা রানা প্লাজায় দেখেছিলাম।

কোন আশাই কি নাই?

আশা বলতে এটুকু অত্যাধিক মজবুত রডের ভবন গুলোর ক্ষতি কম হবে কোন একটি অংশ না ধসলে। তাই এক অর্থ সেগুলো নিরাপদ আর মাঝারী মানের রড দিয়ে নির্মিত ভবনেও নামার জন্য বা নিরাপদ স্থানে যাবার সময় পাওয়া যেতে পারে। মাআর বেশী উপরের দিকে থাকলে খুব শক্ত কিছুর নীচে আশ্রয় নেয়া উচিত তবে ভুলেও লিফট না।

বিকল্প কি?

ভূমিকম্পে যে পরিমান কম্পন তৈরী হয় তার চাইতেও ভয়ানক ঢেউয়ের উপর দিয়ে নৌযান চলে আর বড় বড় জাহাজ গুলোতো বহূতল হয়। এই ধরনের মডেলে ভবন বানানো যায় না? হাসছেন? আপনাদের ঢাকার র‌্যাংগস ভবনের কথা মনে আছে যেটা সরকার বেশ খানিকটা ভেঙে দিয়েছিল এরপর বাকীটা ভেঙে পড়ে। কিন্তু র‌্যাংগসের নতুন ভবনটি দেখেছেন কি? এটির কাঠামো স্টীলের। এনটিভি'র ভবনও অনেকটা তাই। বর্তমান র‌্যাংগস ভবনটির স্থাপত্য অনুসরন করলে বড় ভূমিকম্প ও মোকাবেলা হয়ত করা যেতে পারে।

সরকার কি করতে পারে?

ব্যক্তিগত ও বেসরকারী পর্যায়ে সচেতনতা কার্যক্রমের পাশাপাশি আমার মতে সরকার ও ব্যাপকভাবে সচেতনতা কার্যক্রম চালাতে পারে। বিল্ডিংগুলোর অনুমোদনে খুব কড়াকড়ি করতে পারে তবে বাড়তি হিসেবে আমার মতে যা করতে পারে গ্যাস ও বিদ্যুত কেন্দ্র গুলোতে সেন্সর সুইচ লাগাতে পারে। যে ভূপৃষ্টে কোন কম্পন পেলেই সেটা বন্ধ হয়ে যাবে নিজ থেকে। তাতে ভূকম্পন পরবর্তী বিদ্যুত বা গ্যাসের ক্ষতি থেকে বাচা যেতে পারে।

কিন্তু এভাবেই কি চলবে?

আমি অন্তত মনে করতে চাইনা, যদিও ব্যাপারটি ভাবা কঠিন কিন্তু তবু বলব এ পৃথিবী আমাদের আমরা এখানে টিকে থাকব। আর তাই পৃথিবী আমাদের উপর এমন নিয়ন্ত্রন করবে এমন ভাবে চলতে পারে না বরং আমাদেরকেই সমগ্র পৃথিবীর নিয়ন্ত্রন নিতে হবে। এর জন্য খুব অত্যাধুনিক প্রযুক্তি চিন্তার শুরু করতে হবে। যেমন গোলাকার পৃথিবীকে এমন ভাবে বন্ডিং দিয়ে আমরা তৈরী করতে পারি।

তবে এটা শুধু একটা উদাহরণ এমন অনেক কিছুই হতে পারে হয়ত এই শতাব্দীতে নয় এই সহস্রাব্দেও নয় তবুও প্রযুকইত এমন পর্যায় আমাদের চিন্তায় আনা উচিত।

Level 0

আমি প্রযুক্তি প্রেমী। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 15 বছর 2 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 136 টি টিউন ও 2157 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 3 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

Khub gan-gorbo vora kotha. Ami apnar sate soho mot prokas korchi.

Level 2

ভাল লাগল পোস্ট পরে। বিশেষ করে গ্যাস আর বিদ্যুতের কথা টা। তবে যদি আল্লাহ আমাদের হায়াত নাই দিয়ে থাকেন তবে যত আধুনিক প্রযুক্তিই ব্যবহার করিনা কেন কোন লাভ নাই।

    সেটা ঠিক কিন্তু আমরা তো আমাদের মত চেষ্টা করি বাকীটা আল্লাহর ইচ্ছা

রাখে আল্লাহ মারে কে? ভূমিকম্পকে নয় যে ভূমিকম্প সৃষ্টি করেছে তাকে ভয় কর ৷ তিনিই তোমাকে হেফাজত করবে ৷ তবে সচেতনতা মূলক পোষ্টের জন্য ধন্যবাদ

    ব্যাপারটা ধর্মীয় নয় প্রযুক্তির দুষ্টিকোন থেকে ভাবুন, যদি আল্লাহ যা করে তার উপর ভর করে আমরা বসে থাকতাম তাহলে তো সেই আদিম যুগেই পড়ে থাকতাম, এভাবে ভাবুন না এই পৃথিবীটা একটা পরীক্ষা আল্লাহ এখানে আপনাকে ছেড়ে দিয়েছেন আপনার নিজের ইচ্ছামত চাইলে তিনি সব করে দিতে পারেন কিন্তু তিনি আপনাকে ছেড়ে দিয়ে দেখছেন আপনি কি পারেন

আকরামুল হাসান ভাই যে কথা বললেন, তার পরে আরকি কোন কথা থাকতে পারে? আসলে আমাদের সৃষ্টিকর্তা মহান রাব্বুল আল-আমিন এর প্রতি এসকল দুর্যোগের জন্য পানা চাইতে হবে।

Amader socheton hote hobe.
Socheton karike Allah rokkha korte pare.

অনেক ভাল লিখেছেন, পাঠ করে ভাল লাগলো। এই বিষয়ে আমাদের সচেনতা প্রয়োজন এবং একজন মুসলীম হিসাবে সৃষ্টিকর্তা মহান রাব্বুল আল-আমিন এর উপর প্রার্থনা রাখি তিনি যেন আমাদের সবাইকে এত বড় আযাব হতে হেফাজত করুন এবং তাঁর নির্দেশিত পথে বাকি জীবনটা পরিপূর্ণ করতে পারি (আমিন)

ভাইয়া আমি আপনার একজন ফ্যানার। আপনার টিউন গুলো অনুসরন করে সফলতা পেয়েছি। অপরদিকে অনেকদিন পর আপনার লেখা পেয়ে খুব ভাল লাগছে। আমি আপনার কাছে দুটি বিষয়ে রিভিউ চাচ্ছি রেস্পন্স করলে উপকৃত হই।
১। প্রথমত গুগল অ্যাডসেন্স সম্পর্কে। ইউটিউব হতে পাওয়া অ্যাডসেন্স কোড কোন ব্লগে ব্যবহার করা যাবে গুগল ব্লগস্পট নাকি সেলফ হোস্টেড সাইট?
২।মনে করি ব্লগস্পট সাইটে তথা ব্লগস্পট দ্বারা অ্যাডসেন্স ক্রিয়েট করেছি। অতপর পরবর্তী সেখানে যদি পেইড ডোমেইন (মূলত ব্লগস্পট সাইটের নামের সাথে মিল রেখে) রিডাইরেক্ট/সংযুক্ত করি তাহলে কোন সমস্যা হবে কি? এই ক্ষেত্রে ব্লগস্পট সাইট হতে পাওয়া অ্যাডসেন্স অন্য কোথাও তথা পেইড ডোমেইন কিংবা সেলফ হোস্টেড সাইটে ব্যবহার করা যাবে কি?
৩। অনেক পূর্বে আপনার একটি টিউন অনুসরন করে ডোমেইন পার্কিং করেছিলাম। আমার ডোমেইনটির দাম ১০০০ ডলার উঠেছিল। বিদেশী একজন বায়ার ক্রয় করতে চেয়েছিল। বাট করতে পারি নাই। তার কারন হল তিনি আমাকে নিম্নরুপ বার্তা দেন-
Hello,

You are not late. Thanks but my clients need the seller ecertification too. He won’t proceed without it.

I can help you with instructions. It’s an easy process. Before we proceed you should provide my client with the domain certificate from Domain Tools Certifications

It will take only 2 minutes of your time to order it. If you have any questions during the certification please feel free to ask for my help. I’m very motivated to finish this deal.
এখন কথা হল ডোমেইন সার্টিফিকেট কি, কি কারনে করতে হয় এবং এটি কোথা হতে করব, কত টাকা খরচ হবে। এই বিষয়ে যদি একটি টিউন করেন তাহলে হয়ত আমার মত অনেকের উপকারে আসবে। পরিশেষে ভাল থাকবেন।

তথ্যাট শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

খুব ভয় লাকছে।

প্রিয় টিউনার ,

আমি টেকটিউনস কমিউনিটি ম্যানেজার, শোয়াইব, টেকটিউনস থেকে আপনার সাথে অফিসিয়ালি যোগাযোগ করতে চাচ্ছি।

টেকটিউনস থেকে আপনার সাথে অফিসিয়ালি যোগাযোগ করার জন্য http://techtun.es/2obSQxE লিংকটিতে ক্লিক করে আপনার সাথে যোগাযোগের প্রয়োজনীয় তথ্য সাবমিট করে আমাদের সাহায্য করবেন আশা করছি।

সাবমিট করার পর আমাদের এই ম্যাসেজের রিপ্লাই আপনার কাছ থেকে আশা করছি।

ধন্যবাদ আপনাকে।

    আপনার এই কমেন্ট কতটা অথেনটিক? যোগাযোগ করতে চাইলে আমাদের সব তথ্যই তো টেকটিউনস এর কাছে আছে