আমরা তো সবাই গেম খেলি। তবে এমন গেম যে গেম এর কারনে এখন পর্যন্ত দেড় শতাধিক মানুষের জীবন গিয়েছে, সত্যই আশ্চর্যের বিষয়। হ্যা আজ কথা বলব "ব্লু হোয়েল" গেমটি নিয়ে। আসলে এটি কি, কেন মানুষ এই গেমটি খেলে আত্মহত্যা করছে এই বিষয়ে। প্রথমে জেনে রাখুন গেমটি খেলে যারা আত্মহত্যা করেছে তারা বেশিরভাগই কিশোর বা তরুন। তাদের বয়স ১২-২৫ বছর,আর এই বয়সে কৌতূহল বেশি থাকে।
গেমটি তৈরি করেছিলেন রাশিয়ার একজন ব্যক্তি যার নাম ফিলিপ বুডেইকিন। তাকে অবশ্য ইতিমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারপরও গেমটি নিয়ে এখন কথা চলছেই কেননা আমাদের পাশ্ববর্তী দেশ ভারত সহ আর অনেক দেশে এই গেমটির কারনে অনেকজন কিশোর ও তরুন আত্মহত্যা করেছে।
বলে রাখি,এটি কিন্তু কোন সাধারন ভিডিও গেম না।এটি একটি চ্যালেঞ্জ যেখানে আপনাকে কতগুলো টাস্ক প্রদান করা হয়। গেম এর ভেতর থেকে একজন কিউরেটর বা তত্তবাবধায়ক আপনাকে প্রতিদিন একটি একটি করে মোট ৫০ দিনে ৫০ টি টাস্ক দিবে। এর ভেতর সবচেয়ে শেষ টাস্ক, অর্থাত গেমটি জেতার জন্য যে টাস্কটি তা হল উচু কোথাও থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা।
তাই বুঝতেই পারছেন গেমটি খেলার কোন মানেই নেই।কিন্তু এই গেমসটির মূল ভিকটিম বা তরুনেরা তারা কৌতুহলী হয়ে এই গেমটি খেলতে গিয়ে, এক পর্যায়ে এর আসক্ত হয়ে যায় পরে এই নেশায় পরে তারা সর্বোচ্চটা করে বসে। যারই পরিনতি ১৩০+ মৃত্যু।
ব্লু হোয়েল গেমসটি ব্লু হোয়েল চ্যালেঞ্জ নামে পরিচিত। গেমসটির ভেতর এর কিউরেটর বা তত্ত্বাবধায়ক কতৃক ৫০ দিনে যে ৫০ টি টাস্ক দেয়া হয়, তা এখানে তুলে ধরা হলঃ
সুতরাং টাস্কগুলো দেখে বুঝতেই পারলেন এই চ্যালেঞ্জ তথা ব্লু হোয়েল গেমটি আপনাকে কোন পথে নিয়ে যাবে।গত ২৭ জুন আর্জেন্টাইন বেনজামিন ১৬ বছর বয়সের একজন বালক এই গেমটির জন্য মৃত্যবরন করে।একই
দেশের ১২ বছর বয়সের একজন মেয়ে ও ১৪ বছর বয়সের একজন ছেলে আত্মহত্যা করে গেমটির জন্য।
চীনের নিংবো শহরের ১০ বছর বয়সের একটি মেয়ে সে ব্লু হোয়েল এর কতগুলো টাস্ক সম্পন্ন করেছে, তার ছবি সামাজিক মাধ্যমে দেয়। পরে তাকে গেমটি থেকে দূরে সরিয়ে নেয়া হয়।
ব্যাপক বিপর্যয় ঘটেছে তা হল ভারতে। গত ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এখানে প্রায় ১০ জন এই গেমের জন্য প্রান দিয়েছে বলে ভারতের বড় বড় গনমাধ্যমে উঠে এসেছে। ২৭ আগষ্ট ভারতের উত্তর প্রদেশ এর হামিরপুর জেলার ১৩ বছর বয়সের একজন স্কুল ছাত্র ৫০ টি টাস্ক সম্পন্ন করার মাধ্যমে নিজের জীবনকে দিয়ে দিয়েছে।
৩০ আগষ্ট তামিল নাডুর ১৯ বছর বয়সী একজন কলেজ ছাত্র গেমটি খেলার কারনে পরিশেষে আত্মহত্যা করে। সর্বশেষ আমার জানা তথ্যমতে গত ৩ সেপ্টেম্বর সাটভিক পান্ডে নামক একজন সুইসাইডাল এই গেমটি খেলে আত্মহত্যা করে।
কোনটা ভালো আর কোনটা মন্দ সেটা সম্পর্কে আমরা সবাই জানি। ব্লু হোয়েল চ্যালেঞ্জ এর মত এসব গেম যদি কখনও আমাদের সামনে পরে, তবে আমাদের প্রথম থেকেই এগুলো থেকে দূরে থাকা উচিত। অভিভাবকদের উচিত তার সন্তান কি করছে তা দেখা। আর ব্লু হোয়েল এর বিকল্প হিসেবে আমরা হিগিপপ ডট কম এর "পিঙ্ক হোয়েল চ্যালেঞ্জ " খেলে দেখতে পারি। এখানে আমাদের প্রতিদিন অনেকগুলো ভালো কাজের টাস্ক দেয়া হয় যা ব্লু হোয়েল গেমটির সম্পূর্ণ বিপরীত।
(বিঃ দ্রঃ ভিডিওটির জন্য লেখক বা টেকটিউনস কেউ দায়ী নয়। এটি সহায়ক হিসেবে মাত্র)
আমি Durbar। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 5 বছর 6 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 259 টি টিউন ও 88 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 20 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।
ভালোবাসি প্রযুক্তি নিয়ে লিখতে, ভালবাসি প্রযুক্তি নিয়ে ভাবতে।