হঠাৎ ঘটে গেল বিকট বিস্ফোরণ…

হঠাৎ ঘটে গেল বিকট বিস্ফোরণ...
বিস্ফোরণের তীব্রতায় রীতিমতন হকচকিয়ে গেলেন দুই বিজ্ঞানী আস্কানিসোব্রেরো
পরক্ষণেই অবশ্য তাদের বিমূঢ়ভাব কেটে যায়। আসলে এই দুজন বহু বছর যাবৎ চেষ্টা করছিলেন মারাত্মক একটি বিস্ফোরক তৈরী করতে যার ধ্বংস করবার তাৎক্ষণিক ক্ষমতা হবে সর্বাধিক। তারপর একদিন আচমকাই তারা কয়েকটি সাধারন জিনিসের মিশ্রণ ঘটিয়ে তৈরী করে ফেললেন এক দারুণ বিস্ফোরক বস্তু। জিনিসগুলি হল অল্প পরিমাণ গ্লিসারিন, কিছুটা নাইট্রিক এসিড এবং একমুঠো চিনি। এগুলো একটি পাত্রে রেখে সেখানে জোরে আঘাত করতেই ঘটে গেল সশব্দ বিস্ফোরণ।

এই আবিষ্কারের খবর চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ল। বিস্ফোরকটির নাম দেওয়া হল নাইট্রোগ্লিসারিন
অতঃপর বিজ্ঞানীরা উঠে-পড়ে লাগলেন আরো শক্তিশালী বিস্ফোরক আবিষ্কারে। স্বভাবতই তারা কাজ শুরু করলেন নাইট্রোগ্লিসারিন দিয়ে। অনেকেই গবেষণাগারে প্রাণ হারালেন। আহত হলেন প্রচুর।

একজন কিন্তু সবসময় এগিয়েই থাকে...
আপন প্রতিভা, অনুশীলন ও ধৈর্যবলে আবিষ্কারের দুনিয়ায় সকলকে পেছনে ফেলে এগিয়ে গেলেন আলফ্রেড নোবেল (১৮৩৩-১৮৯৬)। সুইজারল্যান্ডের বিজ্ঞানী তিনি।

নোবেল চেয়েছিলেন এমন বিস্ফোরক দ্রব্য আবিষ্কার করতে যার বিস্ফোরণ ক্ষমতা ভয়াবহ হলেও ব্যবহারকারী নিরাপদেই তা ব্যবহার করতে পারবে।
নেহাৎই দৈবক্রমে এক আবিষ্কার ফেললেন নোবেল। গবেষণাগারে কাজ করার সময় তার একটা আঙ্গুল কাঁচে সামান্য কেটে যায়। নোবেল তখন কাটা আঙ্গুলে সামান্য কলয়ডিয়ন লাগিয়ে নেন। ইথার এবং অ্যালকোহলের মিশ্রণে তৈরী হয় এই কলয়ডিয়ন। আঙ্গুলে কলয়ডিয়ন লাগিয়ে নাইট্রোগ্লিসারিনসহ আরও কিছু রাসায়নিক বস্তু নিয়ে পরীক্ষা করতে গিয়ে ভীষণ চমকে উঠলেন নোবেল। খুবই ক্ষিপ্রতার সঙ্গে সেই হাতটা সরিয়ে নেয়ায় বিরাট দুর্ঘটনার হাত থেকে রেহাই পেলেন তিনি। সেই সঙ্গে এটাও বুঝতে পারলেন, অবশেষে তিনি সেসময়ে দুনিয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী বিস্ফোরক দ্রব্যটি আবিষ্কার করতে পেরেছেন।
তৈরী হলো “ডায়নামাইট”।

নোবেল লক্ষ্য করেছিলেন যে, কাইজেলগার নামক একরকম মাটি নাইট্রোগ্লিসারিনকে অনেকটা সংযত রাখতে পারে। তিনি এই মাটির সাহায্যে যে ডায়নামাইটটি প্রস্তুত করলেন তার নাম দিলেন “গার ডায়নামাইট”।

এরপর তৈরী হলো “অ্যামোনিয়া ডায়নামাইট” এবং তারপর সর্বোত্তম ডায়নামাইট “জিনেটিন”।
জিনেটিন ডায়নামাইট”-এর বিধ্বংসীশক্তি অভাবনীয়, বিস্ফোরণ ক্ষমতা সর্বাধিক। পাহাড় উড়িয়ে দিতে, বাড়ি ভেঙ্গে ফেলতে, নদীর গতিপথ বদলে দিতে এর তুলনা হয় না। কিন্তু এটা ব্যবহার করা তখনকার অন্য সব বিস্ফোরকের চেয়ে নিরাপদ ছিল। সবদিক থেকেই এটা নোবেলের সেরা আবিষ্কার।

এটি সাধারণত ২০ সেন্টিমিটার লম্বা এবং ২.৫ সেন্টিমিটার ব্যাসার্ধের কাঠি আকারে কিনতে পাওয়া যায়। এটিকে উচ্চমাত্রার বিস্ফোরক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এটি টি.এন.টি এর চেয়েও ৬০ ভাগ বেশি শক্তিশালী

নোবেল ১৮৬৭ সালের ৭ মে ইংল্যান্ডে, ১৮৬৭ সালের ১৯ অক্টোবর সুইডেনে ডায়নামাইটের প্যাটেন্ট করান।

তিনি ডায়নামাইট বিক্রি করতেন “নোবেলের বিস্ফোরক গুড়া” নামে। আবিষ্কারের অল্প কিছু দিনের মধ্যেই এর চাহিদা বাড়তে থাকে। নোবেল তাঁর প্যাটেন্ট কঠোর ভাবে নিয়ন্ত্রণ করতেন। কেউ অবৈধ ভাবে ডায়নামাইট উৎপাদন করলে দ্রুত তা বন্ধ করার ব্যবস্থা করতেন। এরপরেও যুক্তরাষ্ট্রে কিছু ব্যবসায়ী কিছুটা ভিন্ন উপায়ে ডায়নামাইট উৎপাদন করে তার প্যাটেন্ট নিয়েছিল।

আলফ্রেড নোবেল তার আবিষ্কারের মাধ্যমে প্রচুর আয় হয়, আর এই আয়ের অর্থ দ্বারাই তিনি পুরস্কার প্রদানের কথা বলে যান। জীবদ্দশায় নোবেল অনেকগুলো উইল লিখেছিলেন, এর মধ্যে সর্বশেষটি লিখেছিলেন তার মৃত্যুর মাত্র এক বছর আগে নভেম্বর ২৭, ১৮৯৫ তারিখে। নোবেলের উদ্ভাবনটি ছিল অনেকাংশেই একটি বিস্ফোরক যা প্রভূত ক্ষতির কারণ হতে পারত। তাই যুদ্ধক্ষেত্রে এই ডিনামাইটের ব্যবহার তাকে শঙ্কিত করে তোলে। নোবেল পাঁচটি ক্ষেত্রে পুরস্কার দেয়ার জন্য তার মোট সম্পত্তির শতকরা ৯৪ ভাগ দান করে যান। এর মোট পরিমাণ তখনকার সময়ে ৪.৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার

এখন চলছে বিশ্বকাপ ক্রিকেট, তাই নিচের Tune-টি আপনাদের কাজে আসতে পারে…

এবার আপনার প্রিয় Blogspot Blog থেকেই Cricket-এর Live Score দেখুন…

ধন্যবাদ সবাইকে...

Level 0

আমি C/O D!pu...। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 14 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 27 টি টিউন ও 1032 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

It's simply me & that's all I need to be...


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

অনেক অনেক সুন্দর টিউন।
ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য,
তবে ইহা দ্বারা ”নদীর গতিপথ বদলে দিতে পারে,”
আসলেই কি তাই পারে যদি না পারে বাক্যটি সংশোধন হওয়ার যোগ্যতা রাখে।

    তথ্যগুলো যেখান থেকে সংগৃহীত, সেখানে এরকমই উল্লেখ করা ছিলো…
    আমি খুঁজে দেখবো এবং পরিবর্তিত তথ্য পেলে আমি অবশ্যই বাক্যটি সংশোধন করবো…
    আপনার বাংলাদেশে ছুটি কাটানো কেমন হলো?…

    Level 0

    আসলেই পারে।

nice information.thanks dear

অনেক দিনের কল্পনা………………
যখন বাস্তবে, টিউন আকারে, ডিনামাইটের মতই বিষ্ফরিত হয়ে জনসমক্ষে প্রকাশিত হয় তখন ………………………….
তখন একজন টিউনারও আলফ্রেড নোবেল এর মতো মহান হয়ে যায়……………..আমাদের কাছে……………………………
আন্তরিকতার সহিত,কোলকাতা………………….

মারাত্তক টিউন, অনেকদিন ধরেই এসব জিনিস খুজছিলাম। ধন্যবাদ।

সাজিয়ে ছবি সহ দারুন একটি টপিক করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে ।

চমৎকারভাবে উপস্থাপন করেছেন … ধন্যবাদ

খুব সাজানোভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। 😀
এমন টিউন আরও চাই।

অনেক কিছু জানলাম থ্যাংকস

বেশ তথ্যবহুল টিউন।

জটিল টিউন অনেক সুন্দর হয়েছে…………

আমার সামগ্রিকভাবে টিউনটি অসাধারণ মনে হয়েছে শুধু শিরোনামটি মন:পুত হয়নি।যাই হোক আপনার কষ্ট সার্থক,সবার জন্যে অনেক কিছু শেখার মত দিয়ে গেলেন।ধন্যবাদ আর ভালো থাকবেন

    Actually একটা চমক দেওয়ার জন্যই শিরোনামটা এরকম দিয়েছি, Next-এ সচেতন থাকবো…

    আসলে আমি আপনার দিক থেকে চিন্তা করে দেখিনি,আপনার যুক্তিটাও আমার ভালো লেগেছে।সুতরাং চমকে দিন সবাইকে।