ভবিষ্যতের প্রযুক্তি-ন্যানোপ্রযুক্তি !

ভবিষ্যত কেমন হবে তা জানতে কার না মন চায়। আর ভবিশ্যতের একটি প্রযুক্তি হচ্ছে ন্যানোপ্রযুক্তি বা ন্যানোটেকনলজি বা সংক্ষেপে ন্যানোটেক বলা হয়। যদি ও অনেক আগ থেকেই ন্যানো প্রযক্তি নিয়ে ব্যাপক গবেশনা চালিয়ে আসছে ন্যানো বিজ্ঞানিতা। ন্যানো প্রযুক্তি হচ্ছে হচ্ছে পদার্থকে আণবিক পর্যায়ে পরিবর্তন ও নিয়ন্ত্রণ করবার বিদ্যা।  ও ন্যানো প্রযুক্তি আবার এপলের আইপড ন্যানো ও না। 😛

যদি ও আইপড ন্যানো অনেক কুল।

সাধারণত ন্যানোপ্রযুক্তি এমন সব কাঠামো নিয়ে কাজ করে যা অন্তত একটি মাত্রায় ১০০ ন্যানোমিটার থেকে ছোট। ন্যানোপ্রযুক্তি বহুমাত্রিক, এর সীমানা প্রচলিত সেমিকন্ডাকটর পদার্থবিদ্যা থেকে অত্যাধুনিক আণবিক স্বয়ং-সংশ্লেষণ প্রযুক্তি পর্যন্ত; আণবিক কাঠামোর নিয়ন্ত্রণ থেকে নতুন বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ন্যানোপদার্থের উদ্ভাবন পর্যন্ত বিস্ত্রৃত। আদুনিক সকল কম্পিউটার প্রসেসরে ন্যানোপ্রযুক্তি সুন্দর ভাবে ব্যবহার হয়ে আসছে। ন্যানো প্রযুক্তি হচ্ছে প্রযুক্তির বিবর্তনের আরেক ধাপ।

ন্যানোপ্রযুক্তির ব্যবহার চিকিৎসাবিজ্ঞান, ইলেকট্রনিক্স, শক্তি উৎপাদনসহ বহু ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে পারে। অপরদিকে পরিবেশের উপর এর সম্ভাব্য বিরূপ প্রভাব নিয়েও সংশয় রয়েছে। তারপরও পৃথিবীর বহু দেশে ন্যানোপ্রযুক্তি নিয়ে ব্যাপক গবেষণা চলছে।

ন্যানো একটি মাপার একক। এক মিটারের ১০০ কোটি ভাবগের এক ভাগকে এক ন্যানো মিটার বলা হয়। চিন্তা করুন কত ছোট এই ন্যানো মিটার?   আর এই ন্যানোমিটার স্কেলে যে সমস্ত টেকনোলজি গুলি সর্ম্পকিত সেগুলিকেই বলে ন্যানোপ্রযুক্তি।

মিটার এককটি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সাথে জড়িত। বাড়িঘর আসবাবপত্র সবই আমরা মাপি এই মিটার এককে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগ পর্যন্ত মিলিমটার স্কেলে যন্ত্রপাতির সূক্ষতা মাপা হত। মিলিমিটার এর ছোট কোন কিছু নিয়ে চিন্তা ভাবনার অবকাশ ছিলনা। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হবার পরে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে এক নতুন যুগের সূচনা হল। সেমিকণ্ডাকটর তার পথযাত্রা শুরু করল। আর এর শুরুটা হল, ট্রানজিস্টর আবিষ্কার দিয়ে। তখন মাইক্রোমিটার একক দিয়ে আমাদের চিন্তভাবনা শুরু হল। বলা যায় যাত্রা শুরু হল, মাইক্রোটেকনোলজির। আর মাইক্রো টেকনলজির পরবর্তি ধাপ হল ন্যানো টেকনলোজি। আমরা এখন যা কিছু ব্যবহার করি তা সব কিছুই হচ্ছে মাইক্রো টেকনলজির মধ্যে। এই ম্যাইক্রো ট্যাকনলজি যদি আমাদের জীবন যাপন কে এত পরিবর্তন করে দেয় তাহলে ন্যানোটেকনোলোজি কেমন পরিবর্তন করবে তা একটু চিন্তা করলেই বুঝা যায়। তখন আর আমাদের কোন আসবাব পত্র এত বড় হবে না। সব ছোট ছোট হবে। সব কিছু হালকা হয়ে যাবে।

আমরা বিশাল এক কম্পিউটারকে ভাঁঝ করে পকেটে পুরে রাখতে পারব। প্রয়জনে আবার পকেট থেকে বের করে ভাঁজ খুলে কাজ করতে পারবো। একটু কল্পনা করে দেখুন কেমন হবে তখন।

না না, আপনি হতাশ হবেন না। চিন্তা করবেন না যে আমি ব্যাবহার করা দূরে থাক দেখে যেতে ও পারবোনা। অলরেডি একটা মনিটর বের হয়েছে যা ভাঁজ করে রাখা যায়। আর তা ন্যানো প্রযুক্তি ব্যবহার করেই তৈরি করা হয়েছে।

যা কিছুটা নিচের ছবি দুটির মতঃ

যা মুচড়ে ব্যাগে রাখা যাবে। আর ব্যবহার করা যাবে টিভি হিসেবে। So be cool like me....... 🙂 Dreaming Dreaming and Dreaming ......

মাইক্রো টেকনলজির চরম পর্যায়ে পৌছানোর পরে ন্যানো টেকনোলজি এগুতে লাগলো প্রচন্ড গতিতে। নানা জিনিসপত্র, যার মধ্যে টেলিভিশন, রেডিও, ফ্রিজ ইত্যাদি ইত্যাদি। আর তা কিভাবে আরো ছোট করা যায় তা নিয়েই প্রচন্ত যুদ্ধ শুরু হয়ে গেল। কোন কম্পানি কত ছোট আকারের এই সমস্ত ভোগ্য জিনিস আমাদের কাছে পৌঁছাতে পারবে, তার প্রতিযোগীতা শুরু হল। আর এই সমস্ত ব্যাপারটা সম্ভব হল, সেমিকণ্ডাকটর সংক্রান্ত প্রযুক্তির কল্যাণে। প্রথম দিকের রেডিও কিংবা টিভির আকার দেখলে আমাদের এখন হাসি পাবে। এত বড় বড় জিনিস মানুষ ব্যাবহার করত কিভাবে? সেই প্রশ্নটি হয়তো এসে দাড়াবে। কিন্তু এখন বাজারে দেয়ালে ঝুলাবার জন্য ক্যালেন্ডারের মত পাতলা টিভি এসেছে। সামনে হয়তো আরো ছোট আসবে।

১৯৮০ সনে IBM এর গবেষকরা প্রথম আবিষ্কার করেন STM(Scanning Tunneling Microscope) এই যন্ত্রটি দিয়ে অণুর গঠন পর্য়ন্ত দেখা সম্ভব।

Scanning Tunneling Microscope

এই যন্ত্রটির আবিষ্কারই ন্যানোপ্রযুক্তিকে বাস্তবে রূপ দিতে সক্ষম হয়েছে। কিভাবে কাজ করে এই STM। এই যন্ত্রে খুব সূক্ষ পিনের মত সুচাল টিপ আছে এবং তা যখন কোন পরিবাহী বস্তুর খুব কাছে নিয়ে যাওয়া হয়, তখন তা থেকে টানেলিং নামে খুব অল্প পরিমাণে বিদ্যুৎ পরিবাহিত হয়। এবং এই বিদ্যুৎ এর পরিমাণ দিয়েই সেই বস্তুটির বাহিরের স্তরের অণুর চিত্র তৈরি করা হয়।

STM এর কাজ করার প্রক্রিয়া

তবে এই STM এর ক্ষেত্রে যা দেখতে চাইবো তাকে অবশ্যই বিদ্যুৎ পরিবাহী হতে হবে। কিন্তু বিদ্যুৎ অপরিবাহীর অণুর গঠন কিভাবে দেখা যাবে? না মানুষ বসে থাকেনি। অসম্ভবকে সম্ভব করেই মানুষ যেভাবে এতদূর এসেছে, তেমনি ভাবে এই অসম্ভবকে সম্ভব করা গেল AFM দিয়ে। STM এর ক্ষেত্রে টানেলিং বিদ্যুৎ দিয়ে কাজ করা হয় এবং AFM দিয়ে সুক্ষ্ম পিন দিয়ে অণুর গঠন দেখা সম্ভব।

একটি ছোট বস্তুকে দেখা যায় অনেক বড় করে। অনেক বড়।

ছোটখাট একটা পিঁপড়াকে মনে হবে একটা ডাউনোসর। তা আবার টাইনোসর ও হতে পারে।

এই ন্যানো টেকনলজি ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে এমন এক রোবট যা মানুষের শরিরের ভিতরে ঢুকে ছোট ছোট অঙ্গ এর অপারেশন করতে পারবে।

অবশেষে আমি বলতে চাই, We are Dreaming, Our Dream will true once day......

Level 0

আমি জাকির হোসাইন। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 13 বছর 11 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 224 টি টিউন ও 1487 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 5 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

পৃথিবীতে অল্পকয়েক দিনের জন্য অনেকেই আসে, হেঁটে খেলে চলে যায়। এর মধ্যে অল্প কয়েক জনই পায়ের চাপ রেখে যায়।ওদের একজন হতে ইচ্ছে করে। প্রযুক্তির আরেকটি সেরা ব্লগ টেকটুইটস। আপনাদের স্বাগতম, যেখানে প্রতিটি বন্ধুর অংশ গ্রহনে গড়ে উঠেছে একটি পরিবার। আপনাদের পছন্দ হবে আশা করি। ফেসবুকে আমি - ?জাকির!


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

Level 0

ধন্যবাদ , শেয়ার করার জন্য ।
আমার এক পরিচিত জনের Tablet pc আছে তাতে লেখা আছে 3G Network support করে । উনি জানতে চেয়েছেন 3G Modem ব্যবহার করে আমরা এখন যে Sim (যেমন,Grameen,Banglalink,Robi) ব্যবহার করি তা দিয়ে Internet ব্যবহার করা যাবে কি না?
যদি কেউ জানেন অনুহগ্রহ করে জানাবেন।

Level 0

Darun hoise vaia. Prio te raklam. R bijoy dibosher onek onek shuvessa 🙂

তথ্যবহুল টিউন।

আফসোস, পিকোটেকনলজি আর ফেমটোটেকনলজি দেখে যেতে পারব না 😛

Level 0

onek valo laglo jante pere

ভালোই হইছে।