ইন্টারন্যশনাল লিনিয়ার কোলাইডার-২! লার্জ হ্যাড্রন কোলাইডার কিভাবে কাজ করবে?-২

এতশত সংঘর্ষের ফলাফলটা কি? আমাকে একজন জিজ্ঞেস করলো! আমি কিছু বলার আগেই আমার সাথে থাকা একজন বললো,"কিছুই না, কিছু পুলিশের পকেট ভারী, হাসপাতালে দৌড়াদৌড়ী, কিছু সত্য মিথ্যা কেস, টাকার ছড়াছড়ি, তারপর যে লাউ সে কদু!"

আসলে পদার্থবিজ্ঞানের শাখা প্রশাখায় এরকম করাপশন মানে সবকিছু ধ্বংসের নামান্তর!
তাই আমরা কাজে কথায় ফিরে আসি।

(আগের পোস্টের পর)

১ম পর্ব: ইন্টারন্যাশনাল লিনিয়ার কোলাইডার বা আইএলসি -১!
২য় পর্ব: ইন্টারন্যশনাল লিনিয়ার কোলাইডার-২! লার্জ হ্যাড্রন কোলাইডার কিভাবে কাজ করবে?-১

পদার্থবিজ্ঞানীদের মতে এসব সংঘর্ষের ফলাফল স্বরূপ কিছু ক্ষণস্হায়ী কণার উদ্ভব যেগুলো পরে কোয়ার্ক আর গ্লুয়োনের সমন্বয়ে প্রোটনের রূপ নেবে।এর মধ্যে সবচেয়ে বড় ধ্বংসযজ্ঞে যেটা হবে সেটা হলো 2 TeV চার্জসম্পন্ন প্যারেন্ট প্রোটন (প্রোটন- এ্যান্টি প্রোটন)মুক্ত হবে যেটা টেভাট্রন কোলাইডার থেকে নিদেনপক্ষে 5 গুন বেশী ক্ষমতাসম্পন্ন!

ডিটেক্টরসমূহ-বিশাল বিশাল সলিনয়েডের দৈত্য আর কিছু সমস্যা

এতসব পরীক্ষাকে পর্যবেক্ষনের জন্য 4টা দৈত্যাকৃতির ডিটেকটরের সাহায্য নেয়া হবে। সবচেয়ে বড় ডিটেকটরটি প্যারিসে অবস্হিত নটরডেম ক্যাথেড্রালের অর্ধেক হবে এবং এতে ব্যাবহ্রত লোহার ওজন আইফেল টাওয়ারের থেকে একটু বেশী হবে এবং এর কাজ হলো কেন্দ্রে সংঘর্ষের কারনে ছিটকে বেরিয়ে পড়া কনাগুলোক অনুসরন করা আর মাপা।কিন্তু সমস্যাটা হলো অন্য জায়গায়। এই ডিটেক্টরে বেহিসেবী ছিটকে যাওয়া কণাগুলোর পরিসংখ্যান এমনভাবে নেয়া হবে যে 50 মাইক্রন দূরত্বের কণাসমূহের পরিসংখ্যান রাখতেও সক্ষম।
এখানে প্রধান সমস্যাটা হচ্ছে হিউজ পরিমানে ডাটা কালেকশন। একটা পরিসংখ্যান দেয়া যাক, সবচেয়ে বড় দুটো ডিটেকটরের প্রত্যেকটার সাথে 1000 লক্ষ ডাটা স্ট্রিমিং চ্যানেল সংযুক্ত যেগুলো প্রতিসেকেন্ডে 1 লক্ষ সিডি লাগবে। তাহলে ছয় মাস পর দেখা যাবে যে সিডির সারিগুলো দিয়ে আমাদের আকাশে দেখা সুন্দরী চাদের পৃষ্ঠ ভরে ফেলা যাবে। তাই এরকম পাগলামী পরিমান ডাটা সংরক্ষন বা রেকর্ড না করে যেটা করা হয়েছে, প্রতিটা পরীক্ষার জন্য ডেভেলপ করা হয়েছে ট্রিগারিং এবং ডাটা এ্যাকুইজিশন সিস্টেম যেগুলো স্প্যাম ফিল্টারের মতো কাজ করবে যার ফলে প্রতি সেকেন্ডে ঘটে যাওয়া 100টা মূল সাংঘর্ষিক ঘটনার বিশেষ মূহুর্ত যেগুলো মনে হবে আসলেই দরকারি সেগুলোকে রেখে বাকি সবগুলোকে ডিসকার্ড করে ফেলবে এবং সংরক্ষন করা হবে LHC এর সেন্ট্রাল কম্পিউটিং সিস্টেমে যেটা সার্নে অবস্হিত। এটা মূলত আর্কাইভ এবং পরে এর এ্যানালাইসিসের জন্য ব্যাবহ্রত হবে।

CERN এর কম্পিউটার সিস্টেম

সার্নে অবস্হিত সেন্টারে কয়েক হাজারের মতো কম্পিউটার আছে যেগুলো এসব 'র' ডাটাকে ফিল্টার করে আরো কম্প্যাক্ট করা হবে স্হান সংকুলানের জন্য, তারপর চিড়ুনি দিয়ে ছেচে নির্দিস্ট ফর্মেটে রাখা হবে পদার্থবিদদের জন্য। এসব এ্যানালাইসিস গুলো একটা সমন্বিত গ্রীড নেটওয়ার্কে রাখা হবে যেটার এক্সেস করতে পারবে তিন মহাদেশের বড় বড় নামজাদা ভার্সিটিসমূহ, গবেষনা প্রতিস্ঠান- যার মধ্যে দুঃখের বিষয় বাংলাদেশের কোনো ভার্সিটি নেই। তবে এজন্য আলাদা ডেডিকেটেড অপটিক্যাল লাইন টানা হয়েছে সার্নের থেকে।
গত নভেম্বরের দিকে এই কোলাইডারের রিং এর মধ্যে থাকা পার্শ্ববর্তী ম্যাগনেট গুলোতে কানেকশন দেয়া হয়ে গেছে। ডিসেম্বর মাঝামাঝি সময়ে আটটা সেক্টরের একটাকে সাইরোগেনিচ টেমপেরাচরে শীতলিকরন করা হয়েছে (এটা মূলত লিকুইড নাইট্রোজেন বা হাইড্রোজেন দিয়ে বিশেষ প্রক্রিয়া শীতলিকরন যা -180 সেলসিয়াস বা -190 সেলসিয়াসের এর নীচে ঠান্ডা করতে পারে) এবং তার সাথে সাথে দ্বিতীয়টিরও শীতলিকরন শুরু করা হয়েছে। একটা সেক্টরকে পুরোপুরি ঠান্ডা করে এর পাওয়ার কানেকশন সম্পন্ন করে চালু করা হয়েছে 2007 এর শেষের দিকে আর এর পর একে আবারো রুমের আভ্যন্তরীন তাপামাত্রায় আনা হয়েছে।সেক্টরের টেস্ট সম্পন্ন হলে,প্রথমে আলাদাভাবে পরে সমন্বিত ভাবে একে পরীক্ষার জন্য তৈরী করা হবে এবং তারপর একটা প্রোটনের বীম প্রথমে দুইটা বীম পাইপের একটাতে পতিত করানো হবে যার মাধ্যমে উহা মেশিনের 27 কিলোমিটার পথ পরিভ্রমন করবে!
ছোট ছোট এ্যাক্সিলাটরগুলো অলরেডী চেক করা হয়ে গেছে সেই হিসেবে সে গুলো মূলত LHC এর মেইন রিং এ চালানো হবে তবে এক্ষেত্রে প্রোটনগুলোর চার্জ ছিলো 0.45TeV. প্রথমে বিজ্ঞানীরা LHC এর হার্ডওয়্যারের দিকে লক্ষ্য রেখে অল্প ঘনত্বের বীম নিয়ে কাজ করবে। শুধুমাত্র যখন বিজ্ঞানীরা বুঝতে পারবে এই পাইলট প্রজেক্টের কাজটা সফল হয়েছে কোনো দুর্ঘটনা ছাড়া তারপরই কেবলমাত্র বীমের তীব্রতা বাড়ানো হবে। পরে যেটা করা হবে এক গুচ্ছ বীমকে তখন 7 TeV চার্জায়িত করে ওটা মেশিনে সার্কুলেট করানো হবে।

চারটা এক্সপেরিমেন্ট জোন আর ডাটা স্টোরেজ সিস্টেম

যখন আস্তে আস্তে এভাবে কোলাইডারটির কমিশনিং করা হবে তখন বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হবে এবং এগুলোকে সমাধান করা হবে। এসব সমাধান গুলো বের করে আনাই তখন হবে বিজ্ঞানীদের জন্য একটা বড় চ্যালেন্জ্ঞ!
চারটা এক্সপেরিমেন্ট- CMS (Compact Muon Solenoid), LHCb, ATLAS (A Toroidal LHC Aparatus), ALICE (A Large Ion Collider Experiment) এর প্রত্যেকটাই সম্পন্ন করতে অনেক দীর্ঘ প্রসেস ওয়েট করছে এবং এটা শেষ করতে হবে এই বীম কমিশনিং এর আগেই।গত নভেম্বরের মধ্যের দিকে ভার্টেক্স লোকেটর বসানো হয়েছে LHCb এর ভিতরে। ইতিমধ্যে কিছু আন্ডার গ্রাজুয়শন আর পোস্ট ডক্টরটের ছাত্ররা এখানে কাজ করতে গিয়ে কিছু ডাটা সংগ্রহ করেছে যেটা মূলত এসব ডিটেক্টর সে পরিমান কসমিক রে জমা পড়েছে তাদের উপাত্ত আর মিউনের পরিমান নিয়ে। এটাও অবশ্য এক ধরনের টেস্ট হয়ে গেছে এসব ডিটেক্টর ভবিষ্যত কত স্পর্শকাতর ভাবে কাজ করবে!
যখন সব কিছু কাজ করা শুরু করবে আর ডিটেক্টরগুলো সংগৃহিত তথ্য গুলো সার্নে পাঠানো শুরু করবে তখন এই প্রাথমিক ডাটার পরিমান অবিশ্বাস্য পরিমান বড়। এত গুলো ডাটা এত অল্প সময়ে সংগৃহিত করে ওগুলো রিড-রাইটের জন্য প্রচুর পরিমান, ক্যাশ মেমোরি, ক্লক স্পিড দরকার আর দরকার স্হান সংকুলানের জন্য জেটাবাইটের জায়গা! ডিজাইনের উজ্জলতায় 20টা ইভেন্ট ঘটিত হবে মোটামুটি প্রতিটা ক্রসিংএ একটা সুইসাইজের প্রোটনের দ্বারাই। 25 ন্যানোসেকেন্ডে সময় লাগবে পরবর্তি দুইটা অতিক্রমনের এর জন্য। একেকটা ক্রসিং এ সংঘটিত সংঘর্ষে প্রচুর পরিমান কণা ছড়িয়ে পড়বে ডিটেকটরের মধ্যে এবং এর স্তরের বাইরে যখন পরবর্তি অতিক্রমন সংঘটনের সময় হয়ে আসবে। লক্ষ লক্ষ পরিমান ডাটা স্ট্রিমিং চ্যানেল যেগুলো এসব ডিটেক্টরের সাথে সংযুক্ত থাকবে সেগুলো প্রতি ইভেন্টে এক মেগাবাইটের সমান ডাটা তৈরী করবে যেটা হিসেব করলে দেখা যাবে প্রতি সেকেন্ডে এক পেটাবাইট বা এক বিলিয়ন মেগাবাইট প্রতি দু সেকেন্ডে! আসলেই ভয়ন্কর ব্যাপার!
আমি আগেই বলেছি এই ভয়াবহ পরিস্হিতি নিয়ন্ত্রনের জন্য ট্রিগার সিস্টেম থাকবে যেটা এই পরিস্হিতিকে নিয়ন্ত্রনে আনবে। প্রথম লেভেলটা হবে ডাটা গুলো রিসিভ করবে এবং শুধুমাত্র ডিটেক্টরের সাবসেট থেকে প্রাপ্ত তথ্য গুলো পর্যবেক্ষন করে সেসব তথ্যগুলোকেই গ্রহন যেটাতে একটা এ্যানরজেটিক মিউওন বীমের স্হানাংকের সাথে নির্দিস্টে কোণে চলন্ত অবস্হায় পাওয়া যাবে। এই লেভেল 1 ট্রিগারিং পরিচালনা করা হবে 100টা ডেডিকেটেড কম্পিউটারের মাধ্যমে যার লজিক গুলো হার্ডওয়ারেই এমবেড করা থাকবে। তারা 1 লক্ষ ডাটার গুচ্ছ প্রতিসেকেন্ডে বেশ সতর্ক ভাবে নির্বাচন করবে পরবর্তী উচ্চতর ট্রিগারিং এর জন্য!
উচ্চতর লেভেলের ট্রিগারিং এর ফলে অন্যান্য ডিটেক্টরের লক্ষাধিক ডাটা চ্যানেল হতে এভাবে ডাটা রিসিভ করবে। এর সফটওয়্যার কয়েখাজার কম্পউটারে চলবে এবং গড়পড়তায় 10 মাইক্রোসেকেন্ডে প্রত্যেক গুচ্ছের ডাটাগুলোকে লেভেল 1 ট্রিগারিং দ্বারা এ্যাপ্রুভ করবার পরই একে প্রয়োজনীয় সময় দেয়া হবে একটা ইভেন্টের রিকনস্ট্রাক্ট করার ব্যাপারটা! উচ্চতর ট্রিগার লেভেল প্রতি সেকেন্ডে 100 এর মতো ইভেন্ট প্রতি সেকেন্ডে পাঠিয়ে দেয় LHC এর গ্লোবাল কম্পিউটার নেটওয়ার্কের হাব এ!
LHC এর গ্রিড সিস্টেম টাইয়ার দ্বারা সাজানো। টায়ার 0 CERN নিজেই এবং এটা কয়েক হাজার ইন্ডাস্ট্রিয়াল কম্পিউটার প্রোসেসর দ্বারা তৈরী কৃত যেগুলো দেখতে বাসার ডেস্কটপ পিসির মতো আমার কতগুলোর পুরো CPU casing সিস্টেম পিজাবক্সের মতো শেলফে সজ্জিত একটার পর একটা ইন্টারনেটওয়ার্কিং সমৃদ্ধ।
ডাটা প্রথমে টায়ার 0 তে পাঠানো হবে LHC এর চারটা পরীক্ষার ডাটা এ্যাকুইজিশন সিস্টেমের মাধ্যমে যেগুলো সংরক্ষিত হবে ম্যাগনেটিক টেপে। আসলে ম্যাগনেটিক টেপ যতই ওল্ড মডেল হোক না এগুলো এখনো এগুলোর চেয়ে অনেক রিলায়েবল এবং কস্ট ইফেক্টিভ।টায়ার 0 এই ডাটা গুলোকে 12 টা টায়ার 1 সেন্টারে পাঠিয়ে দেবে যেগুলো CERN এ অবস্হিত এবং 11 নম্বরটা হলো পৃথিবীর তাবৎ নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়, গবেষনা প্রতিষ্ঠান যেমন ফার্মিল্যাব এবং আমেরিকার বুকহ্যভেন ন্যাশনাল ল্যাব, ইউরোপ, এশিয়া, কানাডা। এইভাবে এসব আনপ্রসেসড ডাটা গুলো দুজায়গায় সংরক্ষিত হবে একটা CERN এ আরেকটা হলে পুরো বাকি দুনিয়ায়!প্রত্যেকটা টায়ার 1 নিজেই কাজ করবে হোস্ট হিসেবে যেখানে সংরক্ষিত থাকবে পদার্থবিজ্ঞানীদের জন্য বিশেষ ভাবে স্ট্রাকচারড ডাটা।
পুরো LHC কম্পিউটার গ্রিডের নিজস্ব টায়ার 2 সেন্টার আছে যেগুলো মূলত বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় আর রিসার্চ ইনস্টিউটের ক্ষুদ্রতর কম্পিউটার সিস্টেম।এই সেন্টারের কম্পিউটারগুলো গ্রিডে প্রসেসিং পাওয়ার বন্টন করে দেয় প্রয়োজন মতো!

একটু পিছনের হতাশার কথা বলি!

গত বছরের মার্চে এক সংঘর্ষনমুখী এক্সাইটেড প্রোটন বীমের সামনে একটা ম্যাগনেট ধরা হলো (এর নাম ছিলো কোয়াড্রিপল ম্যাগনেট-এটাকে কোনো পার্টিক্যাল বিমকে ফোকস করার জন্য তৈরী হয় এবং এটা ধরেন একজোড়া ম্যাগনেটের একই পোলকে মুখোমুখি আরেকজোড় পোল এদের অভিলম্ব বরাবর বিপরীত একই মেরুকে মুখোমুখি করে রাখা, এবং এর ফোর্সে সূত্র হচ্ছে লরেন্সের ফোর্স:

F= q (E+ v X B)

)। ফলাফল স্বরুপ দেখা গেলো প্রথমে ঐ ম্যাগনেটের কয়েল বা সলিনয়েড গুলো তাদের সুপার কন্ডাক্টিভিটি হারিয়ে ফেললো (এই অঘটনকে বলে কোয়েন্চিং)এবং তারপর একটা ভয়াবহ বিফলতা দেখা দিলো মানে ঐ ম্যাগনেটের কিছু অংশের সাপোর্ট ভেঙ্গে গেলো ঐ পরিমান বলের অভিমুখে থাকার কারনে এবং একটা উচ্চ বিস্ফোরন ঘটে আর হিলিয়াম গ্যাসে চারিদিক ভরে যায়।
LHC তে এরকম 24 টা কোয়াড্রিপল ম্যাগনেট, এর চারটা ইন্টারেকশন পয়েন্টে অন্তত: একটা ট্রিপলেট বিদ্যমান (1,1,1)। প্রথমে বিজ্ঞানীরা এই সমস্যার কারনে এসব ম্যাগনেট সরিয়ে ফেলতে চেয়েছিলো, কিন্তু একবার সেট করার পর ওগুলো সরিয়ে ফেলা নতুন করে ডিজাইন করা মানে এর উদ্বোধনের সিডিউল আরো কয়েক সপ্তাহ পিছিয়ে দেয়া। তাই ফার্মিল্যাব আর CERN বিজ্ঞানীরা এমন ভাবে এটাকে ডিজাইন করলো যাতে পরীক্ষার সময় এসব ম্যাগনেটগুলো অক্ষত থাকে এবং পরে যেসব ট্রিপলেট ক্ষতিগ্রস্হ হয়েছিলো সেগুলো সরিয়ে ফেলাও হয়েছে। তারপরও অতিরিক্ত সতর্কতা আর আরো কিছু মাইনর সমস্যার জন্য কয়েকদফা পিছিয়ে নেয়া হয় এর উদ্বোধনের দিন। এর ফলে অবশ্য উদ্দীপ্ত শ্রমিকরা বেশ খুশীই কারন আরো তারা সময় পাচ্ছে এটা নিয়ে কাজ করার।
আরেকটা সমস্যা গত সেপ্টেম্বরে সামনে আসে সেটা হলো বিজ্ঞানীরা হঠাৎ আবিস্কার করে প্লাগইন মডিউল হিসেবে পরিচিত পিছলে থাকা কপারের পাতগুলো মুচরে যায় যখন এ্যাক্সিলাটর সাইরোজেনিক তাপমাত্রায় শীতল করা হয় অপারশনের জন্য। পরে তৎক্ষনাত রুমের বিদ্যমান তাপমাত্রায় এগুলোকে গরম করে ঠিক করা হয়। প্রথমে এই সমস্যাটা একবারেই অজানা ছিলো। এই পুরো সেক্টরটায় মোট 366 টা প্লাগইন মডিউল বিদ্যমান এবং পরে এগুলো খুলতে গিয়ে সমস্যটা কোথায় খুজতে যাওয়া হলো তখন দেখা এটা আসলে বিশাল ওয়ার্কলোড। পরে পিংপং সাইজের বল ডিজাইন করা হলো যার সাথে লাগানো ছিলো 40 মেগাহার্টজে ট্রান্সমিট করতে পারে এমন ট্রান্সমিটার(অবশ্য এই ফ্রিকোয়েন্সিতেই ফোটন বীম গুচ্ছ গুলো পরিভ্রমন করবে)। এসব বলকে ঐসব বীম পাইপের ভিতর ঢুকানো হলো, এগুলো এতই ছোট ছিলো যে এগুলো পাইপের ভিতর খুব সহজেই চলতে পারতো এবং যেখানে বিকৃতি ঘটেছিলো সেখানেই ওগুলো আটকে যেতো।এই বলসদৃশ্য ট্রান্সমিটার গুলো 50 মিটার অন্তর অন্তর বসানো হয়েছিলো। এর ফলে দেখা গেলো মাত্র ছয়টা সেক্টরে এই সমস্যা দেখা গিয়েছিলো যেখানে ইনস্যুলেশন অন্যান্য বিষয়গুলো ঠিক করার জন্য একটা নির্দিস্ট সংখ্যক টিম ঠিক করে সমাধান করা হয়েছিলো।

যখন এ্যাক্সিলাটরের সর্বশেষ কানেকশন গুলো দেয়া হচ্ছিলো ম্যাগনেটগুলোর মধ্যে নভেম্বরের শেষের দিকে, তখন সব কিছু ঠান্ডা করার প্রক্রিয়া শুরু করে প্রোজেক্ট লিডার লিন ইভানস বলেছিলো," এরকম জটিলতা সম্পন্ন মেশিনের জন্য, সবকিছুই খুব মসৃণভাবে চলছে এবং আমরা তাকিয়ে আছি পরবর্তি গ্রীস্মে যখন আমরা ফিজিক্স দেখবো এই LHCতে।"

Level 0

আমি অশ্রুগুলো রিনকে দেয়া। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 15 বছর 11 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 18 টি টিউন ও 104 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

ছেলেটি পথে নেমেছিলো একদিন নীল মায়ার হাতছানিতে। নিঃসঙ্গতায় হেটে যেতে আবিস্কার করে নিঃশব্দ চাদ তার একান্ত সঙ্গী। এখন সে হাতড়ে বেড়ায় পুরোনো সুখস্মৃতি, ঘোলা চোখে খুজে ফেরে একটি হাসি মুখ!


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

আসলে আমার একটু বুঝতে সম্যসা হচ্ছে কারণ আমি সাইন্সের না। তবে এটা যে একটা জটিল বিষয় তা আমি ঠিকই আচ করছি ।

আপনার লেখা পড়লে আমার মাথা ঘুরায়।

@প্রযুক্তিবিদ, আপনার কমেন্টটা পড়ে একটা জোকের কথা মনে পরে গেলো। একজন বড় বিজ্ঞানলেখিয়ে জ্ঞানী ব্যাক্তি এক পার্টিতে গেলেন। ওখানে পৌছানোমাত্র ভক্তকুল আর অন্যান্য সবাই তাকে দেখার জন্য এবং সাধুবাদ জানাবার জন্য এগিয়ে আসলেন। তাকে বরণ করে নেবার পর সে একটু নিজেকে সরিয়ে নিয়ে একটু ফাকা জায়গায় দাড়ালেন। হঠাৎ এক সমালোচক এসে তার সাথে হাত মেলালেন। সমালোচক বলছেন,” যা লেখেন না, দাদা আপনে, মনে হয় ও হাত দুটো বাধিয়ে রাখি। জীবনে অনেক লেখা পড়েছি, সমালোচনা করেছি, কিন্তু সত্যি বলছি আপনের লেখা পড়লে আমার মাথা ঘুড়ে, পড়ার পর মনে হলো আমি কি কিছু পড়েছি, পড়লেও কি পড়েছি, কি বুঝেছি সেটাও বুঝতে পারি না!”
তখন ঐ লেখক বিড়বিড় করে বললেন,” কি বলে সব, তাহলে যেসব ওয়েবপেজ, বই থেকে কপি করে লেখি ওগুলো কি এতই উল্টাপাল্টা ছিলো, নাকি ভুল ছিলো? ঠিক বুঝতে পারছি না।”

আপনি দাদা সেরকম কিছু বললেন কি?তবে সত্যি করে বলি এসব লেখার অনেক জায়গায় নিজেই ধরে নিয়েছই এটা করলে ওটা হবে, সবকিছুর ব্যাখ্যা আমার কাছেও নেই, তবে চেস্টা করি নিজে থেকে কিছু ম্যাথমেটিক্যাল মডেল সাজাতে তবে ভয় হয় ওগুলো ভুল কিনা!

ধন্যবাদ সবাইকে কমেন্টের জন্য!

জ্ঞানী মানুষের জ্ঞানী টিউন

ব্যপক তথ্য সমৃদ্ব টিউন।