কঠোর পরিশ্রম ছাড়া যে ৩ টি প্রয়োজনীয় কাজ আপনার সফলতার জন্য দরকার। কি বলেন কঠোর পরিশ্রম ছাড়া কি কিছু পাওয়া সম্ভব!!

হ্যালো টেকটিউনস কমিউনিটি, কেমন আছেন সবাই?

হার্ড ওয়ার্ক ছাড়া কিছু সম্ভব না, এটা মনে হয় পৃথিবীতে একজন মানুষের শোনা সব থেকে বেশি বারের একটি উপদেশবাণী। আসলেও তাই এই হার্ড ওয়ার্ক শব্দটা হার্ড হলেও এটি ছাড়া কিছু হয় না বলে আমাদের বিশ্বাস। কিন্তু এমন কিছু কি নেই যেটা হার্ড ওয়ার্ক ছাড়া করা পসিবল। সবাই এক বাক্যে বলবে, না!!!

কিন্তু আমার এই ছোট জীবনে অনেক সফল মানুষদের সাথে উঠা-বসা করছি, অনেক সফল মানুষের বই পড়ছি। তাদের কাছ থেকে যে জিনিসটি শিখছি তাতে আমি হার্ড ওয়ার্কের সাথে সাথে আরও কিছু জিনিস পেয়েছি যা না থাকলে তার ঐ সফলতা নামক অলৌকিক বস্তুটা পাওয়া সম্ভব হতো না।

কি জানতে ইচ্ছা করে না কি সেই জিনিস যা হার্ড ওয়ার্ক করলেও তা না থাকলে আপনি সফল হবেন না। আমিও প্রথম প্রথম ভাবতাম হার্ড ওয়ার্ক সফলতার এক মাত্র চাবিকাঠি। কিন্তু এখন এই সত্য অনেক খানি মলিন। এখন বুঝে গেছি হার্ড ওয়ার্কের সাথে আরও অনেক কিছুর প্রয়োজন আছে। যা হয়তো আমাদের নিজেদের জীবনে সফলতা বস্তুটি ধরতে অনেক সহায়ক হবে।

আসুন আমরা কথা না বাড়িয়ে জানতে চেষ্টা করি, কি সেই জিনিস যা আমাদের সফলতার জন্য খুবই দরকার।

হার্ড ওয়ার্ক ছাড়াও যে জিনিস আপনার সফলতার জন্য খুবই দরকারঃ

আপনাকে সফল হতে হলে কঠোর পরিশ্রমের সাথে সাথে এই জিনিসগুলো অবশ্যই আয়ত্ত করতে হবে। না হলে আপনি কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবেন না। আসুন জানতে চেষ্টা করি,

১) উদ্দেশ্য (Purpose)

আচ্ছা একটা জিনিস কল্পনা করুন তো, আপনি নির্দিষ্ট একটা জায়গা থেকে হাঁটা শুরু করেছেন, কিন্তু আপনি জানেন না কোথায় যাবেন। আপনি এটি নিয়ে ভাবছেনও না কিছু, আপনি কোথায় পৌঁছাবেন? আপনি একটা সময় হাটতে হাটতে ক্লান্ত হবেন, অনেক পরিশ্রম হবে আপনার। কিন্তু দিন শেষে আপনি কি পাবেন? কিছু পাবেন বলে কি মনে করেন।

আমরা যারা ঠিক এরকমই কোন লক্ষ্য ছাড়া কাজ করে যাচ্ছি, দিন শেষে দুই মুঠো খাওয়া জোটে বৈকি? কিন্তু সারা জীবন এই হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রম করেই যেতে হয়। বিনিময় ঐ দুইবেলা দুই মুঠো ভাত।

কিন্তু আপনি যদি পরিকল্পনা করে উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করতেন, তাহলে দিন শেষে আপনার কাজের একটা হিসাব থাকতো। সেই কাজে আপনি কি পেলেন আর কি পেলেন না, তার হিসাব থাকতো চমৎকার। প্রতিদিন আপনি সফল হতেন তা না, তবে কেন সফল হননি তার একটা দারুণ বোঝা পড়া থাকতো আপনার কাছে।

সেহেতু আপনি যদি যতোই কঠোর পরিশ্রম করুন না কেন, যদি নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য ছাড়া সেটা না করেন তাহলে দিন শেষে খালি হাতে ফিরতে হবে।

অনেকে আবার বলবেন, আমার উদ্দেশ্য আছে, কিন্তু তাও তো কিছু পাচ্ছি না। তাহলে বলবো আপনাকেই খুজে বের করতে হবে এই উদ্দেশ্যের কোথায় আপনি দুর্বল আছেন। ঠিক এভাবে আপনার দুর্বল পয়েন্ট বের করতে থাকলে আপনি একদিন আপনার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবেন।

উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করার সব থেকে বেশি মজা হলো আপনাকে প্রথম প্রথম একটু বেশি পরিশ্রম করলেও দিনকে দিন আপনার কাজ কমতে থাকবে, কিন্তু বেনেফিট বেশিই হবে।

২) আত্ম পর্যালোচনা (Self-work)

আপনি যদি শুধু কাজ করেই যেতে থাকেন কিন্তু নিজেকে পিছনে ফিরে না দেখান তাহলে আপনার কাজের স্পিড বৃদ্ধি পাবে না। আপনি ছোট খাটো ভুল করেই যেতে থাকবেন। অর্থাৎ আপনি যদি প্রতিদিন কাজের ফাঁকে ২০-৩০ মিনিট আপনার কাজের হিসাব করেন, তাহলে হয়তো পরবর্তী দিন আপনি ১ ঘণ্টার কাজ এগিয়ে রাখতে পারবেন।

তার অর্থ হলো আপনি আত্ম-পর্যালোচনা করলে আপনার কর্ম শক্তি বাড়বে, আপনার কাজের ভেতর ভুলের সংখ্যা কমে যাবে। তাছাড়া আপনার কাজের ভেতর ভবিষ্যৎ দেখতে সুবিধা হবে। প্রত্যেক সফল মানুষ বার বার আত্ম-পর্যালোচনা করেছেন বলেই আরও এক ধাপ এগিয়ে গেছেন নিজের কাজের সাথে সাথে। নিখুঁত ভাবে কাজ করার এর বিকল্প কোন পথ নাই। যেটা আপনাকে কঠোর পরিশ্রমের হাত থেকে বাঁচাবে।

বেঁচে যাওয়া সময়ে আপনি নতুন নতুন উদ্ভাবনী আরও নতুন কাজে হাত রাখতে পারবেন। যা আপনার ভবিষ্যৎকে আরও একটু সহজ করবে।

৩) বিশ্বাস (Belief)

বিশ্বাস আমাদের কর্ম শক্তি বাড়ায়। বিশ্বাস অসম্ভব কেও সম্ভব করে তুলে। আপনি কঠোর পরিশ্রম করছেন, কিন্তু মনে বিশ্বাসের জায়গাটা কম, তাহলে হয়তো আপনি পিছিয়ে যেতেই থাকবেন। কারণ আপনি যে কাজটা করতে পারবেন সেই বিশ্বাসটাই যদি না রাখতে পারেন, তাহলে কিভাবে এগিয়ে যাবেন।

কারণ বিশ্বাস না করতে পারলে সে কাজ করে যাওয়ার চেয়ে আগে ভাগেই ছেড়ে দেওয়া ভালো। বিশ্বাস করতে পারলে আপনি যে কাজ ১ মাসে শেষ করতে পারতেন, বিশ্বাস করতে না পারলে সেই কাজ আপনি মাসের পর মাস করে গেলেও ভালো কোন ফল আনতে পারবেন না।

সেহতু সফলতার সব কিছুর মুলে  বিশ্বাস থেকে তারপর কিছু আসবে।

শেষ কথাঃ

আপনি একজন মানুষ, আর যা আপনি এই জগতে দেখেন সবই এই মানব জাতির তৈরি। সেহেতু আপনি ইচ্ছা করলে এই রকম জিনিস তৈরি করতে পারেন। শুধু আপনাকে সঠিক পথে এবং সঠিক উদ্দেশ্য নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। তবেই আপনি সফলতার আসল স্বাদ পাবেন।

সবশেষে স্টিভ জবসের একটা স্লোগান মনে করিয়ে দিবো (যেটা আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ কয়েকটি উক্তির একটা) সেটা হলো, থিংক ডিফ্রেন্ট (Think Different)। আর কিছুই হয়তো লাগবে না জীবনে বড় হতে, স্মরণীয় হতে। হাজার হাজার বছর বেঁচে থাকতে।

সবার সামনের পথ আরও সুন্দর হোক এই কামনায়।

ধন্যবাদ সবাইকে। 🙂

Level 2

আমি আইটি সরদার। Web Programmer, iCode বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 1 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 261 টি টিউন ও 1750 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 22 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

আমি ইমরান তপু সরদার (আইটি সরদার),পড়াশুনা করেছি কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি নিয়ে; পেশা কন্টেন্ট রাইটার এবং মার্কেটার। লেখালেখি করি নেশা থেকে ফেব্রুয়ারি ২০১৩ থেকে। লেখালেখির প্রতি শৈশব থেকেই কেন জানি অন্যরকম একটা মমতা কাজ করে। আর প্রযুক্তি সেটা তো একাডেমিকভাবেই রক্তে মিশিয়ে দিয়েছে। ফলস্বরুপ এখন আমার ধ্যান, জ্ঞান, নেশা সবকিছু...


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

তথ্যবহুল উপযোগী টিউন। সত্যিই! পরিশ্রম ব্যতিত কিছুই নাই, সকল সৌভাগ্যের চাবিকাঠি। শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

ভালো লাগলো।

আপনার লেখাটি আমার মত অনেক-কে উৎসাহিত করবে……। বর্তমানে আরেকটি যোগ্যতা অতি প্রয়োজনীয়… >> …..>>building communication<<…..

“think different”
sotti osadharon ukti. asolei hazar bosor bachte aita sara kono vabei somvob na,

Level 0

আমার মত অনেক-কে উৎসাহিত করবে…Thanks.

Level 0

thanks

খুব ভালো পোস্ট