বৃষ্টি নামানোর প্রকল্প এ দেখানো হল কি ভাবে পৃথিবীর তাপমাত্রা কমানো যাবে

 

পৃথিবীর তাপমাত্রা কমানো যাবে, গ্রীণ হাউজ গ্যাস নিয়ন্ত্রণ করা যাবে, দাবানল ও টনের্ডো সৃষ্টি বন্ধ করা যাবে

 

পানি যা এ পৃথিবীর সবচেয়ে অমূল্য সম্পদ। কারন পানির অপর নাম জীবন। আর এ উপাদানটি যে কত মহামূল্যবান তা পৃথিবীর প্রতিটি মানুষ অনুধাবন করতে শুরু করেছে। যতদিন যাচ্ছে ততই পানি মানুষের নাগালের বাহিরে চলে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে পানি নিয়ে বিভিন্ন দেশের মধ্যে বিভেদও শুরু হয়ে গেছে। আগামি কয়েক দশকের মধ্যে এ সমস্যা আরও ভয়াবহ রূপ ধারণ করবে। তাই অনেক বিশেষজ্ঞদের আশংকা তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধ পানির জন্য হবে। আর এ শতাব্দীতে বিশ্ব যুদ্ধ মানে পৃথিবীতে জীবন ধারণের অনুপযোগী করে তোলা। যদি এ সমস্যার সমাধান না করা হয় তাহলে যুদ্ধ হওয়াটা স্বাভাবিক। কারন এই শতাব্দির সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দারিয়েছে পানির সমস্যাটি। যা এক দিকে পৃথিবীর নিম্ন অঞ্চলের দেশ সমূহ সমুদ্রের পানির নিচে তলিয়ে যাচ্ছে আর অন্য দিকে বৃষ্টি ও খাবার পানির অভাবে প্রাণিকূলের জীবন ধারণ দিন দিন হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। বৃষ্টির সমস্যাটি ইতিমধ্যে পৃথিবীর বেশির ভাগ দেশে দেখা দিয়েছে। দক্ষিণ এশিয়া, চীন, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকায় এ সমস্যার প্রকট সবচেয়ে বেশি। আফ্রিকার কয়েকটি দেশে এ সমস্যা এতটাই ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে যে সেখানে খাবার পানি ও খরার জন্য লাখ লাখ মানুষ দেশ ছেড়ে পালাচ্ছে এবং অনেক মূল্যবান জীবন হারিয়ে যাচ্ছে। এ সমস্যার জন্য অর্থনৈতিক ভাবেও প্রতিবছর প্রতিটি দেশ বিশাল ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। কিন্তু সবচেয়ে বিস্ময়কর ব্যপার হল পৃথিবীতে তিন ভাগ পানি থাকা সত্বেও আমরা এ সমস্যায় ভুগছি। কারন সমুদ্রের পানি লবনাক্ত।

যাই হোক, মৌসুমী বায়ু প্রবাহের কারণে সমুদ্র থেকে প্রচুর পরিমান বাষ্প উপকূলের দিকে প্রবাহিত হওয়ার ফলে বৃষ্টিপাত সংঘটিত হয় আর যে মাস গুলুতে বৃষ্টি হয়না তার কারণ হল বাষ্প মিশ্রিত বায়ু ঐ মাস গুলোতে প্রবাহিত হয় না। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে যে মাস গুলোতে বৃষ্টি হওয়ার কথা সেই মাস গুলোতে নিয়ম মত এখন আর বৃষ্টি হয় না। কৃষি কাজ ও শিল্প ক্ষেত্রে পানি ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে এবং নদীর পানি কমে যাওয়ার ফলে ফাল্গুন মাসেই বৃষ্টির খুব প্রয়োজন দেখা দেয়। কিন্তু এখন বৈশাখ মাসেও প্রয়োজনীয় বৃষ্টিপাত হয় না। যতদিন যাচ্ছে ততই পানির সমস্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং ভূ-গর্বস্ত পানির স্তর প্রতি বছর নিচে নেমে যাচ্ছে। এই সমস্যা সমাধান করা সম্ভব একমাত্র কৃত্রিম উপায়ে বৃষ্টি ঘটিয়ে।

 

কৃত্রিম উপায়ে বৃষ্টি নামানোর জন্য যা করতে হবেঃ

 

আমরা জানি পানি ১০০ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ফুটতে শুরু করে। এই প্রক্রিয়াটিকে কাজে লাগিয়ে কৃত্রিম উপায়ে বৃষ্টি নামানো সম্ভব। তার জন্য যা করতে হবে তাহল সমুদ্রের কাছাকাছি এলাকায় কতগুলো পাত্র তৈরী করতে হবে। যা আকার আয়তনে প্রায় একটি স্টেডিয়ামের মত হবে। এই পাত্রের ফ্লোর ও দেয়াল এমনভাবে তৈরী করতে হবে যা  অধিক তাপমাত্রা সহনশীল হবে। তারপর পাত্রটিতে কয়েকটি পার্টিশন তৈরী করতে হবে। পার্টিশন গুলো তৈরী করা হবে খুবই উন্নত মানের খয়েল দিয়ে। যেন এতে বিদ্যুৎ সংযোগের কিছুক্ষন পরেই পার্টিশন গুলোর তাপমাত্রা ৩০০-৯০০ ডিগ্রী সেলসিয়াসে পৌছে যায় যেমন উন্নত মানের ইলেক্ট্রিক চুলা গুলোতে বিদ্যুৎ সংযোগের কিছুক্ষন পরেই তাপমাত্রা ২০০০ ডিগ্রী উপর পর্যন্ত নেওয়া যায়। তবে এক্ষেত্রে খয়েল থেকে যত বেশি তাপ উৎপন্ন করা যাবে পানি তত দ্রুত বাষ্প হবে। তারপর পাত্রটিতে সমুদ্রের লবনাক্ত পানি দ্বারা পূর্ন করে বৈদ্যুতিক সুইচ অন করতে হবে। সুইচ অন করার কিছুক্ষন পরেই ধাতব পদার্থের পার্টিশন গুলোর তাপমাত্রা ৩০০-৯০০ ডিগ্রীতে পৌছে যাবে। তখন পার্টিশন গুলো থেকে উৎপন্ন তাপ লবনাক্ত পানির তাপমাত্রা বাড়িয়ে দিবে। তখন খুব দ্রুত লবনাক্ত পানির তাপমাত্রা ১০০ ডিগ্রী সেলসিয়াস ছারিয়ে যাবে। এর ফলে পাত্রের মধে রাখা কোটি কোটি লিটার পানি বেশি তাপমাত্রার ফলে খুব অল্প সময়ের ভিতরেই বাষ্প হয়ে বায়ুমন্ডলে চলে যাবে। তারপর পাত্রটিতে অবশিষ্ট থাকবে শুধু লবণ। এই লবণকে সরিয়ে আবার বাষ্প করা যাবে। তাছাড়া লবাণাক্ত পানি অল্প তাপমাত্রায় বেশি বাষ্প হতে পারে। এই বাষ্প থেকে মেঘ সৃষ্টি হয়ে বৃষ্টি হবে। বৃষ্টি না হলেও কৃত্রিমভাবে বৃষ্টি নামানো যাবে যেমন চীন কয়েক বছর আগে মেঘের উপর রাসায়নিক পাউডার মিশিয়ে বৃষ্টি নামিয়ে ছিল। এভাবে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টন পানি বাষ্প করে বায়ুমন্ডলে ছাড়া যাবে।

বাংলাদেশ, ভারত ও চীন মিলে বায়ুমন্ডলে প্রতিদিন বাষ্প ছাড়লে আমরা আমাদের ইচ্ছামত বৃষ্টি ঘটাতে পারব। ফলে আমদের অঞ্চলগুলোতে পানির জন্য আর সমস্যা হবে না। তখন পানির জন্য কোন দেশকে নদীর উপর বাঁধ দেওয়ার প্রয়োজন হবে না। বাংলাদেশ, ভারত ও চীন মিলে পাত্র তৈরী করে বাষ্প ছাড়লে বৃষ্টি এমনিতেই হবে। আর এ ক্ষেত্রে ভারত ও চীনকে বেশি অবদান রাখতে হবে। কারণ তাদের উন্নত মানের যন্ত্রপাতি আছে।

এখন আসা যাক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়ের উপর, যে কোন কারণে বাষ্প বায়ুমন্ডলে যেতে না পারলে অথবা বাষ্প থেকে সময়মত মেঘের সৃষ্টি না হলে এবং চাহিদা মত এলাকায় বৃষ্টি না হলে নিচের পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করে এ সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।

 

পদ্ধতি গুলো হলো :

 

পাত্র গুলোকে এমন সব স্থানে তৈরী করতে হবে যে স্থানের বায়ু উর্ধ্বমুখী। তাছাড়া  পাত্রটিতে যখন বাষ্প হওয়া শুরু হবে তখন এমনিতেই উর্ধ্বমুখী বায়ু সৃষ্টি হবে। এই উর্ধ্বমুখী বায়ুই বাষ্পকে বায়ু মন্ডলে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে। আবার দিনের বেলায় সমুদ্রের বায়ু উপকুলের দিকে প্রবাহিত হয় যা আমাদের সমস্যা সমাধানে সহযোগিতা করবে।

 

  • তার পরও যদি সমস্যার সমাধান না হয় তাহলে সর্বশেষ একটি পদ্ধটি ব্যবহার করা যেতে পারে যা থেকে আমরা এ সমস্যার সমাধান করতে পারব। আমরা দেখতে পাই একটি গ্লাসে যদি বরফ মিশ্রিত ঠান্ডা পানি বা বরফ রাখা হয় তাহলে সে গ্লাসের বাহিরের আবরণে জলীয় বাষ্প ঠান্ডায় পানিতে রূপান্তরিত হয় এবং পানির পরিমানটাও কম নয়। এ পদ্ধতিটি কাজে লাগিয়ে চাহিদামত এলাকায় পানি পাওয়া যাবে। যদি কৃত্রিম জলীয় বাষ্প বায়ু মন্ডলে যেতে না পারে বা মেঘে তৈরী না হলে পাশাপাশি জলীয় বাষ্প কোন সমস্যা তৈরী করলে এবং চাহিদামত এলাকায় বৃষ্টি না হলে তখন ৬০ থেকে ৮০ ফুট উচু এবং দৈর্ঘ্য প্রায় ৩০ থেকে ৪০ ফুট ও প্রস্ত প্রায় ৫-১০ ফুটের মত স্তম্ভ তৈরী করতে হবে। তবে স্তম্ভ ছোট আকারের হলেও কোন সমস্যা নেই। যা পাতলা ষ্টীল বা অন্য কোন পদার্থ দিয়ে তৈরি করতে হবে যা খুব ঠান্ডা ধারন করতে পারে। তার ভিতর বরফ দিয়ে পূর্ণ করতে হবে। যেমন স্তম্ভের ভিতরটা ফ্রিজের মত করে রাকতে হবে বা অন্য কোন প্রক্রিয়ায় যাতে করে বরফ না গলে সেই ধরনের পরিবেশ তৈরি করতে হবে। তখন বাহিরের আবরন থেকে প্রচুর পরিমানে পানি পাওয়া যাবে। এ স্তম্ভ গুলো থেকে উৎপন্ন পানি দ্বারা শত শত এক্টর জমিতে পানি সর্বরাহ করা যাবে। মাঘ মাস থেকে এ পদ্ধতি ব্যবহার করলে ভাল ফলাফল পাওয়া যাবে। ঢাকার মত শহরে এ ধরণের স্তম্ভ ব্যবহার করে ঘাটতি পানির চাহিদা পূরণ করা যাবে। নদীর পানি বৃদ্ধি করার জন্য এধরনের স্তম্ভ স্থাপন করা যেতে পারে। পাশাপাশি জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে এ ধরনের স্তম্ভ ব্যবহার করে পানির অভাব দূর করা যাবে।

 

  • যখন মৌসুমী বায়ু প্রবাহ আমাদের উপকূলে প্রবেশ করবে তখন আমরা প্রচুর পরিমানে কৃত্রিম জলীয় বাষ্প উৎপন্ন করব। যা খুব সহজেই মৌসুমী বায়ু প্রবাহের সাথে মিশে বৃষ্টির পরিমান বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে। এটি একটি সহজ পদ্ধতি যা প্রয়োজনের সময়ে বৃষ্টির পরিমান বৃদ্ধি করবে। দক্ষিণ এশিয়ায় পানির সমস্যা সমাধানের জন্য সবাইকে এগিয়ে আসা উচিত। যেন আমরা সবাই এর সুফল ভোগ করতে পারি।

ব্যয় :

এই প্রকল্পে ব্যয় সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ণ একটি বিষয়। পাত্র ও তাপ উৎপাদনকারী কয়েলের পার্টিশন গুলো তৈরি করতে খুব বেশি টাকার প্রয়োজন হবে না। বিদ্যুৎ ব্যয়ই এখানে প্রধান ব্যয়। তাই ব্যয় কমানোর জন্য  একটি পদ্ধতি ব্যবহার করা যেতে পারে। বিদ্যুৎ আমরা এ প্রকল্প থেকে উৎপাদন করতে পারি। এক্ষেত্রে ক্ষুদ্র পরিসরে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে স্থাপন করার মাধ্যমে নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা সম্ভব। প্রথমে আমরা সমুদ্রের কাছেই উ”ুস্থানের মধ্যে পানি জমা রেখে পাইপের মাধ্যমে পানি নিয়ে যাব বাষ্প করার পাত্রে। পাইপের শেষের অংশে একটি টার্বাইন স্থাপন করা হবে। পানির স্রোত যখন টার্বাইনকে ঘোরাবে তখন যে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হবে তা দিয়ে এ প্রকল্প পরিচালনা করা  যাবে। পাত্র পানি পূর্ণ হলে পানি অন্য দিকে সরিয়ে দিয়ে প্রবাহমান পানির গতি ঠিক রেখে দিন রাত চব্বিশ ঘন্টা বিদ্যুৎ্ উৎপন্ন করা যাবে। তাছাড়া পাত্র থেকে উৎপন্ন বায়ু প্রবাহকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে। বাষ্প প্রক্রিয়া শুরু হবার পর যে উর্ধ্ব মুখী বায়ুর প্রবাহ সৃষ্টি হবে তা কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা যাবে অথবা পাত্রের পাশেই ইউন্ডমিল স্থাপন করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে।  এক্ষেত্রে শুধু একটু কৌশল অবলম্বন করলেই হবে। বাষ্প প্রক্রিয়া শুরু হবার পর উৎপন্ন বাতাস যেন টার্বানকে ঘুরাতে সাহায্য করে সেভাবে উইন্ডমিল স্থাপন করতে হবে। তাছাড়া সমুদ্রের কাছাকাছি হওয়ায় উন্ডমিল থেকে বিদ্যুৎ পাওয়ার যথেষ্ট সুযোগ আছে। এ প্রকল্পে হয়তু সর্বোচ্চ ১-৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ লাগবে। বিদ্যুৎ ব্যবহার করে যদি অবশিষ্ট থাকে তাহলে তা আশেপাশে এলাকায় সংযোগ দেওয়া যাবে। কয়েক সপ্তাহ এ প্রকল্প চালু রাখলে ফাল্গুন ও চৈত্র মাসে পানির অভাব হবে না। এ দুই মাসে কয়েক দফা বৃষ্টি হলে এবং স্তম্ভের সাহায্যে পানি পাওয়া গেলে সেচ প্রকল্পের আর প্রয়োজন হবে না। বৃষ্টির যখন প্রয়োজন হবে তখন আমরা এ প্রকল্প চালু করব। এই সেচ প্রকল্পের জন্য প্রতি বছর হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করতে হয়। যখন সেচ প্রকল্পে প্রয়োজন হবে না তখন দেশের শত শত কোটি টাকা বেচে যাবে এবং দেশের কৃষক ও জনগণ লাভবান হবে।

১.৪.২০১০ ইং তারিখে সেচ প্রকল্প নিয়ে এক রির্পোট এ বলা হয়েছে সেচের জন্য বার্ষিক ৮ লাখ মেট্রিক টন ডিজেল দরকার হয় এবং সেচের সর্বোচ্চ সময়ে গড়ে ৮০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুতের দরকার হয়। সরকারে পক্ষ থেকে  সেচ কাজে বার্ষিক ৫৫০ কোটি টাকা পর্যন্ত ভর্তুকি দেওয় হচ্ছে। এই হলো ২০১০ সালের চিত্র।কিন্তু ২০১১-১২ সালে আরো বেশি ব্যয় ও ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে এই পানির জন্য। ২০১৩ সালের সেচের জন্য গড়ে ২০০০ মেগাওয়াট এর চেয়ে বেশি বিদ্যুৎ প্রয়োজন। আর এক্ষেত্রে আমার প্রকল্পে যদি জাতীয় গ্রিড থেকে ১০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হয় তাহলে অনেক গুলো পাত্র চালু করা যাবে এবং এর ফলাফল খুব দ্রুত পাওয়া যাবে।

পানি নিয়ে ভবিষ্যতে পৃথিবী বাসিকে ভয়াবহ বাস্তবতার সম্মুখিন হতে হবে। ২০২০ সালের মধ্যে পানির জন্য পৃথিবীর অনেক মহাদেশে বিশেষ করে এশিয়া ও আফ্রিকায় ভয়াবহ সমস্যা দেখা দেবে। তখন পৃথিবীর বেশির ভাগ দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা বৃদ্ধি পাবে এবং অর্থনীতি ও খাদ্য বাজারে বিপদজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে। যার ফলে বিশ্বের অর্থনীতিতে ধস নেমে আসবে। তাছাড়া ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ শতাংশ খাবার পানি হ্রাস পাবে তখন সমস্যা এতই ভয়াবহ আকার ধারন করবে যে পানির জন্য তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ হতে পারে।

 

  • এই প্রকল্পে প্রথমে প্রশ্ন আসে কয়েল থেকে তাপ উৎপন্ন করার জন্য প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ কোথায় থেকে সংগ্রহ করা হবে। আমাদের দেশে এখন ও বিদ্যুতের ঘাটতি আছে। তাই আমি আমার এই প্রকল্পে জাতীয় গ্রিড থেকে কোন বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে চাই না। এ প্রকল্প থেকে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করে উৎপাদিত বিদ্যুৎ দিয়েই যাবতীয় বিদ্যুৎ এর চাহিদা মেটানো যাবে। কিছু কৌশল অবলম্বন করে ক্ষুদ্র পরিসরে চাহিদার চেয়ে অনেক বেশি বিদ্যুৎ উপন্ন করা যাবে।চিত্র-১ এ তা তুলে ধরা হলো। পাশাপাশি উইন্ডমিল থেকেও বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে।এ পদ্ধতিতে প্রকল্প পরিচালনা করলে খুব অল্প ব্যয় হবে। ফলে পৃথিবীর যে কোন দেশে এই প্রকল্প চালু করা যাবে। তাছাড়া এই প্রকল্প সব সময় চালু থাকবে না। যখন বৃষ্টির প্রয়োজন হবে তখন শুধু বাষ্প সৃষ্টি করা হবে। যা মোটেও ব্যয় বহুল নয় বরং অনেক বেশি লাভবান হবে দেশের প্রতিটি মানুষ।

 

  • এ পর্যায়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে অন্য একটি প্রক্রিয়ায়। পাত্র থেকে উৎপন্ন বায়ুর প্রবাহকে কাজে লাগিয়ে টার্বাইন ঘুরিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন  করা হবে। চিত্র-২ এর মধ্যে তা তুলে ধরা হলো। বিদ্যুৎ উৎপাদন যদি যথেষ্ট পরিমাণে হয় তাহলে আমরা পাত্রের কয়েলের পার্টিশনের পরিমাণ অথবা কয়েলের তাপমাত্রা আরও বাড়িয়ে দিব। তখন কোটি কোটি লিটার পানি অল্প সময়ে বাষ্প হয়ে যাবে। এ পদ্ধতিতে খরচ অনেক বেশি কমে আসবে। এ প্রক্রিয়ায় খুব সহজেই আমরা বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারব। ইচ্ছে করলে সূর্য্যরে তাপকেও কাজে      লাগানো যাবে পানির তাপমাত্রা বৃদ্ধি করার জন্য। পাত্রের পানির স্তর যত নিচের   নেমে আসবে কয়েলের পজিশন পরিবর্তন করে বিদ্যুৎ ব্যবহারও তত কমানো যাবে। বাষ্প প্রক্রিয়া শেষ হতে কতটুকু সময় লাগবে তা নির্ভর করবে পাত্রে পানির পরিমাণ ও উৎপন্ন তাপের উপর।

 

  • এ পদ্ধতি ব্যবহার করে চাহিদামত এলাকায় বৃষ্টি না হলেও স্তম্ভ দ্বারা পানি পাওয়া যাবে। এই স্তম্ভের মাধ্যমে ইচ্ছা করলে সারা বছরই পানি সরবরাহ করা যাবে। পাশাপাশি কৃষি প্রদান এলাকা গুলোতেস্তম্ভ স্থাপন করে শত শত হেক্টটর জমিতে পানি দেওয়া যাবে। স্তম্ভ ব্যবহার করে বাতাসের আদ্রতা নিয়ন্ত্রন করা      যাবে। স্তম্ভ সম্পর্কে ২য় পৃষ্টায় বর্ণনা করা আছে।

 

ব্যয় কমানোর পদ্ধতি :  

এই প্রকল্পে বিদ্যুৎ ব্যয় যেহেতু প্রধান একটি বিষয় তাই এ প্রকল্পে বিদ্যুৎ ব্যবহার না করেও পানি বাষ্প করা যাবে। এতে করে ঐ প্রকল্পের ব্যয় ৯০% কমানো যাবে। পাত্রের পাশে বড় উত্তল লেন্স স্থাপন করে সূর্যের আলো কেন্দ্রীভূত করে পানি বাষ্প করা যাবে পানিকে অস্বচ্ছ করে এ কাজটি করা যাবে। কেন্দ্রীভূত সূর্যের আলোয় তাপমাত্রা ৫০০-১৫০০ ডিগ্রী সেলসিয়াস বা তার উপরেও নেয়া যাবে। তবে আমরা প্রথমে বেশি তাপমাত্রাই ব্যবহার করব, পরে পানি বেশি গরম হলে তাপমাত্রা কমিয়ে নিব। এই প্রক্রিয়ার বিদ্যুৎ শক্তির কোন প্রয়োজনই হবে না। আবার পাত্র তৈরি না করেও সমুদ্রের তীরে বড় একটি এলাকায় বাদ সৃষ্টি করে তার পাশে লেন্স স্থাপন করে সূর্যের আলো কাজে লাগিয়ে পানি বাষ্প করা যাবে।

 

 

এ প্রকল্প ব্যবহারের মাধ্যমে পরিবেশগত কয়েকটি সমস্যার সমাধান সম্ভবঃ

 

এ প্রকল্প ব্যবহার করে প্রাকৃতিক কিছু সমস্যার সমাধান করা যাবে, যেমন ক্স পৃথিবীর তাপমাত্রা কমানো যাবে। কৃত্রিম মেঘ সৃষ্টি করে পৃথিবীতে সূর্যের আলো প্রবেশে বাধা সৃষ্টি করে তাপমাত্রা কমানো যাবে। প্রয়োজন মত যত দিন ইচ্ছে কৃত্রিম মেঘ সৃষ্টি করে পৃথিবীর তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ কার যােেব। আবার  বাতাসে জলীয় বাষ্পের উপস্থিতিও তাপমাত্রা কমাতে সাহায্য করে। তবে প্রথমে বাতাসে জলীয় বাষ্পের বেশি উপস্থিতি অনেক সময় গরম লাগে ঠিকই কিন্তু বৃষ্টি হলে পরিবেশ ঠান্ডা হয়ে যায় তার ফলে পরিবেশের তাপমাত্রা স্বভাবিক থাকবে। আবার জলীয় বাষ্পও গ্রীন হাউস গ্যাস এই গ্যাসকেও স্তম্বের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে এর ফলে গ্রীন হাউজের সমস্যা কিছুটা কমে আসবে, গ্রীণ হাউজের ফলে উত্তর মেরুর বরফ গলে যাচ্ছে তা প্রতিরোধ করা যাবে। এ পদ্ধতি ব্যবহার করে দাবানল সৃষ্টি বন্ধ করা যাবে। কারন দাবানল সৃষ্টি হয় উষ্ণ ও শুষ্ক আবহাওয়ার জন্য। পৃথিবীর যে সব এলকায় দাবানল সৃষ্টি বেশি হয় সেখানকার আবহাওয়ায় জলীয় বাষ্পের পরিমান বৃদ্ধি করে দাবানল সৃষ্টি বন্ধ করা যাবে। পানি ¯স্প্রে করে অথবা বস্প করে ঐ সব এলাকার আবহাওয়া পরির্বতন করা যাবে। পরিবেশে যখন যতেষ্ট পরিমান কৃত্রিম জলীয় বাষ্প থাকবে তখন পরিবেশ খুব বেশি উষ্ণ ও শুষ্ক হবে না। তখন সে সব এলাকায় নিয়মিত বৃষ্টিও হবে। এ প্রকল্পটি ১০০% বাস্তবায়ন করা সম্ভব এবং তা অল্প ব্যয়ের মাধ্যমেই। এ প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যে কোন ধরনের সমস্যার সমাধান দিতে আমি সক্ষম। আমার এখন সহযোগীতার খুব বেশি প্রয়োজন। এ প্রকল্পটি ছাড়াও আমি আরও কয়েকটি বিষয়ে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছি। সেগুলো হলো ব্যর্থ সৌরজগৎ, মহাবিশ্বের অন্তরালে যার বিষয় বস্তু হল কেন এই মহাবিষ্ফোরণ, বেলুনের মত প্রসারন এবং বাস্তবতা, মহাবিশ্বের পরিণতি কি নির্ভর করবে ঘনত্বের উপর নাকি অন্য একটি বিষয়ের উপর, মহাবিশ্বের তিনটি অবস্থায় ভাগ করা, কখন গোলক পৃষ্ঠের কেন্দ্র হয়।

এই বিষয়গুলো সম্পূর্ণভাবে এখনও শেষ করতে পারিনি। যে কেউ ইচ্ছে করলে এ লেখাগুলো দেখতে পারবে।

 

বিশ্বনাথ আচার্য্য

ফান্দাউক, নাসিরনগর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, বাংলাদেশ।

বয়সঃ ২৭ বছর

মোবাইল নং ০১৭২১ ৪৯০২২২

Level 2

আমি পায়েল দেব। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 9 বছর 7 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 6 টি টিউন ও 4 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

অসাধারন
http://amraito.com

Level New

পাগলামি ছারা আর কিছুই না।