আগুন বা পেট্রোল বোমার ক্ষয়ক্ষতি কমাতে গাড়িতে প্রযুক্তি (টেকফিকশান অথবা টেকহিউমার)

প্রথমেই বলে রাখি এটা কোনো রাজনৈতিক পোস্ট নয়।

প্রযুক্তি আজ কোথায় পৌঁছেছে! সকাল বেলা ঘুম ভাঙা থেকে শুরু করে রাতে ঘুমানোর আগ পর্যন্ত সব জায়গায় প্রযুক্তি। মা’র মুখে শুনেছিলাম যে তার স্যার বলেছিলেন, ‘একদিন দেখবে ভাত রান্না করতে হচ্ছে না, এমন এক যন্ত্র আসবে যা ভাত রেঁধে দেবে।’ ঐসময় শুনে হাসি পেলেও এখন কিন্তু তাই হচ্ছে। অর্থাৎ আজ যা চিন্তা করা হয় কাল তা বাস্তবে রুপ নেয়। এর সাথে সাথে প্রযুক্তির ভালো ব্যবহার আমাদের জানতে হবে।

সারাদেশ আজ এলোমেলো। টিভি খুললেই চোখে পড়বে পেট্রোল বোমার খবর আর নির্বিচারে গ্রেফতার ও হত্যার খবর। দেশের রাজনীতির আজ বেহাল দশা। একদল পেট্রোল বোমা মেরে মানুষ মারছে [সূত্র], আরেকদলও আগুন লাগাচ্ছে রাজনৈতিক ফায়দা নিতে। [সূত্র] আর গণগ্রেফতারের ব্যাপারটা তো আছেই, অনেক নীরিহ মানুষও গ্রেফতার হচ্ছে অর্থাৎ দেশটা অনিশ্চিত গন্তব্যের দিকে যাচ্ছে। তবে আগুন যারাই লাগাক তারা মানুষের মধ্যে পড়ে না। এদের প্রকৃত পরিচয় এটাই যে এরা সন্ত্রাসী।

আপনারা জানেন যে সরকার এই অবরোধের মধ্যেও পুলিশি পাহারায় গাড়ি চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু তারপরও আগুন লাগানো থেমে নেই, মানুষের মৃত্যুও থেমে নেই। পেট্রোল বোমায় আক্রান্ত রোগীদের দিকে তাকানো যায় না। আমাদের সেই অনুভূতি থেকে রেহাই দিতে টিভি চ্যানেলে সেই অংশগুলো ঘোলাটে (Blur) করে দেখানো হয়।

একটু চেষ্টা করলেই কিন্তু এইসবকিছুর ক্ষতি কমিয়ে আনা যায়। কারণ, একটা বাসে আগুন লাগলে তৎক্ষণাৎ ফায়ার সার্ভিসের দল আসতে পারে না। আসতে কিছুটা সময় লাগেই। আর তার মধ্যে একটা যানবাহন পুড়ে ছারখার হয়। তাই অবরোধের মধ্যে কিছু প্রস্তুতি ব্যতীত কোনোভাবেই গাড়ি চালানো উচিত নয়। তাতে কেবল ক্ষতির পরিমাণই বাড়বে। তাই আসুন দেখি কীভাবে প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে এইসব ক্ষতি কমানো যায়।

  • বিষয়টা অনেকের কাছেই হাস্যকর মনে হবে। কিন্তু এটা কিছুটা হলেও ক্ষয়ক্ষতি কমাবে। বাসের ছাদে বা ট্রাকের উপরে মাঝারি সাইজের পানির ট্যাংকের ব্যবস্থা করা। প্রতিটা টার্মিনালেই মোটর দিয়ে ট্যাংক ভরানোর সুব্যবস্থা থাকবে। এটা কঠিন কিছু না। আমি সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং-য়ের ছাত্র। তাই একটু চিন্তা করে আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম।

  • গাড়ির ভিতরে পানির স্প্রে-র ব্যবস্থা করা যাতে আগুন লাগলে ইমারজেন্সি পানি দিয়ে আগুন নেভানো যায়।

  • প্রতিটা সিটের উপরে অগ্নি-নির্বাপক যন্ত্র রাখা যাতে দ্রুতই আগুন নেভানো যায়।

  • প্রায় সব গাড়িতেই একটা করে মাঝারি পানির ট্যাংক ধারণ করা সম্ভব। পেছনের দুই সিট তুলে ফেললে একসাথে দুটোও অনেকক্ষেত্রে রাখা সম্ভব। আর সাথে একটা স্প্রে থাকলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেকাংশেই কমে আসবে। আমাদের এতো কষ্ট সহ্য করতে হবে না। বিশেষ ক্ষেত্রে শাওয়ারও লাগানো যেতে পারে।

  • আর পেট্রোল বোমাবাজরা যে দলেরই হোক তাদের গণপিটুনি দিতে ভুলবেন না কিন্তু।

আপনারা এখনো ভাবছেন এটা একটা পাগলামি। আপাতদৃষ্টিতে তাই। কিন্তু এতে করে একটু হলেও ক্ষয়ক্ষতি কমানো যাবে। শুধু হঠাৎ করে একটা সিদ্ধান্ত নিলেই হবে না, এক দল অন্য দলের সাথে প্রতিযোগিতায় নামলেই হবে না, সার্বিকভাবে চিন্তা করে তারপর একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে হবে।

উপযুক্ত ব্যবস্থা না নিয়ে অবরোধের মধ্যে গাড়ি চালানো ঝুঁকিপূর্ণঅনিরাপদ!

আমার মনে হয় এতে একটু হলেও কাজ হবে তাই টিউনটা টেকফিকশানে রাখলাম। যাদের কাছে বাতুলতা মনে হবে তারা এটাকে টেকহিউমার হিসেবে নেবেন। আর, দুইদলের কাছে অনুরোধ, দেশবাসীকে আপনাদের এই রেষারেষির রাজনীতি থেকে অব্যাহতি দিন। ধন্যবাদ সবাইকে।

বিঃদ্রঃ রাজনৈতিক মন্তব্য আনএ্যাপ্রুভ করা হবে।

 ফেইসবুকে আমি>>

Level 2

আমি মামুন মেহেদী। Civil Engineer, The Builders, Bogra। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 10 বছর 9 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 92 টি টিউন ও 360 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 12 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।

আমি আপনার অবহেলিত ও অপ্রকাশিত চিন্তার বহিঃপ্রকাশ।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

যুগোপযোগী আইডিয়া।

ধন্যবাদ আপনাকে সচেতনতামূলক পোস্টের জন্য।

Onek valo idea…. Etake aro chorate parle valo hobe….. Karon jader ei bebostha nea ucit, tara techtunes e ashen bole mone hoy na….

@বেলায়েত হাসান: হুমম। ভালো বলেছেন বেলায়েত ভাই। আমাদের দেশে আসলে উদ্যোগের অভাব। সমাজের উপরের লোকজন চাইলেই অনেক কিছু করতে পারেন। কিন্তু করেন না।

ভাই আপনার আইডিয়াটা অনেক সুন্দর,, তবে এটা বিভিন্ন ব্লগেই সিমাবদ্ধ থাকবে,, বাস্তবায়িত হবে না

আপনার আইডিয়া প্রশংসাযোগ্য কিন্ত, পেট্রোলের আগুন নেভাতে পানি উপযুক্ত নয়।
পানি পেট্রোলের আগুন নেভাতে পারে না। তেল পানিতে ভাসে আর পেট্রোলের আগুনে পানি শুধু আগুন সহ তেল ছড়িয়ে দেবে, নেভাতে পারবে না।
ফায়ার এক্সটিংগুইসার রাখা যেতেই পারে, এবং বর্তমান পরিস্থিতিতে সেটা নিরাপত্তার জন্য জরুরীও বটে।

@মানজুর রশীদ: আফসোস সেটাই।

@শিহাব খান: ফায়ার এক্সটিংগুইসার তো রাখতে হবেই। তবে এমনিতেই যেগুলোতে আগুন জ্বালিয়ে দেয়া হয় বা আগুনের কারণে পুড়ে, সেক্ষেত্রে পানি ব্যবহার। আর গাড়িতে পানি রাখা বা ব্যবহার বা পরিবহন কোনোটাই কঠিন নয়। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

বাস্তবে রূপ দিতে পারলেই হতাহতের পরিমান কমানো সম্ভব।

Level 0

ভাই বাংলাদেশে Stealth Technology ব্যবহার করলে পিকেটাররা তাতেও আগুন ধরাবে। ওদের এতোটাই প্রতিভা ।
সুন্দর লিখছেন ।
ধন্যবাদ ।

@Khaled Saifullah Sadi: জ্বি ভাই। হতাহতের পরিমাণ কমানো গেলেই অনেক কিছু। প্রতিদিন টিভিতে আর এসব দেখতে ভালো লাগেনা।

@Rupu: আসলে আগুন ধরানো তো নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না তাই, যদি এভাবে একটু হতাহত বা ক্ষতির পরিমাণ কমানো যায় এই আর কি!