হলোগ্রাপিক মেমরি! (সায়েন্স ফিকশন)

তুসিন বাসায় ঢুকে বই খাতাসহ ব্যাগটা রেখেই হণ হণ করে বেরিয়ে গেল। কারন আজ তার নীতুর সাথে দেখা করার কথা। দেখা করার কথা এটা বললে ভুল হবে, আসলে তুসিন নীতুকে দেখতে যাবে। তবে সেটা লুকিয়ে দেখা। কলেজে পড়ার সময় থেকে সে নীতুকে পছন্দ করে, কিন্তু কখনও কিছু বলতে পারেনি। কখনও কিছু বলতে পারবে কিনা সন্দেহ আছে। বাহিরের জীবনে তুসিন ব্যর্থ হলেও সে তার কাজে কর্মে খুব সফল।

তুসিন সারাক্ষন শুধু স্বপ্ন দেখে। মনে হয় হাটতেও দেখে, খেতেও দেখে আর ঘুমাতে গেলেতো কথাই নেই। যাই হোক বাসা থেকে বের হয়ে মিনিট দশেক পথ হেঁটে তুসিন পকেটে হাত দিলো। পকেট থেকে তার নিজের ল্যবে বানানো ‘ডিস্টেন্স স্কেনার’টি বের করলো। তুসিন মুখ দিয়ে ‘নীতু’ বলার সাথে সাথে এল.ই.ডি স্ক্রিনে নীতুর ছবিসহ অবস্থান বের হয়ে এল। তুসিন চমকে উঠে বিদ্যত গতিতে পিছনে তাকালো, দেখলো নীতু ঠিক ওর পিছনে। এক মুহূর্তের জন্য ওর মনে হলো দেহে বুঝি আর প্রান নেই। পায়ের উপর নিয়ন্ত্রন নেই, এই বুঝি পড়ে যাবে। নীতু পাশ কেটে যেতেই তুসিন একটু স্থির হলো। কিছুক্ষন দাঁড়িয়ে থেকে, এক পা দুই পা করে বাসার দিকে ফ্যাকাসে হাটতে থাকলো। মুখ ফ্যকাসে হলেও ও ভেতরে এক ধরনের উত্তেজনা ফিল করছে।

তুসিনের বন্ধু বলতে তেমন কেউ নেই। এই নাগরিক জীবনে সবাই আসলে সবাইকে নিয়ে ব্যস্ত, যেমন নিতু। তুসিন সব সময় ভাবে, নিতু কি কখনও ওর কথা ভাবে? সময় হয় ওর? সারাক্ষন শুধু ক্লাস, কোচিং নিয়ে ব্যস্ত শিউলী ফুলের মত মেয়েটা। ওদের বাসাটা অনেক আগের, তুসিনের বাবার বদলি চাকরির কারনে তারা কোথাও স্থির হতে পারেনি। কিন্তু তারা গত সাড়ে তিন বছব ধরে তাদের দাদার এই পুরোনো বাড়িতে থাকে কারন ওর বাবা ‘রিটায়ার’ করেছে। বাড়ির পিছনের দিকে একটা পরিত্যক্ত রুমে তুসিন নিজের চেষ্টায় একটা ল্যব গড়ে তুলছে। প্রতি মাসে হাত খরচের টাকা ও টিউশনির টাকা থেকে নিজের চেষ্টায় সে এই ল্যব গড়ে তুলেছে। তবে তুসিন শুধু ‘সিগ্লাল ট্রান্সফার’ নিয়ে কাজ করতেই ভালোবাসে। শূন্য মাধ্যমে কি করে একটা কনো কিছু প্রেরিত হয় এই নিয়ে ওর ভাবনার শেষ নেই। তবে এই ব্যপারে সে অনেক পড়া শুনা করে। মাঝে মধ্যে কিছু সিগ্নাল পাঠায়, সিগ্নাল্গুলু কখনও কখনও নীতুকে উদ্ধেশ্য করে। কিন্তু ও জানে এ সিগ্নাল নিতু কখনোই পাবে না।

বন্ধুবান্ধব না থাকায় তুসিন বেশিরভাগ সময় ছোটোবেলায় একা থাকতো। একা থাকতে কি কারো ভালো লাগে? তাই একদিন দুইদিন করে তার ছবি আঁকার অভ্যস গড়ে উঠে। এখন সেটা অবশ্য খুব ভালো পর্যায়ে চলে গেছে। তুসিন রীতিমত কার্টুন আঁকে। তবে বেশিরভাগ কার্টুন তার কম্পিউটারে করা। সিগ্নালে আবার কখনও নীতুকে এসব কার্টুনও পাঠায়। আবার নিজে নিজে হাসে!

ঘরে ঢুকেই দেখে মা দাঁড়িয়ে। আজ যে কপালে কি আছে?

“কোথায় গিয়েছিলে তুমি? ক্লাস থেকে এসে সবাই বাসায় রেস্ট নেয়। তোমার হয়েছে সব উল্টা! ঠিক বাবার মত’’-কথাগুলু মা কেমন জানি ফিস ফিসিয়ে বললেন!

“.....এইতো ...একটু বা...বাহিরে।”

“বাহিরে যে গেলে, সেটা কি আমি দেখছি না? কেন গিয়েগিলে?’’

“না...মানে....”-তুসিন কিছু বলতে পারলোনা।

“ঠিক আছে, তোমার ঘরে যাও! আর গেস্ট রুম হয়ে যাও।” মা যে কি বুঝে ছেড়ে দিলো সেটা তুসিন বুঝে উঠতে পারলোনা। সে মাকে খুব ভয় করে, কিন্তু ভালোওবাসে খুব। তুসিন খুশি মনে নিজের ঘরের দিকে যাচ্ছিল। ভাবছিলো মামা, কাকা কেউ আসছে তাদের সালাম করে যেতে হবে। কিন্তু যেতেই সে থমকে গেলো। ড্রইং রুমে দুইজন বিদেশির মত লোক বসে আছে। তার বুঝতে বাকি রইলো না, মা কেন এত তাড়াতাড়ি ছেড়ে দিলো কেনইবা গেস্ট রুম হয়ে যেতে বললেন। লোকগুলু ওর বাবার সাথে দেখা করতে এসেছে ভেবে তুসিন সালাম দিয়ে ভেতরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলো। এমন সময় একটা লোক বলে উঠলো,

“হ্যলো! ইফ আই এম কারেক্ট, দেন উ আর মি. টুসিন??”

তুসিনের নাম নিয়ে কেউ উল্টাপাল্টা কিছু বললে ও খুব রেগে যায়। একবার স্কুলে এক ছেলে ওকে ‘তুস’ বলেছিলো বলে তুসিন ওই ছেলেকে মেরে তক্তা বানিয়ে দিয়েছিলো। পরে এই ঘটনা নিয়ে যা হুলুস্থুল কান্ড ঘটেছিলো।

যাই হোক, নিজেকে কোনো মতে সাম্লিয়ে তুসিন বলল; “ইয়েস!”

“স্যার, আই এম এলেন রোচ এন্ড হি ইজ আরভাইন বারগ। উই আর দি এম্পলয়ী অব ইউ.এস. এম্বাসী অব বাংলাদেশ! ইউ হেভ এন আর্জেন্ট কল ফ্রম ইউ.এস. এম্বাসী অব বাংলাদেশ!” তুসিনের উপর বজ্জ্র পাতের মত হলো। প্রথমত ‘স্যার’ শব্দটা শুনে। আবার নাকি তার জন্য এম্বাসি থেকে ‘কল’ এসেছে। বাস্তবতার সাথে নিজেকে মিলিয়ে নিতে তুসিনের খুব কষ্ট হচ্ছে। সে বুঝতে পারছে না এই লোকগুলু কি বলছে?

তুসিন কোনো মতে বলল; “এনি থিং রং?” লোক দুটি বিস্মিত হলো মনে হলো।

এক জন বলল, “নো স্যার, দেয়ার ইস এ গুড নিউজ ফর ইউ!”

_______________________________ ( চলবে।)

Level 0

আমি Rubel Oron। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 13 বছর 1 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 9 টি টিউন ও 229 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

______''সুডো ব্লগ''_এ আপনাকে স্বাগতম!' ________'প্রোগ্রামারের পৃথিবী''_তে আপনাকে স্বাগতম! _______''Rubel Orion on Facebook! :D


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

গল্পটা ভালো লাগলো, ধন্যবাদ

একি সাগর ভাই এ রকম টিউনকে প্রশ্রয় দিলেন? আসলে আমরা নিজেরাই টেকটিউনসের সৌন্দয্য নষ্ট করছি। কাকে আর কি বা বলব?

    প্রয়োজন আছে। সব গল্পের নয়। গল্প যদি বিজ্ঞান নিয়ে হয় তাতে প্রবলেম কোথায়? এটা প্রযুক্তির সাইট এখানে প্রযুক্তির সকল দিল থাকাটা স্বাভাবিক এবং এর প্রয়োজন আছে। যদিও কেউ লিখেনা। একজন যখন লিখছে তাকে আর থামাবেন না। ভয় পাবেন না। এতে সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা নেই। বিজ্ঞান ছাড়া অন্য গল্প আলোচনায় সৌন্দর্য নষ্ট হবে।

    Level 0

    সহমত ।

    @ আদনান ভাই, আমি সায়েন্স ফিকশান লেখার ইচ্ছা পোষন করি । কিন্তু আমিতো ”বিভাগ : টেক ফিকশান” খুযে পাচ্ছিনা । সাহায্য করতে পারবেন কি ?

    @Triple A, আমাকে ব্যাঙ্গ না করে টেকটিউনস ডেক্সে গিয়ে বলে দেখেন কর্তৃপক্ষ কি বলে।

    Level 0

    @ আদনান ভাই, আমি আপনাকে ব্যাঙ্গ করলাম কোথায় ? ইদানিরং ”সায়েন্স ফিকশন” লেখা শুরু হয়েছে আর আমি ”সায়েন্স ফিকশন” এর একজন মহাভক্ত, School Life এ School Magazine এ আমি ”সায়েন্স ফিকশন” লিখতাম । আজই TTতে একটা ”সায়েন্স ফিকশন” লেখা শুরু করে save করতে গিয়ে দেখি ”টেক ফিকশান” বিভাগটি পাচ্ছিনা, কিন্তু আগে যারা লিখেছেন তারা এই বিভাগটি দিয়েছেন । Comments লিখতে গিয়ে কাছাকাছি আপনি ছিলেন তাই আপনার কাছে সাহায্য চেয়েছি মাত্র । মোটেই আপনাকে ব্যাঙ্গ করিনি । আমার Comments লেখাতে ভুল হয়ে থাকলে, তাতে আপনি mind করে থাকলে Sorry.

    Triple A ভাই আমি আসলে বুঝতে পারিনি। বুঝলে সাহায্য করতাম। আসলে @ এর আগে পরে দুই পাশেই লিখায় আমি ভেবেছি আপনি রাতপ্রহরি ভাইকে সহমত বলেছেন। সুতরাং পরের অংশটা স্বাভাবিক ভাবে ব্যাঙ্গ। এজন্য আমি দুঃক্ষীত।

    Level 0

    it’s ok

Level 0

আজকের সাইস্নে যা কিছু অবদান তার প্রায় সব কিছুই এসেছে বিজ্ঞানীদের চিন্তা ভাবনা আর কল্প বিজ্ঞান থেকে। তাই রাতপ্রহরী কল্প বিজ্ঞান কে বাদ দিয়ে টিটি কি করে পূর্ণতা পায়? অভিশপ্ত আত্মা আপনার গল্পটা আমার ভাল লেগেছে, পরের টুকু একসংগে পেলে আরো ভাল লাগবে।

    আপনি ঠিক ধরেছেন। অনেক আবিষ্কার হয়েছে সাইন্স ফিকশন থেকে

ভাল লাগলো….। পুরো গল্পটা চাই…………

রাতপ্রহরী!!! ভাইয়া কিছু মনে করবেন না।
ভালো কে ভালো বলার মানসিকতা গড়ে তুলুন…।
ভাষা প্রয়োগে সংযত হোন…………।

Level 0

good story, keep writing.
I think there should be a little touch of literature in TT
But all those literature should be positive attitude.
Dot any destructive attitude.

    সাইন্স ফিকশন সাধারনত যুক্তি নির্ভর হয়। আর অবশ্যই পজেটিভ এটিটিউড থাকবে।

পরপর তিনটা সায়েন্স ফিকশন পেলাম। কারো টায় ভালো মন্তব্য আবার কারোটায় বাজে। এটাতো বুঝলাম না। হেডিং-এ সায়েন্স ফিকশন লিখা থাকলে কেউ কষ্ট করে না পড়লেই তো পারে। কেন একেক জনের সাথে একেকরকম আচরণ ? আমিতো কারো ক্ষতি দেখছি না। বরং রাগের কথাও ভালোভাবে বলা যায়। ভালো নতুন কিন্তু ভালো টিউনার তো টেকটিউনস্-এ আসবেই না। অভিশপ্ত আত্মা আগায়ে যান।তবে একটা কথা আপনার ইউজার নেম এত খারাপ কেন? (ইউজার নেমগুলি কি একটু সুন্দর রাখা যায়না, যাতে দেখলে মন ভালো হয়ে যায়। ইদানিং দেখছি নামগুলো কেমন যেন নেগেটিভ মাইন্ডের)

    মাসরুর প্রধান ভাইকে ধন্যবাদ সত্য ঘটনা তুলে ধরার জন্য।

আপনার উদ্দোগকে স্বাগত জানাই। যদিও একলাইনও পড়িনি। সম্পূর্ণ লিখা হয়ে গেলে একসাথে পড়ব। পাছে অন্যদের চাপে সম্পূর্ণটা না লিখেন। তাহলে আবার পরের অংশের জন্য মন উসখুশ করবে। আপাদত প্রীয়তে রাখি। আপনি তাড়াতাড়ি লিখা শেষ করুন।

    আপনার মত টিউনার আমার এখানে মন্তব্য করছে তাতেই আমি খুশি। আর সময় করে একবার এসে পড়ে যাবেন। ধন্যবাদ।

Level 0

@ রাতপ্রহরী, ভাই কিছু মনে করবেননা, এটা যে ”গাজাখুরি” , ঠিক এইভাবে না বল্লে মনেহয় ভাল হত । Headingএইতো লেখা আছে ”সায়েন্স ফিকশন” , বিভাগও ”টেক ফিকশান” । কোথাও কোন confusion সৃষ্টি করা হয়নি । এই tune পড়ে busy মানুষদেরতো সময় নষ্ট হবার কথা নয় ।

@অভিশপ্ত আত্মা, ভাই গল্প start বেশ ভালই লাগলো । Next part গুলো আরও ভালো চাই ।

চালিয়ে যান….

    রাতপ্রহরি ভাইয়া(ভাইয়া বললাম, আবার মাইন্ড না করেন।) সহ, ট্রিপল এ, সাগর, দূর্বা, সিহান, আদনান, নিউবয়, মাশরুর, বুকোয়ারম ভাইকে ধ্যনবাদ।
    যারা মননীত করা/না করার অপ্সহনে টিক দিয়েছেন, তাদেরকে অনেক ধ্যন্নবাদ। 😛

Level 0

@ অভিশপ্ত আত্মা, ভাই আমিও Science Fiction লিখতে চাই, ”টেক ফিকশান” বিভাগটি কিভাবে Select করবো, একটু Help করবেন কি ?

    ত্রিপল এ ভাইজান;
    আপনি আপাতত, সমগ্রতে দিয়ে দেন। বিভাগ বড় কথা নয়(যদিও প্রয়োজন), প্রযুক্তি চাষই বড় কথা। শুভ কামনা রইলো।

    Level 0

    Thanks, আপাতত নাহয় দিলাম But, আপনারা কেমনে ”টেক ফিকশান” বিভগ Select করলেন, এইটা না জানলেতো আমার রাতে ঘুম হবেনানে ভাই !

    এটা মডারেটর রা পরে ঠিক করে দিবে। কোন এক কারনে এটি সিলেক্ট করা যায় না। আপনি টিউন করুন।

ভাল হয়েছে। আশা করি চালিয়ে যাবেন।