ফ্রিলেন্সার হতে ইচ্ছুক?

ফ্রিলেন্সিং এমন একটি চাকরী যেখানে আপনি নিজেই নিজের বস। আপনার কাজের সময় পরিমাণ এবং কাজের টাকা সবকিছুই আপনি নিজে ঠিক করবেন। এটি অনেকটা নিজস্ব ব্যাবসার মতো। একজন দক্ষ ফ্রিলেন্সারের এক মাসের অর্জন একটি সুনামধন্য কোম্পানীর একজন অফিসার থেকেও বেশি। তবে মনে রাখতে হবে ফ্রিলেন্সিং এমন একটি জিনিস যার জন্য আপনি তখনই টাকা পাবেন যখন আপনি নিজের কাজ দিয়ে আপনার ক্লাইন্টকে সন্তুষ্ট করতে পারবেন। আপনার কাজের মান ভালো হলে সেই ক্লায়েন্টের অন্যান্য কাজেও আপনি সুযোগ পাবেন যার ফলে আপনি একজন রেগুলার ক্লায়েন্ট পেয়ে যাবেন, যা আপনার পরবর্তীতে কাজে লাগবে। একজন রেগুলার ক্লায়েন্ট আপনার জন্য একটি বিশাল সম্পদ। শুধু তা নয়, তার মাধ্যমে আপনি একটি রেফারেন্স পাছেন এঁর ফলে পরবর্তীতে যখনই কেউ আপনাকে কাজে নিয়োগ দিতে চাইবে আপনি তার রেফারেন্স ব্যবহার করতে পারবেন। তবে একজন দক্ষ ফ্রিলেন্সার বললেই হওয়া যায় না। এর জন্য প্রয়োজন আপনার কাজের ভালো একটি মান। এবং ক্লায়েন্টের সাথে আপনার ভালো কমিউনিকেশন স্কিল। আজকে একজন ফ্রিলেন্সার কেমনে নিজের ক্যারিয়ারে ভালো করতে পারবে এবং সফল হতে পারবে এই বিষয়েই কথা বলব।

 

 

নিজের নীতি ঠিক রাখুনঃ

আপনি একজন ফ্রিলেন্সার, আপনার কাজটাই আপনার পরিচয়। আপনি নিজের কাজের মাধ্যমেই আপনার পরিচয় সকলের সামনে তুলে আনবেন। তাই নিজের কাজের নীতিটা অনেক জরুরী। আপনি নিজের কাজের নীতি এমনভাবে ঠিক করুন যাতে ক্লায়েন্ট আপনার নীতি দেখে আপনাকে নিতে ইচ্ছুক হয়। আপনার নীতি থেকে কখনোই আপনি সরে যাবেন না। মনে রাখবেন আপনার কাজের নীতি আপনাকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে। আপনার নীতির মাঝে অবশ্যই একটি পয়েন্ট রাখবেন সেটি হলো আপনি ক্লায়েন্টের পুরোপুরি সন্তুষ্ট না হওয়া পর্যন্ত তার থেকে কাজের পেইমেন্ট নিবেন না, কারণ সন্তুষ্ট না হলে আপনি হয়ত টাকা পেয়ে যাবেন তবে একজন ক্লায়েন্টকে সবসময়ের জন্য হারিয়ে ফেলবেন। একজন ফ্রিলেন্সারর সবচেয়ে বড় অর্জন হলো তার ক্লায়েন্টের সন্তুষ্টি। তাই নিজের কাজের নীতি ঠিক রেখে ক্লায়েন্টকে সন্তুষ্ট করুন। নিজের কথা থেকে কখনোই পিছু হাটবেন না।

 

নিজের কাজ অবশ্যই সময়ের মাঝে শেষ করুনঃ

একজন ক্লাইয়েন্ট তার কাজ যখন আপনাকে দিবে সেই ক্ষেত্রে নিজের দরকার থেকে একটি দিন বেশী সময় নিয়ে চাইবেন ক্লায়েন্ট থেকে। এই একটি দিন হলো আপনার ইমার্জেন্সি ডে। আপনার নির্ধারীত সময়ের মাঝে কাজটি শেষ করতে না পারলে সেই এক্সট্রা, ইমার্জেন্সি ডে এর মধ্যেই কাজটি শেষ করুন। আপনি নিজের কাজের প্রতি সিরিয়াস এই বিষয়টি নিজের প্রতিটি পদক্ষেপে প্রমাণ করুন। এবং এটি প্রমাণের অনেক ভালো একটি সুযোগ হলো নিজের কাজ সময়ের মাঝে শেষ করুন। নিজের প্রতিদিনের সকল কাজ শেষে কোন সময়টিতে আপনি ফ্রিলেন্সিং করবেন তা ঠিক্মকরে নিন। কখনোই ক্লায়েন্টকে না জানিয়ে কাজের সময় নিজ থেকে বাড়িয়ে নিবেন না। আপনার প্রতিটি পদক্ষেপ আপনাকে আপনার ক্লায়েন্টের সামনে তুলে ধরবে, তাই সবকিছু সঠিকভাবে করুন।

ক্রিয়েটিভনেসঃ

আপনাকে যেই কাজে ক্লায়েন্ট নিয়োগ দিয়েছে তা অনেকেই করতে পারে। এটি আপনাকে মাথায় রাখতে হবে। আপনাকে বেছে নিয়ে কেন ক্লায়েন্ট ভালো একটি ডিশিসন নিয়েছে এটি তার কাছে নিজের কাজের মাধ্যমে তুলে ধরুন। কখনোই কপি করা কিছু দিতে যাবেন না। এই ক্ষেত্রে ধরা পরলে আপনার কাজের উপর সন্দেহ করা হতে পারে এবং একই সাথে নিজের একজন ক্লায়েন্টো হারাবেন। সবসময় ক্রিয়েটিভ চিন্তা করুন। আপনার কাজের ধরন এবং কোয়ালেটি সবার থেকে ভিন্ন এবং ভালো এটি কাজের মাধ্যমে দেখিয়ে দিন।

ধৈর্যঃ

ফ্রিলেন্সারদের জন্য ধৈর্য অনেক গূরত্বপূর্ণ একটি জিনিস। এই ধৈর্য আপনাকে একজন ভালো ফ্রিলেন্সার হিসেবে গড়ে তুলবে। আপনার ক্লায়েন্টের সব চাহিদা আপনার না বুঝতে পারাটাই স্বাভাবিক। কাজ জমা দেওয়ার পর হয়ত কাজ ভালো লাগলো না অথবা কোন ভুল আছে এইসব জিনিস শুনে অথবা দেখে নিজের ধৈর্য হারালে চলবে না। আপনার ব্যবহার এমন হতে হবে যেন আপনাকে কাজ দিতে ক্লায়েন্ট বিরক্ত না হয়। আশা করছি ভালো কিছু দিতে পারছি

পজিটিভনেসঃ

আপনার ক্লায়েন্ট আপনার থেকে কোন কিছু নিতুন চাইতে পারে। এই ক্ষেত্রে ভয় পাওয়া অথবা টেনশনের কোন কারণ নেই। আপনার ক্লায়েন্ট আপনাকে আপনার জানার পরিধির বাইরে কাজ দিলেও আপনার কাজের ফিল্ডের বাইরের কোন কাজ দিবে না। তাই ক্লায়েন্টের চাহিদাটা ভালো করে বুঝে নিন। আপনার ক্লায়েন্ট ঠিক কোন বিষয় নিয়ে বেশি চিন্তিত তা দেখুন এবং বুঝে নিতে শিখুন। কোন কাজ না পারলে ক্লায়েন্টকে বলুন অথবা যদি মনে করেন একটি গাইডলাইন পেলে কাজটি পারবেন, তবে আপনি ইউটিউব অথবা গুগলের সাহায্য নিন।

কোথায় পাবেন ফ্রিলেন্সিং কাজঃ

বর্তমান যুগ টেকনোলোজিকাল যুগ। বর্তমানে এমন বেশ কিছু ওয়েবসাইট আছে যার মধ্যে আপনি সহজেই ফ্রিলেন্সিং এঁর কাজ পেতে পারেন শুধু তা নয় আপনি নিজের কাজে রেইট এবং নিজের প্রোফাইল নিজেই গুছিয়ে নিতে পারেন। আপনার ক্লায়েন্টের কাজের শেষে যেই টাকা তারা দিবে তা আপনি অনেক সহজেই নিজের ব্যাংকে ট্রান্সফার করে নিতে পারেন। টাকা পাওয়ার ঝামেলা থাকবে না কোন প্রকারেরই।

সম্মানীঃ

আপনার কাজের সম্মানী আপনার অর্জন। একজন দক্ষ ফ্রিলেন্সার হিসেবে নিজের সম্মানী ঠিক করে নির্ধারন করবেন। সবসময় নিজের সম্মানীটা চাওয়ার সময় নিজেকে ক্লায়েন্টের স্থানে রেখে একবার ভেবে দেখুন। অতিরিক্ত সম্মানী চাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

আপনার কাজ আপনার পরিচয়। মনে রাখবেন একজন ফ্রিলেন্সার নিজের বস নিজেই, আপনি নিজের কাজের মাধ্যমে নিজেকে পরিচিত করে তুলুন। নিজের কাজের মাধ্যমে ক্লায়েন্টকে সন্তুষ্ট করুন। এবং ক্লায়েন্টের সাথে একটী দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্ক যাতে তৈরী হয় সেটি খেয়াল রাখুন।

একজন ফ্রিলেন্সার হিসেবে আপনার যাত্রা শুভ হোক।

আরো পড়ো

Level 1

আমি মাসরুর মুয়াম্মার। Chief Administrative Officer, Quick Supply BD, Dhaka। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 5 বছর 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 4 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস