আধুনিক সমরপ্রযুক্তির বিস্ময়কর আবিষ্কারঃ পাইলটবিহীন ড্রোন বিমান

পাইলটবিহীন বিমান (UAV) বা ড্রোন বিমান আধুনিক সমরপ্রযুক্তির এক অনন্য সংযোজন। দিবা-রাত্রি শত্রু দেশের আকাশসীমায় গুপ্তচরবৃত্তি চালানো, নিজ দেশের আকাশসীমা পাহারা দেয়া, আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ, শত্রুদের বেতার ও রাডার সিস্টেমে ব্যাঘাত ঘটানো, আড়ি পেতে তথ্য যোগার করা থেকে শুরু করে প্রয়োজনে ছোটখাটো একটি যুদ্ধবিমানের ভুমিকাও পালন করতে পারে এই বিমান। এসব বিমান পাইলট বিহীন হওয়ায় যুদ্ধে পাইলটের মৃত্যুঝুকি থাকেনা তাই যেকোনো পরিস্থিতিতে এই ধরনের বিমান ব্যবহার করা যায়। বর্তমানকালের অনেক ড্রোন বিমান স্টিলথ প্রযুক্তির হওয়ায় খুব সহজেই এটি শত্রু দেশের রাডার সিস্টেম ফাঁকি দিয়ে তৎপরতা চালাতে পারে। তাই বর্তমান যুগে কার্যকর ও শক্তশালি বিমানবাহিনী এবং আকাশপ্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে ড্রোন বিমানের কোনও বিকল্প নেই। আসুন এবার জেনে নেয়া যাক বিশ্বের আলোচিত কয়েকটি ড্রোন বিমান সম্পর্কে।

  

RQ-170 Sentinel

আরকিউ-১৭০ সেন্সিয়াল মার্কিন বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান লকহিড মারটিন নির্মিত বর্তমান বিশ্বের সেরা ড্রোন বিমানগুলোর একটি। অত্যাধুনিক স্টিলথ ক্ষমতাসম্পন্ন এই বিমানটি মূলত রিকন অর্থাৎ শত্রু দেশের আকাশসীমায় নজরদারি করার জন্য তৈরি করা হয়েছে। রাডার ফাঁকি দিতে সক্ষম এই বিমানটির আকৃতি অনেকটা মার্কিন স্টিলথ বোম্বার বি-২ এর মত। এটি প্রায় ৫০,০০০ ফুট উপর দিয়ে উড়ে জেতে পারে। মার্কিন বিমানবাহিনীর সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি এই বিমানটি অপারেট করে থাকে। এটি ২০০৭ সালে মার্কিন বিমান বাহিনীতে নিয়োজিত হয়।একটি Garrett TFE731  অথবা  General Electric TF34 টার্বোফ্যান ইঞ্জিনে পরিচালিত এই বিমানটি আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও ইরানে পর্যবেক্ষণ ড্রোন হিসেবে অভিযান পরিচালনা করে আসছে। পাকিস্তানে ওসামা বিন লাদেন হত্যা মিশনেও এই বিমানটি অত্যন্ত সফলতার পরিচয় দিয়েছে। তবে ২০১১ সালের ডিসেম্বর মাসে ইরান আর্মির ইনটেলিজেন্ট ইউনিট একটি আরকিউ-১৭০ ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি করে এবং তাদের ধৃত বিমানটির ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করে।মার্কিন পক্ষ থেকে পরে তাদের এই ধরনের একটি বিমান হারানোর কথা স্বীকার করেছে।

MQ-1 Predator

এমকিউ-১ প্রিডেটর মার্কিন প্রতিষ্ঠানজেনারেল এটোমিক্স এরোনটিক্যালস নির্মিত একটি কমব্যাট  ড্রোন।মার্কিন বিমানবাহিনী এবং সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি এই ড্রোনটি ব্যবহার করে। এটি একি সাথে আকাশে গোয়েন্দাগিরি এবং কমব্যাট মিশনে সমান পারদর্শী। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ক্যামেরা ও সেন্সর সংবলিত এই ড্রোনটি ১০০০০ ফুট দূর থেকেই মানবদেহের হিট সিগনেচার শনাক্ত করতে পারে। এটি কন্ট্রোল ইউনিটের নির্দেশনা ও স্যাটেলাইটের সাহায্যে নির্ভুলভাবে লক্ষ্যস্থির করে মিসাইল হামলা চালায়।আফগানিস্থান, পাকিস্তান, ইরাক, ইরান, লিবিয়া ও সোমালিয়াসহ বিশ্বের অনেক স্থানে মার্কিন বাহিনী এটি ব্যবহার করে আশাতীত ফল লাভ করে। একটি  Rotax 914F  প্রপেলার ইঞ্জিনে চালিত এই  ড্রোনটি  ২৫০০০ ফুট উচ্চতায় উঠতে পারে এবং এর সর্বোচ্চ ঘণ্টায় গতি ২১৭ কিঃ মিঃ। দীর্ঘক্ষণ আকাশে ভেসে থাকার ক্ষমতা সম্পন্ন এই বিমানটি বিভিন্ন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র বহন করে। সাম্প্রতিক সময়ে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে এই ধরনের ড্রোন ব্যবহার করে বেসামরিক মানুষ হত্যার অভিযোগ উঠেছে। ২০১২ সালের নভেম্বর মাসে ইরানি বিমানবাহিনী তাদের আকাশসীমা থেকে একটি প্রিডেটর ড্রোনকে গোলাবর্ষণ করে  তাড়িয়ে দেয়। বর্তমানে ইউএস বিমানবাহিনীসহ ইতালি, মরক্কো, তুরস্ক ও আরব আমিরাত এই ড্রোনটি ব্যবহার করছে।

ScanEagle

                                                                       

 
স্ক্যানঈগল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বোয়িং ইনশিটু ডিফেন্স ইন্ডাস্ট্রির তৈরি একটি গোয়েন্দা ড্রোন। এর পরিচালন খরচ অনেক কম এবং দীর্ঘসময় ধরে ব্যবহার উপযোগী। মূলত মৎস্য শিকারিদের কাজে সাহায্য করার জন্য এটি তৈরি করা হলেও বর্তমানে মার্কিন আর্মি, নেভি ও বিমানবাহিনী বিভিন্ন গোয়েন্দা অভিযানে এটি ব্যবহার করে আসছে। নিয়মিতভাবে আপগ্রেড করে এটিকে বহুমুখী ব্যবহার উপযোগী করে তৈরি করা হয়েছে। এটি ২০০৫ সালে সর্বপ্রথম ইউএস নেভিতে অন্তর্ভুক্ত হয়।শক্তিশালী ইনফ্রারেড ক্যামেরা এবং NanoSAR Aরাডার সংবলিত এই ড্রোনটি আকাশে গোয়েন্দা অভিযানে এর কার্যকারিতা প্রমান করেছে।একটি ২ স্ট্রোক পিস্টন ইঞ্জিন সংবলিত এই ড্রোনটি  ১৬০০০ ফুট উচ্চতায় উঠতে পারে এবং গতি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১২৮ কিঃমিঃ । মার্কিন বাহিনী আফগানিস্তান ও ইরাক অভিযানে এই ড্রোন ব্যবহার করে।২০১২ সালের ৪ ডিসেম্বর ইরান তাদের আকাশসীমা থেকে এই ধরনের একটি ড্রোন আটক করার দাবি করেছে। যদিও মার্কিন বাহিনী তাদের এরকম কোন ড্রোন হারানোর কথা স্বীকার করেনি। যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও বর্তমানে অস্ট্রেলিয়া, পোল্যান্ড, নেদারল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, কানাডা, কলাম্বিয়া ইত্যাদি দেশ এই ড্রোনটি ব্যবহার করছে। ইরান সম্প্রতি স্ক্যানঈগল ড্রোনের অনুকরণে তাদের নিজস্ব ড্রোন তৈরির ঘোষণা দিয়েছে।

IAI Eitan

 
এইটান ইসরায়েলি এরোস্পেস ইন্ডাস্ট্রি নির্মিত একটি অত্যাধুনিক গোয়েন্দা ড্রোন বিমান। এটি মূলত ইসরায়েল নির্মিত হেরন (Heron) ড্রোনের একটি উন্নত সংস্করন। দীর্ঘ সময় আকাশে ভেসে থাকার ক্ষমতাসম্পন্ন এই ড্রোনটি কমব্যাট মিশনেও ব্যবহার উপযোগী। অটোম্যাটিক টেকঅফ-ল্যান্ডিং, উন্নত এভিয়নিক এবং মাল্টিপল টার্গেট আইডেন্টিফাইং ক্ষমতাসম্পন্ন এই ড্রোন বিমানটি বর্তমান বিশ্বের সেরা ড্রোন গুলোর মধ্যে অন্যতম। ২০০৭ সালে সার্ভিসে আসার পর থেকে ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর ইন্টেলিজেন্স ইউনিট এটি ব্যবহার করে আসছে। এছাড়া জার্মানি, ফ্রান্স, স্পেন ও ব্রিটেনে ইসরায়েল এই বিমান রপ্তানি করেছে। একটি  Pratt & Whitney PT6A ইঞ্জিন সংবলিত এই বিমানের সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ২০৭ কিঃমিঃ এবং সার্ভিস সিলিং রেট ৪৫,০০০ ফুট। একটি রিপোর্ট থেকে জানা যায় ২০০৯ সালে সুদান থেকে গাজা অভিমুখি একটি ইরানি সামরিক কনভয়ের উপর এয়ার স্ট্রাইকে এই ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছিল।


IAI Harpy


হারপি ইসরায়েল এরোস্পেস ইন্ডাস্ট্রি (IAI) নির্মিত একটি আনম্যানড কমব্যাট এরিয়াল ভিহিকল (UCAV) । এই ড্রোনটি একইসাথে কমব্যাট এবং রিকন দুই ধরনের মিশনেই অংশ নিতে পারদর্শী। মূলত শত্রু দেশের রাডার সিস্টেমে ঝটিকা আক্রমন করার জন্য এই ড্রোনটি তৈরি করা হলেও এটি গোয়েন্দাগিরিসহ বহুমুখী কাজে ব্যবহার উপযোগী। এটি অনেক উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বিস্ফোরক বহন করতে পারে। ২০০৪ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গণচীনের কাছে এই ধরনের ড্রোন রপ্তানি করতে বাধা দিয়েছিল। কারন তাদের ধারনা, এই ড্রোনে মার্কিন অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে যা চীনের কাছে চলে যাওয়ার আশংকা থাকে। কিন্তু ইসরায়েল মার্কিন দাবি নাকচ করে দিয়ে জানায়, এটি সম্পূর্ণভাবে ইসরায়েলি প্রযুক্তিতে নির্মিত এবং ইসরায়েল তাদের এই বিমান রপ্তানি করার অধিকার রাখে। একটি  UEL AR731 Wankel rotary ইঞ্জিনে পরিচালিত এই ড্রোনটির সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ১৮৫ কিঃমিঃ । এটি প্রায় ৩২ কেজি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন বিস্ফোরক বহন করতে পারে। বর্তমানে ইসরায়েল ছাড়াও চিলি, দক্ষিন কোরিয়া, গণচীন, ভারত, তুরস্ক ইত্যাদি দেশ এই ড্রোন ব্যবহার করে।



SELEX Galileo Falco

ফ্যালকো ইটালির  SEGaliLEX leo Avionica নির্মিত একটি পর্যবেক্ষণ ইউএভি। এটি মূলত গোয়েন্দা নজরদারির জন্য বিশেষভাবে নির্মিত হয়েছে। অত্যাধুনিক ইনফ্রারেড ক্যামেরা এবং সেন্সর সংবলিত এই ড্রোনটি অপেক্ষাকৃত মাঝারি উচ্চতায় আকাশে ভেসে থাকতে সক্ষম । এটি সাধারনত কোনও অস্ত্র বা মিসাইল ব্যবহার করেনা তবে এর পরবর্তী আপগ্রেড ভার্সন গুলোতে কমব্যাট উইপন সংযোজন করা হবে। এটি ১৭ ফুট লম্বা এবং ২৪ ফুট চওড়া একটি বিমান যা অপেক্ষাকৃত মাঝারি উচ্চতায় আকাশ থেকে নজরদারি চালাতেপারে । সিঙ্গেল ইঞ্জিনে পরিচালিত ড্রোনটি ঘণ্টায় ২১৬ কীঃমিঃ বেগে চলতে পারে এবং এর সার্ভিস সিলিং রেট ২১,৩২৫ ফুট। এটি প্রায় ৭০ কেজি বোমা বহনে সক্ষম যদিও বর্তমান ভার্সন গুলোতে কোনও যুদ্ধাস্ত্র সংযোজন করা হয়নি। উন্নতমানের AESA synthetic aperture radar (SAR) রাডার সংবলিত এই ড্রোনটি ইটালি, পাকিস্তান, লিবিয়া, জর্ডান ও সৌদি আরবের সামরিক বাহিনী ব্যবহার করছে।




TAI Anka

আনকা তুরস্কের এরোস্পেস ইন্ডাস্ট্রি নির্মিত একটি অত্যাধুনিক নজরদারি ড্রোন বিমান। মূলত একটি পৌরাণিক জীবের নামে এই ড্রোনটি নামকরণ করা হয়েছে। এটি মধ্যম উচ্চতায় দীর্ঘক্ষণ আকাশে টহল দিতে সক্ষম। আনকা ড্রোনের নির্মাণের মাধ্যমে তুরস্ক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের পরে ৩য় দেশের মর্যাদা পেল যারা  MALE UAV  নির্মাণ করতে পারে। এই ধরনের ড্রোনের বৈশিষ্ট্য হল এরা দীর্ঘক্ষণ আকাশে ভেসে থাকতে সক্ষম। অত্যাধুনিক ইনফ্রারেড ইলেকট্রো অপটিক ক্যামেরা, সেন্সর, সিনথেটিক এপারেচার রাডার ও অন্যান্য বহুবিধ প্রযুক্তি সংবলিত এই  ড্রোনটি তুরস্কের সামরিক সক্ষমতাকে আরও বাড়িয়ে দেবে। একটি Thielert Centurion ইঞ্জিনে চালিত এই ড্রোন ৩০,০০০ ফুট অবধি উচ্চতায় উঠতে পারে এবং এর সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ২১৭ কিঃমিঃ । এটি শীঘ্রই তুরস্কের সামরিক বাহিনীতে যুক্ত হবে বলে জানা গেছে।  মিশর সম্প্রতি এরূপ কয়েকটি ড্রোন কেনার জন্য তুরস্কের সাথে চুক্তি করেছে। এছাড়াও সৌদি আরবও এই ড্রোন কেনার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।




Shahed 129

শাহেদ ১২৯ ইসলামিক রিপাবলিক ইরান নির্মিত অত্যাধুনিক কমব্যাট ড্রোন।  এটি ইরান নির্মিত প্রথম   MALE  ইউএভি বা ড্রোন  বিমান। এটি একাধারে আকাশে গোয়েন্দাগিরি এবং কমব্যাট উভয় ধরনের মিশনেই সমান পারদর্শী। ইরানের মালিক আসতার এভিয়েশন বিশ্ববিদ্যালয় এবং শাহেদ এভিয়েশন এন্ড রিসার্চ ইন্সটিটিউটের ডিজাইনকৃত এই ড্রোনটি নির্মাণ করেছে ইরানের সর্ববৃহৎ বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠানHESA । গ্রেট প্রফেট সেভেন সামরিক মহড়ার সময় এই ড্রোনটি সর্বপ্রথম উন্মোচিত করা হয়। ২০১২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ইরান এই ড্রোন নির্মাণের কথা ঘোষণা দেয়।  এটি ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় আকাশে ভেসে থাকতে পারে এবং  সর্বোচ্চ ২০০০ কিলোমিটার ব্যাপী বিস্তৃত এলাকায় অপারেশন চালাতে পারে। ইরানের ঘোষণা অনুযায়ী এতে ইরান নির্মিত ব্রিটিশ ডিজাইনের Wankel ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে। এই ড্রোনটি ইরানি  Sadid-1 মিসাইল বহন করে থাকে। এটি ১০ মিটার লম্বা এবং ডানার বিস্তৃতি ২০ মিটার। শীঘ্রই এটি ইরানের সামরিক বাহিনীতে যুক্ত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।


Karrar 

কারার ইসলামিক রিপাবলিক ইরান নির্মিত অত্যাধুনিক কমব্যাট ড্রোন।পার্সিয়ান কারার(karrar) শব্দের অর্থ আক্রমণকারী। এটি ইরানে তৈরি প্রথম লং রেঞ্জ কমব্যাট ক্যাপাবল ড্রোন যা অত্যন্ত দ্রুতগতিতে লক্ষ্যবস্তুতে ঝটিকা হামলায় পারদর্শী। এটি প্রথম আকাশে ওড়ে ২০০৯ সালে এবং ২০১০ সালের ২৩ আগস্ট ইরানের প্রেসিডেন্ট ডঃ আহমাদিনেজাদ এই ড্রোন নির্মাণের ঘোষণা দেন । ইরানের স্টেট টেলিভিশনে দেয়া ঘোষণা অনুযায়ী,এর কমব্যাট রেঞ্জ ১০০০ কিলোমিটার । এর মাধ্যমে ১১৫ কেজি বোমা অথবা  ২২৭ কেজি  precision-guided munition বহন করা যায়। এটি ৪টি Kowsar এন্টি-শিপ মিসাইল ও বহন করতে পারে। এটি আকাশে ওড়ার জন্য রকেট অ্যাসিস্ট সিস্টেম ব্যবহার করে। এই ড্রোনটি ৪ মিটার লম্বা । একটি ইরানিয়ান Toloue-4 সিঙ্গেল এঞ্জিনে তৈরি এই ড্রোনের সর্বোচ্চ  গতি ঘণ্টায় ৯০০ কিঃমিঃ। সর্বাধুনিক প্রযুক্তির কারার ড্রোন ইরানের সামরিক বাহিনীর সক্ষমতা আরও সুদৃঢ় করবে বলে ইরানি সামরিক বিশেষজ্ঞরা আশা প্রকাশ করেন।

SAGEM SPERWER-B

সাজেম স্পারওয়ার ফ্রান্সভিত্তিক ইলেক্ট্রোনিক ফার্ম সাজেম নির্মিত একটি রিকন ও কমব্যাট ইউএভি। এটি আকাশে একইসাথে গোয়েন্দাগিরি এবং কমব্যাট উভয় মিশনেই সমান পারদর্শী। প্রায় ১২ ঘণ্টাব্যাপী একনাগাড়ে আকাশে ভেসে থাকাতে পারে এই ড্রোনটি। প্রায় ১০০ কেজি বিস্ফোরক বহন ক্ষমতাসম্পন্ন এই ড্রোনে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ইলেক্ট্রো-অপটিক ইফ্রারেড সেন্সর, কমুনিকেশন ইন্টেলিজেন্স টেকনোলজি, এসএআর রাডার সংযোজিত হয়েছে। এটিRafale Spike-LR ধরনের এন্টি-ট্যাংক মিসাইল বহন করে থাকে। একটি SNECMA  ইঞ্জিনে চালিত এই  ড্রোন ক্রুজ স্পীডে প্রায় ১৬০০০ ফুট উপর দিয়ে উড়ে যেতে সক্ষম । বর্তমানে ফ্রান্স, নেদারল্যান্ড, সুইডেন, গ্রীস, ও কানাডার সামরিক বাহিনী এই বিমানটি ব্যবহার করে ।

তথ্যসূত্রঃ  ১. উইকিপিডিয়া

২. প্রেসটিভি

টেকটিউনসে এটি আমার তৃতীয় টিউন। আপনাদের ভালো লাগলে ভবিষ্যতে ইনশাআল্লাহ আরও অনেক তথ্যবহুল টিউন আপনাদের উপহার দেয়ার চেষ্টা করব। এরকম আরও অনেক প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য জানতে ঘুরে আসতে পারেন আমার ব্লগ  http://www.innovativetechidea.blogspot.com এ।   সবাই ভালো থাকবেন।  ধন্যবাদ।  (লেখাটি পূর্বে আমার এই ব্লগে প্রকাশিত হয়েছে। লেখকের অনুমতি ছাড়া এই লেখা হুবুহু বা আংশিক নকল করে প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকুন)

Level 0

আমি innocentgreen। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 2 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 4 টি টিউন ও 22 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

আসসালামু আলাইকুম বন্ধুরা, আমি মাহমুদ হাসান কিশোর। আমি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে এ পড়ছি। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির নতুন নতুন আবিস্কারগুলো ছোটবেলা থেকেই আমাকে মুগ্ধ করত। তাই সবসময় চেষ্টা করতাম এই বিষয়ে নতুন কিছু জানার।এই ব্লগে আমার সেই প্রিয় বিষয়গুলো আপনাদের সাথে আলোচনা করার চেষ্টা করব। সবাই ভালো থাকবেন।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

অসাধারণ টিউনস, অনেক ভালো লাগল। +++++++++++++++++

Level 0

Good

এমন টিউন অনেক দিন ধরে পাইনা। অনেক অনেক ধন্যবাদ সুন্দর টিউনটির জন্য।

    @মোহাম্মদ খালিদ হোসাইন: অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই। আপনাদের উৎসাহ পেলে ইনশাআল্লাহ এমন আরও অনেক টিউন উপহার দেয়ার চেষ্টা করব। ভালো থাকবেন। 🙂

খুব ভালো লাগলো। ধ্বংশ করার একটি উপকরণ মাত্র। আমি ঘৃণা করি এটিকে। দেখলে খুব ভয় লাগে। মনে হয় এটি শুধু মানুষ মারার জন্য তৈরী করা হয়েছে।

    @omur_mohammad_faruk: ধন্যবাদ ভাই। আপনি ঠিকই বলেছেন। এই বিমান দিয়ে আফগানিস্তান এবং পাকিস্তানে অনেক নিরীহ মানুষ মারা হয়েছে। কিন্তু ভাই এখানে প্রযুক্তির দোষ কোথায় ? আমরা মানুষরাই তো প্রযুক্তিকে ব্যবহার করি অন্য মানুষকে মারার জন্যে । যুদ্ধ ছাড়াও নিজ দেশের সীমান্ত পাহারা দেয়া, আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ ইত্যাদি অনেক শান্তিপূর্ণ কাজে আমরা এগুলোকে ব্যবহার করতে পারি ।