কুইক চার্জিং প্রযুক্তি কি? ১৫ মিনিটে স্মার্টফোন ব্যাটারি ফুল চার্জ! – অবশ্যই বিস্তারিত টিউন!

কুইক চার্জিং বা ফাস্ট চার্জিং বা টার্বো চার্জিং এর কথা আপনারা নিশ্চয় শুনেছেন। অনেকে হয়তো একটা কুইক চার্জার বাজার থেকে কিনেও ফেলেছেন ইতিমধ্যে। আজকের এই টিউন এ আমি কুইক চার্জিং প্রযুক্তি নিয়ে আলোচনা করবো।

প্রথমেই একটা কথা বলে নেয়। যেসকল কোম্পানি কুইক চার্জার, ফাস্ট চার্জার বা টার্বো চার্জার তৈরি করে এবং বিক্রি করে সেগুলোর মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। অর্থাৎ সেই কুইক চার্জারটি স্যামসাং এর হোক বা অন্য কোনো কোম্পানির, সব চার্জার এ একই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। মনে করুন আপনি স্যামসাং এর ফোন ব্যবহার করছেন। কোনো কারনে আপনার চার্জারটি নষ্ট হয়ে গেলো, তারপর যে আপনাকে স্যামসাং এর ই চার্জার কিনতে হবে তা না। আপনি আপনার ফোন এবং ব্যাটারির পাওয়ার এর উপর মিল রেখে যেকোনো চার্জার কিনতে পারেন। এতে আপনার ফোন এর বা ফোন ব্যাটারির কোনো সমস্যা হবে না।

কুইক চার্জিং প্রযুক্তির কি এবং এর বিবর্তন

আজ থেকে ৫ অথবা ৬ বছর পেছনে তাকালে দেখতে পাওয়া যাবে যে তখনকার মোবাইল ফোন এ ব্যবহৃত ব্যাটারির পাওয়ার ধারন ক্ষমতা অনেক কম ছিল। যেহেতু ব্যাটারির পাওয়ার ধারন ক্ষমতা অনেক কম ছিল তাই ব্যাটারি চার্জ করা সময় নিয়ে তেমন মাথাব্যাথা ছিল না। তাছাড়া আমারা তখন ফোনকে এতোটা ব্যবহার ও করতাম না। তাই আমারা সাধারন চার্জিং প্রযুক্তি নিয়েই খুশি ছিলাম।

কিন্তু যেভাবে যেভাবে দিন চলে গেছে সেভাবে সেভাবে ফোন এর ব্যবহার ও বেড়ে গেছে। মোবাইল ফোন এ এখন অনেক শক্তিশালী যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয়, এবং মোবাইল ফোন ব্যবহার করার সময় ও বেড়ে গেছে আগের চেয়ে অনেক গুনে। এখন অনেক শক্তিশালী ব্যাটারি ব্যবহার করা হয় ফোন এ। কিন্তু সমস্যা হলো চার্জিং টাইম এখনো সেই আগের মতোই আছে।

এই সমস্যা দূর করার জন্য কোয়ালকম “কুইক চার্জ ১.০” প্রযুক্তির আবিস্কার করেছিলো। এই প্রযুক্তিতে চার্জিং আইসি বেশি পাওয়ার গ্রহন করে এবং ব্যাটারিকেও দ্রুত চার্জ করতে সাহায্য করে। কুইক চার্জ ১.০ এর মাধ্যমে ৩০ মিনিটে একটি ৩,০০০ এমএএইচ ব্যাটারি ৩০% পর্যন্ত চার্জ হতে পারতো। এর পর আসলো কোয়ালকম “কুইক চার্জ ২.০” প্রযুক্তি। এই প্রযুক্তি এসেছিলো কোয়ালকম এর নতুন প্রসেসর এর সাথে। এই প্রযুক্তিতে ৩০ মিনিটে একটি ৩,০০০ এমএএইচ ব্যাটারি ৫০% থেকে ৬০% পর্যন্ত চার্জ করা সম্ভব ছিল।

এখন কথা বলি সর্বশেষ কোয়ালকম “কুইক চার্জ ৩.০” প্রযুক্তি সম্পর্কে। দেখুন একটি সাধারন চার্জার এ অর্থাৎ যে চার্জার আমরা অনেক আগেও ব্যবহার করেছি, সেখানে যে আউটপুট পাওয়ার ছিল তা হলো ৫ ভোল্ট x ১ অ্যাম্পিয়ার অর্থাৎ ৫ ওয়াট। তারপরে যখন কুইক চার্জ ১.০ প্রযুক্তি আসলো তখন আউটপুট পাওয়ার ছিল ৫ ভোল্ট x ২ অ্যাম্পিয়ার অর্থাৎ ১০ ওয়াট এর চার্জার। কিন্তু কুইক চার্জ ২.০ প্রযুক্তিতে নির্দিষ্ট আউটপুট পাওয়ার ছিল না। কুইক চার্জ ২.০ প্রযুক্তিতে আউটপুট পাওয়ার নির্ভর করে বর্তমান ব্যাটারি লেভেল এর উপর। ২.০ প্রযুক্তিতে আউটপুট পাওয়ার হয় ৫ ভোল্ট x ২ অ্যাম্পিয়ার = ১০ ওয়াট অথবা ৯ ভোল্ট x ২ অ্যাম্পিয়ার = ১৮ ওয়াট অথবা ১২ ভোল্ট x ১.৬৭ অ্যাম্পিয়ার = ১৮ ওয়াট এর। অর্থাৎ সর্বাধিক আউটপুট পাওয়া যায় ১৮ ওয়াট এবং সবনিম্ন ১০ ওয়াট। এবং এই আউটপুট পাওয়ার গুলো ব্যাটারি লেভেল এর উপর ভিত্তি করে পরিবর্তন করতে থাকে। যেকোনো স্মার্টফোন এর ব্যাটারি ০% থেকে ১০০% পর্যন্ত একই ভাবে চার্জ হয় না। আপনি হয়তো লক্ষ করলে দেখবেন যে আপনার ফোনটি শুরুতে অনেক তাড়াতাড়ি চার্জ হয়, কিন্তু ৫০% বা তার বেশি চার্জ হয়ে যাওয়ার পরে চার্জ হওয়ার গতি কমে যায়।

যখন আপনার ফোনটি প্রথম চার্জ হতে শুরু করে তখন ব্যাটারিটি একদম খালি থাকায় অনেক দ্রুত চার্জ গ্রহন করে। কিন্তু ধিরেধিরে যখন চার্জ হতে থাকে তখন ব্যাটারিটি কম পাওয়ার গ্রহন করতে লাগে। ৯০% এর পরে ব্যাটারি চার্জ গ্রহন করা আরো বেশি কমিয়ে দেয়। কুইক চার্জিং প্রযুক্তি “কুইক চার্জ ২.০” তে ব্যাটারির প্রয়োজন অনুসারে চার্জ হতে থাকে। মনে করুন ০% থেকে ৫০% পর্যন্ত ১৮ ওয়াট চার্জ সরবরাহ করে, কেনোনা ্তখন ব্যাটারিটি বেশি পাওয়ার গ্রহন করে। তারপর ৫০% এর পরে ১০ ওয়াট পাওয়ার সরবরাহ করে, কারন ধিরেধিরে ব্যাটারি কম পাওয়ার গ্রহন করে। তাই এই ব্যাটারির পাওয়ার কম বেশির উপর নির্ভর করে “কুইক চার্জ ২.০” তার আউটপুট পাওয়ার ও কম বেশি করতে থাকে।

এখন কোয়ালকম তার সর্বশেষ প্রযুক্তি “কুইক চার্জ ৩.০” তে ৩.৬ ভোল্ট থেকে শুরু করে ১২ ভোল্ট পর্যন্ত ২০০ মিলিভোল্ট ক্রমবর্ধন করে চার্জ করতে পারে। “কুইক চার্জ ২.০” তে ৫ থেকে ৯ তারপর ১২ ভোল্ট এর ক্রমবর্ধন ছিল। অর্থাৎ চার্জিং পাওয়ার ১২ ভোল্ট থেকে সরাসরি ৯ ভোল্ট এবং ৯ ভোল্ট থেকে সরাসরি ৫ ভোল্ট এ নেমে আসতো। এর মাঝের ভোল্ট যেমন ৬,৭ বা ৮ ভোল্ট এর কোনো বাবস্থা ছিল না। কিন্তু কুইক চার্জ ৩.০ তে অনেক ধিরেধিরে স্মুত ভাবে ৩.৬ ভোল্ট থেকে শুরু করে ১২ ভোল্ট পর্যন্ত আউটপুট পাওয়ার ২০০ মিলিভোল্ট করে ক্রমবর্ধন হবে। এতে ২.০ এর মতো ১২ ভোল্ট থেকে ধপ করে ৯ ভোল্ট এ নেমে আসবে না। বরং ব্যাটারির প্রয়োজন অনুসারে অনেক ধিরেধিরে ভোল্ট কম বেশি করবে।

কুইক চার্জিং প্রযুক্তি “কুইক চার্জ ৩.০” ব্যাটারির চাহিদা অনুসারে চার্জ করে থাকে বলে আপনি ব্যাটারি চার্জিং এর এক সুন্দর ক্রম দেখতে পান, এবং ব্যাটারি দ্রুত চার্জ হয়। “কুইক চার্জ ৩.০” কোয়ালকম এর নতুন প্রসেসর গুলো যেমন ৪৩০, ৬১৭, ৬১৮, ৬২০ এবং ৮২০ এর সাথে দেখতে পাবেন। তাছাড়া কোয়ালকম এই প্রযুক্তি আলাদা কোম্পানিদেরও লাইসেন্স করে থাকে। যেমন স্যামসাং গ্যালাক্সি নোট ৫ এ কোয়ালকম এর “কুইক চার্জ ৩.০” প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু নোট ৫ এ এক্সিনস প্রসেসর ব্যবহার করা হয়েছে।

কুইক চার্জার

এখন যদি কথা বলি কুইক চার্জার নিয়ে তবে জেনে রাখুন বর্তমান বাজারে অনেক কুইক চার্জার কিনতে পাওয়া যায়। অনেক ৩য় পক্ষ কোম্পানি কুইক চার্জার বানিয়ে থাকে। এবং কোয়ালকম এদের প্রত্যয়িত করেছে যে, “হাঁ এই কুইক চার্জার সমূহ মান সম্পূর্ণ এবং এগুলো “কুইক চার্জ ৩.০” প্রযুক্তির সাথে ঠিকঠাক মানানসই”। এ জন্য আপনি যদি আপনার ফোন এর জন্য কুইক চার্জার কিনতে চান তাহলে এটা একদম জরুরী নয় যে ফোন এর ব্র্যান্ড এর সাথে মিল রেখে চার্জার কিনতে হবে। আপনি যেকোনো কুইক চার্জার ব্যবহার করেই কুইক চার্জিং প্রযুক্তির সুবিধা নিতে পারবেন। তবে আমি বলবো কুইক চার্জার কেনার আগে এর প্যাকেট এর গায়ে কোয়ালকম প্রত্যয়িত কিনা তা দেখে কিনুন। যদি কোয়ালকম প্রত্যয়িত হয়ে থাকে তবে কোন কোম্পানির চার্জার কিনেছেন তাতে কোনো যায় আসে না।

কুইক চার্জিং প্রযুক্তি নিয়ে কিছু ভুল ধারণা

কুইক চার্জিং প্রযুক্তি নিয়ে কিছু ভুল ধারণা অনেকের মাঝে আছে, তো চলুন ভুল ধারণা গুলো ভাঙ্গানোর চেষ্টা করি।

  • অনেকে মনে করেন যে কুইক চার্জার ব্যবহার করলে ব্যাটারি নষ্ট হয়ে যাবে। জী না। এটি একদম ভুল ধারণা। কুইক চার্জার কখনোয় আপনার ফোন এ জোর করে পাওয়ার দিয়ে দেবে না। এটি ব্যাটারির লেবেল অনুসারেই চার্জ করবে। এমনটা না যে চার্জ দ্রুত হচ্ছে বলে ব্যাটারি ব্লাস্ট হয়ে যাবে।
  • অনেকে মনে করেন যে একটি কুইক চার্জার কিনলেই আপনার ফোন এ কুইক চার্জিং শুরু হয়ে যাবে। আসলে আপনার ফোন এ শুধু মাত্র কুইক চার্জিং প্রযুক্তি থাকলেই আপনি কুইক চার্জার এর মাধ্যমে ফাস্ট চার্জিং করতে পারবেন। আর তা না হলে কুইক চার্জার এর কোনো লাভ আপনি পাবেন না।
  • অনেকে মনে করেন যে, আমার ফোন কুইক চার্জিং সমর্থন করে তাই স্লো চার্জিং ব্যবহার করলে ব্যাটারির সমস্যা দেখা দেবে। আসলে এটাও ঠিক নয়। আপনি যেকোনো সাধারন চার্জার ব্যবহার করতে পারেন। অথবা আপনার ল্যাপটপ দিয়েও চার্জ করতে পারেন। এতে আপনার ব্যাটারির কোনো সমস্যা হবে না।

১৫ মিনিটে স্মার্টফোন ব্যাটারি ফুল চার্জ

এতক্ষণে নিশ্চয় কুইক চার্জিং নিয়ে অনেক কিছু জেনে ফেলেছেন। আমাদের ফোন এর সবকিছুই ভালো হয় কিন্তু আমরা ভালো ব্যাটারি লাইফ পাই না। এ জন্য আমরা চাই যে আমাদের ফোন যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব চার্জ করতে পারি। আমি প্রথমেই সৎভাবে একটা বিষয় পরিষ্কার করে দিচ্ছি যে, আমি এখানে কোনো ট্রিক বলতে যাচ্ছি না যার সাহায্যে আপনি আপনার বর্তমান ফোনটি ১৫ মিনিটে ফুল চার্জ করতে পারবেন। আমি এখন আপনাদের এর নতুন প্রযুক্তির কথা বর্ণনা করতে চলেছি যেটা “কুইক চার্জ ৩.০” এর চেয়েও বেশি উন্নত। এবং আপনার ফোন ১৫ মিনিটে ফুল চার্জ হয়ে যাবে।

হাঁ, বন্ধুরা এখন ১৫ মিনিটে স্মার্টফোন ব্যাটারি ফুল চার্জ হবে। গত ২-৩ বছরে মোবাইল নির্মাতা কোম্পানি গুলোর ভেতর কুইক চার্জিং প্রযুক্তি নিয়ে বেশ ভালো প্রতিযোগিতা চলে আসছে। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন কুইক চার্জিং প্রযুক্তি আবিস্কার করছে বিভিন্ন কোম্পানি এবং সেগুলোকে বিভিন্ন আঙ্গিকে নিয়ে আসছে বাজারে। অপো (OPPO) নামের এক মোবাইল নির্মাতা কোম্পানি ২০১৪ সালে ভুক (VOOC) নামক এক প্রযুক্তি নিয়ে আসে। যেটি অপো এর নিজের প্রযুক্তি। ভুক প্রযুক্তিতে ৩০ মিনিটে একটি ৩,০০০ এমএএইচ ব্যাটারি ৭০%-৭৫% চার্জ করা সম্ভব হতো। এরপর অপো যতোগুলো ফোন বাজারে রিলিজ করেছিলো প্রায় সব ফোন গুলোতেই ভুক প্রযুক্তির ব্যবহার দেখা গেছিলো।

কুইক চার্জিং প্রযুক্তির কথা বলতে গেলে বলতে হয় কোয়ালকম এর কুইক চার্জ ১.০, কুইক চার্জ ২.০ এবং কুইক চার্জ ৩.০ এর কথা। কুইক চার্জ ৩.০ বর্তমানে সর্বশেষ প্রযুক্তি কোয়ালকম এর পক্ষ থেকে। আমি এই টিউন এই তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি উপরে। এখন মজার ব্যাপার হচ্ছে ২-৩ দিন আগে অপো কোম্পানিটি তার ভুক নামক প্রযুক্তিটিকে সুপার ভুক (Super VOOC) নামে নতুন করে রিলিজ করেছে। যার মাধ্যমে কিনা একটি ২,৫০০ এমএএইচ ব্যাটারি মাত্র ১৫ মিনিটে ফুল চার্জ করা সম্ভব হবে। হে আল্লাহ্‌…। চমৎকার ব্যাপার না? হাঁ, অবশ্যই। শুধু তাই না অপো বলেছে আপনি যদি আপনার ফোনটিকে শুধু ৫ মিনিট চার্জ করেন তবে তা ৪৫% চার্জ হয়ে যাবে।

এখন আপনারা তো জানেনই যে কুইক চার্জিং প্রযুক্তি কীভাবে কাজ করে? অর্থাৎ যদি কোয়ালকম এর প্রযুক্তির দিকে তাকানো হয় তবে দেখতে পাওয়া যায় যে, এই প্রযুক্তিতে আউটপুট পাওয়ার কম বেশি হতে থাকে। কখনো ৫ ভোল্ট তো আবার কখনো ৯ ভোল্ট। কিন্তু সুপার ভুক প্রযুক্তি সম্পূর্ণ আলদা ধারণা ব্যবহার করেছে। সুপার ভুক প্রযুক্তিতে ভোল্টেজ বা কারেন্ট কম বেশি হবে না। এটি শুধু মাত্র ৫ ভোল্ট এই কাজ করে। দেখুন শুধু ৫ ভোল্ট এ কাজ করার জন্য একে কারেন্ট কমবেশি করতে হয় না। এবং এই অপরিবর্তনীয় ভোল্টেজ নিয়ে সুপার ভুক প্রযুক্তিতে এরা দ্রুত ব্যাটারি চার্জ করার পদ্ধতি আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছে।

এই বছরে অপো এর নতুন ফোন গুলোর সাথে সুপার ভুক প্রযুক্তি দেখতে পাওয়া যাবে। এটি নিস্যন্দে চমৎকার একটি প্রযুক্তি। আপনি চিন্তা করতে পারছেন, মাত্র ১৫ মিনিটে স্মার্টফোন ব্যাটারি ফুল চার্জ হয়ে যাবে? এ প্রযুক্তি নিয়ে কিছু ধারণা পরিষ্কার করা দরকার। চলুন আলোচনা করি।

  • প্রথমত ১৫ মিনিট এ চার্জ হলেও এতে ব্যাটারির কোনো ক্ষতি হবে না। এটি একদম নিরাপদ প্রযুক্তি।
  • দ্বিতীয়ত কুইক চার্জিং প্রযুক্তিতে হালকা ব্যাটারি গরম হয়, কিন্তু সুপার ভুক প্রযুক্তিতে ১৫ মিনিটে চার্জ হওয়ার পরেও খুব বেশি ব্যাটারি গরম হবে না। ব্যাটারি গরম শুধু ৩.৩% ই বেশি হতে পারে। মানে আপনার ফোন কুইক চার্জিং প্রযুক্তিতে চার্জ করার জন্য যদি ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস গরম হয় তবে সুপার ভুক প্রযুক্তিতে ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস  গরম হতে পারে। যেটা একেবারেই স্বাভাবিক।
  • তৃতীয়ত চার্জিং করার সময়ও আপনি আপনার ফোনটিকে অনেক আরামে ব্যবহার করতে পারবেন। এতে কোনো সমস্যা হবে না।
  • অপো বলেছে এই প্রযুক্তির জন্য আলাদা ভাবে আপনার ফোন এ বিশেষ ৫ টি যন্ত্র লাগানো থাকবে। ফোন এর ভেতর এক বিশেষ ফিউজ লাগানো থাকবে এবং চার্জার এর ভেতর ফিউজ এবং স্টেবিলাইজার লাগানো থাকবে যাতে করে আপনার ফোনটি সর্বদা সুরক্ষিত থাকবে। এবং আপনাকে সর্বাধিক কর্মক্ষমতা দিয়ে সক্ষম থাকবে।
  • সুপার ভুক প্রযুক্তি যে স্মার্টফোন গুলোতে ব্যবহার করা হবে তার চার্জার ও ভুক এর হবে এবং এতে এক বিশেষ ক্যাবল লাগানো থাকবে। তাছাড়া স্মার্টফোনের যে কানেক্টর থাকবে সে Micro-USB হোক আর USB-C টাইপ হোক তা মিলিটারি গ্রেড এর হবে। এতে কানেক্টরটি অধিক পাওয়ার এবং তাপমাত্রা সহন করতে পারবে।

এই প্রযুক্তিটি একেবারেই নতুন। দেখা যাক সামনে আরো কি দেখা যায়। তবে ১৫ মিনিটে একটি ২,৫০০ এমএএইচ ব্যাটারি ফুল চার্জ করার এই প্রযুক্তিটি কিন্তু একে বারেই অনন্য। স্মার্টফোন জগতের দিকে খেয়াল করলে দেখতে পাওয়া যাবে যে অন্যান্য যন্ত্রাংশের পাশাপাশি ব্যাটারি প্রযুক্তি কিন্তু খুব একটা উন্নত হয় নি। আমরা আজকাল ৪ জিবি RAM বা ২০ মেগাপিক্সেলস এর ক্যামেরা ওয়ালা ফোন ব্যবহার করলেও ব্যাটারি প্রযুক্তি কিন্তু সেই আগেরই ব্যবহার করছি। তাই বর্তমানে ব্যাটারি চার্জ করার সময় কমিয়ে এবং ব্যাটারির পাওয়ার বাড়িয়ে ব্যাটারি প্রযুক্তিকে অন্যান্য যন্ত্রাংশের সাথে তালমেলানো হচ্ছে।

শেষ কথাঃ

 

তো বন্ধুরা, আজ এই পর্যন্তই ছিল আজকের আলোচনা। আশাকরি আপনারা অনেক কিছু জানতে পেড়েছেন। আমি সর্বদা আপনাদের সামনে নতুন নতুন প্রযুক্তি নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করবো। তাছাড়া এই টিউন টি শেয়ার করতে ভুলবেন না।

এই রকম এবং আরো হার্ডকোর টেকনলজি টিউন পড়তে আমার বাংলা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সাইট টি ঘুরে আসতে ভুলবেন না। আশা করি চরম লাগবে। যাই হোক, ভালো থাকুন।

পূর্বে প্রকাশিতঃ Techubs

Level 6

আমি তাহমিদ বোরহান। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 9 বছর 7 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 177 টি টিউন ও 680 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 43 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।

আমি তাহমিদ বোরহান। টেক নিয়ে সারাদিন পড়ে থাকতে ভালোবাসি। টেকটিউন্স সহ নিজের কিছু টেক ব্লগ লিখি। TecHubs ব্লগ এবং TecHubs TV ইউটিউব চ্যানেল হলো আমার প্যাশন, তাই এখানে কিছু অসাধারণ করারই চেষ্টা করি!


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

ভাই, এই চার্জার কোথায় পাবো, আর স্যামসাং এর জন্য কি পাবো