টেকটিউনস টপটিউনার কনক্লেভ সম্পর্কিত জাকির ভাইয়ের টিউনে ঘুমে কাতুর ভাই একটা কমেন্ট করেছেনঃ
দেশের নক্ষত্র আপনারাই হতে পারেন। আপনারাই হতে পারেন ভবিষ্যতের বিল গেটস কিংবা স্টিভ জবস্। দেশের জন্য কিছু ভাই। আজকাল প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলেই উন্নত বির্শ্বের এরা এতো দ্রুত এগিয়ে গিয়েছে। আমাদের আশা আপনারা এমনকিছু আবিষ্কার করবেন যে বিশ্ব অবাক বিশ্চয়ে আমাদের দিকে তাকিয়ে থাকবে। ভাই এখনই সময়। আপনারাই পারবেন। আমার দৃঢ় বিশ্বাস। একটু দেশের কথা চিন্তা করেন। আপনারা ছাড়া কি আর কেউ আছে। এতগুলো মেধাবী মুখ একসাথে হয়েছেন উচিত নয় কি কিছু একটা করে দেখানো। সেটা যে কোন দিকেই হতে পারে। তথ্য প্রযুক্তিতে আমাদের পিছিয়ে থাকলে চলবে না। প্রযুক্তির হাওয়ায় আমাদেরও গা ভাসাতে হবে। সেই দিন আর বেশি দূরে নয় যেদিন প্রত্যন্ত গ্রামগঞ্জেও প্রযুক্তির ব্যবহারে নির্ভরশীল হয়ে ওঠবে। প্রত্যাশার রইলাম আমরা সবাই। ধন্যবাদ।
আমি এই কমেন্টের সাথে ২০০% একমত। আর একমতের পরিমাণটা একটু বেশি হওয়ায় সম্পূর্ণ আলাদা একটি টিউন করতে বসলাম।
বর্তমান সময়টি হচ্ছে প্রযুক্তির সময়। চারিদিকে প্রযুক্তি নিয়ে হৈ চৈ আর মাতামাতি। যে যত বেশি প্রযুক্তিকে আগলে ধরে এর যথাযথ লালন করছে, সে ততই এগিয়ে যাচ্ছে। এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বাংলাদেশের কথাটাই ধরুন, আমাদের দেশ প্রযুক্তির ব্যাবহার ও লালনে কতটুকু সফল। অনেকেই বলবেন, আমরা অনেক এগিয়ে গেছি। আসলেই কি তাই? আমাদের মেধা ও মননের যে মান, তাতে কি আমরা সেভাবে সফলতার পরিচয় দিতে পারছি? আমার মনে হয় না।
হতে পারে আমাদের দেশ দরিদ্র, সমস্যা কবলিত, দুর্নীতিতে অগ্রগামী একটি দেশ। কিন্তু এদেশের মানুষের মেধা, সহনশীলতা, কষ্টসহিষ্ণুতার কথাটি বিবেচনায় আনলে, সীমিত সম্পদের এই দেশটি পৃথিবীকে তাক লাগিয়ে দিতে পারত অনেক আগেই। আমাদের বুদ্ধি ও মেধার বিচারে আমাদের তুলনায় 'গরু-গাধা' শ্রেণীর অনেক জাতি (আমি দুঃখিত, কিন্তু এটা আমার বাক্তিগত বিশ্বাস) আমাদের চেয়ে অনেক এগিয়ে গেছে, তাদেরও একসময় সম্পদের সীমাবদ্ধতা ছিল - ছিল নানারকম দুর্নীতি। কিন্তু জাতি হিসেবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে তারা উন্নয়নের একই লক্ষ্যে এগিয়ে গেছে - সীমাবদ্ধতাগুলোকে জয় করেছে।
ইন্টারনেটে ও বাস্তবক্ষেত্রে আমি আমাদের তরুণ সমাজের অদম্য স্পৃহা ও অমিত শক্তির পরিচয় পেয়েছি বিস্তর। কিন্তু তারপরও আমাদের ভাইবোনরা কেন মাইক্রোসফট বা গুগলের শীর্ষ স্থানগুলোতে বসতে পারছেনা? কেন আউটসোর্সিংয়ে আমাদের পারফর্মেন্স আমাদের আশেপাশের দেশগুলোর তুলনায় এখনো পিছিয়ে? জানি অনেকে বলবেন - কই, আমরা তো এগিয়ে যাচ্ছি - মানলাম, এগিয়ে যাচ্ছি, কিন্তু এগিয়ে যাবার গতি আমাদের সক্ষমতার তুলনায় যথেষ্ট নয়। আর যদি তা না হয়, তাহলে বলুন - বাংলাদেশ বিশ্বের জনসংখ্যার ভিত্তিতে অষ্টম বৃহত্তম ও বাংলা ভাষা ষষ্ঠ সর্বাধিক কথিত ভাষা হওয়া সত্ত্বেও কেন অনেক ওয়েবসাইটে আমাদের দেশের নাম ড্রপডাউন লিস্টে পাওয়া যায়না (অথচ, বাহামাস বা বুরকিনা ফাসোর মত দেশের নাম থাকে) - কেন ল্যাংগুয়েজ অপশনে বাংলা থাকে না (অথচ তামিল ভাষাটি ঠিকই থাকে)।
আমার মতে, আমাদের একটি জিনিষেরই অভাব আছে - আর তা হল - ঐক্য। বাড়ি-ঘরে, পাড়ায়-মহল্লায়, গ্রামে-গন্জে, জেলায়-বিভাগে আমরা বড়ই বিভক্ত। আমরা বিভক্ত দেশে - আমরা বিভক্ত বিদেশে - আর বিভক্ত সামহোয়্যার-ইন, সচলায়তন কিংবা আমার ব্লগে।
টেকটিউনসে অন্তত: বিভক্তির এই ব্যাপারটি নেই। তাই টেকটিউনসে আসি - টিউন পড়ি-লিখি-মন্তব্য করি।
টেকটিউনস টপটিউনার কনক্লেভের ছবিগুলো দেখে আমাদের দেশের তরুনদের অমিত শক্তির কথাটা আবার মনে পড়ল। আপনাদের (ছবিতে) সবার চেয়ে আমার বয়স বেশী। বয়োজ্যেষ্ঠ হিসেবে তাই আপনাদের বলি - সবাই মিলে এক হয়ে যান না এগিয়ে নিয়ে আমাদের এই হতভাগ্য দেশটাকে-আপনারাই পারেন-আপনারাই পারবেন। এই পৃথিবী থেকে বিদায় নেবার আগে যেন একবার বলতে পারি, আজকের শীর্ষস্থানীয় মাল্টি-বিলিয়ন ডলারের অমুক টেকজায়ান্ট কোম্পানীর সিইও আমার দেশের ছেলে - একসাথেই আমরা টেকটিউনস নামের একটা ব্লগে লেখালেখি করতাম।
আমি মোহাম্মদ ইউসুফ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 15 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 96 টি টিউন ও 1054 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
ইনশাআল্লাহ সবাই টিটি থেকে শিক্ষা নেবে
আর ঐক্য গড়ে তুলে দেশকে তথা নিজেকে নিয়ে যাবে সাফল্যের তুঙ্গে
সেই প্রত্যাশায় 🙂