টেকটিউনস Super Successor : সালেহ আহমেদ, পরিচালক এবং সহ-প্রতিষ্ঠাতা, “Exon Host”

টেকটিউন Super Successor গেস্ট: সালেহ আহমেদ, পরিচালক এবং সহ-প্রতিষ্ঠাতা, "Exon Host"
টেকটিউন Super Successor হোস্ট: রুবিনা ইয়াসমিন
সময়: বৃহস্পতিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭।দুপুর ১২ টা।
ব্যাপ্তি: প্রায় ১৫ মিনিট
স্থান: Exon Host, ঢাকা।

 

বর্তমানে বিশ্বের প্রায় ৭০ দেশে ডোমেইন হোস্টিং সেবা প্রদান করছে এক্সনহোস্ট। এরই মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন কোম্পানির সাথে পার্টনারশিপ গড়েছে বাংলাদেশের এই প্রতিষ্ঠানটি।

ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট থেকে শুরু করে কর্পোরেট ওয়েবসাইটের জন্য ডোমেইন, ওয়েব হোস্টিং, ভার্চুয়াল সার্ভার, ডেডিকেটেড সার্ভার ও ক্লাস্টার সার্ভার সলিউশন দিচ্ছে এক্সনহোস্ট। দেশি এবং বিদেশি কর্মীদের মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টা কাস্টমার সাপোর্ট নিশ্চিত করার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি এগিয়ে যাচ্ছে প্রতিদিন।

আজকে টেকটিউন Super Successor ইন্টারভিউতে আমরা জানবো আমাদের দেশের hosting industry নিয়ে কিছু কথা। টেকটিউন Super Successor গেস্ট হিসেবে আজকে হাজির হয়েছে এক্সনহোস্ট'র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সালেহ আহমেদ।
তিনি বহু সময় ধরেই টেকটিউনসের সাথে আছেন। টেকটিউনসে কখন তিনি ছিলেন একজন টিউনার বা কখনও ছিলেন একজন এডভাটাইজার। ছাত্রজীবন থেকেই যার পথ চলা শুরু এই hosting industry তে।

ExonHost এর শুরুর কথাটা আমাদের বলেন-

আমি যখন ইউনিভারসিটিতে পড়াশোনা করি, তখন ইন্টারনেট এর প্রতি একটা ঝোঁক ছিল। তখন আমার কম্পিউটার ছিল কিন্তু, ইন্টারনেট ছিল না। ইউনিভারসিটির ল্যাবে বসতাম বসে বসে ইন্টারনেটে ঘাটাঘাটি করতাম। তখন আমার একটা ওয়েবসাইট বানাবার ইচ্ছা হল। যখন আমি অনলাইনে ঘাটাঘাটি করলাম, দেখলাম বাংলাদেশে reliable এমন কোন প্রতিষ্ঠান নাই, যাকে কাস্টমাররা বিশ্বাস করবে।

অনলাইনে সার্চ দিলেই দেখা যাচ্ছে, এই কোম্পানির বিরুদ্ধে অভিযোগ, ঐ কোম্পানি ডোমেইন আটকে দিয়েছে, ঐ কোম্পানির হোস্টিং আটকে দিচ্ছে। এই ধরনের বিভিন্ন রকমের সমস্যা আছে।এরপর আমি বাংলাদেশের একটি কোম্পানি থেকে ডোমেইন নেই। ডোমেইন নেবার পর ব্লগিং শুরু করি। টেকটিউনস এ ব্লগ লিখতাম, প্রজন্ম ফোরামেও লিখতাম। ব্লগিং এবং লিখালিখি করতে গিয়ে একটা কমিউনিটি গড়ে উঠে। কমিউনিটির লোকজনকে ফ্রি হোস্টিং দিয়ে সহযোগিতা করতাম।

কিছু দিন পর মনে হলো যেহেতু ওয়েবসাইট তৈরি করার পর হোস্টিংয়ের প্রয়োজন হয়, পেইড হোস্টিং সার্ভিস চালু করা যায়। সেই চিন্তা থেকেই হোস্টিং ব্যবসার আগ্রহ। অতঃপর যেই ভাবা সেই কাজ। তো এভাবেই ইউনিভারসিটি লাইফে বলতে পারেন একটা মেস থেকেই এই exonhost এর যাত্রা শুরু হয়েছে। শুরুর দিকে obosor.com নামে সার্ভিস দেয়া শুরু করি।

২০১০ সালের দিকে প্রথমে যেই অবসর ডট কম ছিল সেটাকে আমরা re-brand করে socheaphost নামে
re-brand করি। এরপর ২০১২ সালের দিকে ঢাকার মহাখালী DOHS এর ভিতরে আমরা একটা অফিস নেই। অফিসটা ২০১২ এর জুন থেকে চালু হয়। এরপর ২০১৩ সালের দিকে আমরা কোম্পানিটা আবার re-brand করি hostpair নামে। Recently এ বছরের শুরুতে ট্রেড মার্ক সম্পর্কিত সমস্যার কারণে আমরা hostpair এর নাম পরিবর্তন করে exonhost করি। এভাবেই আমাদের যাত্রা।

আমি যাত্রাটা একাই শুরু করি। ২০১২ সালের দিকে আমি নতুন partner নেই, যেহেতু একা কোম্পানি চালানো খুব কঠিন। একা কখনও বেশিদূর যাওয়া যায় না। আমাদের একটা ভিশন আছে, একটা গোল আছে। Exonhost কে একটা ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানিতে রূপান্তরিত করা এবং একটা recognize brand হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা। এজন্য আমি ২০১২ সালের দিকে partner নেই। এখন আমরা ২ জন partner এবং কিছু স্টাফ আছি।

আপনার কোম্পানির বর্তমান অবস্থার কথা কিছু বলুন-

বর্তমানে আমরা ডোমেইন হোস্টিং, ওয়েব হোস্টিং, রিসেলার হোস্টিং, virtual server, dedicated server ইত্যাদি solution দিচ্ছে। আমাদের মূল স্লোগান হচ্ছে, ExonHost built for speed। যাতে করে ইউজাররা তাদের ওয়েবসাইট আমাদের এখানে হোস্ট করে ভাল speed পায় এবং ভিজিটররা যেন ওয়েবসাইট smoothly ভিজিট করতে পারে। আমরা মুলত managed সার্ভিসটা দিচ্ছি।

কাস্টমার একটা সার্ভার নেবার পর আমাদের এখান থেকে কাস্টমারের কোন technical knowledge এর প্রয়োজন হবে না। কাস্টমারের যা দরকার আমরাই সব করে দিব। কাস্টমার শুধু তার সাইট এবং ব্যবসা নিয়ে করবে, আমরা কাস্টমারের সার্ভারের সবধরণের টেকনিক্যাল দিক দেখাশুনা করব। ExonHost লো ট্রাফিক সাইট থেকে শুরু করে হাই ট্রাফিক সাইটের জন্য হোস্টিং সলিউশন দিচ্ছে।

আমার প্রথম দিকে নিজের কোন পুঁজি ছিল না। আমি প্রথম থেকেই ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর সাথে জড়িত ছিলাম। আমি সৌদি আরবের একটা 3 star hotel আলবদর ইন্টারন্যাশনাল থেকে একটা কাজ পাই। তারা আমাকে বলল যে, আপনি ডোমেইন ও হোস্টিং সব কিছু দিবেন এবং ওয়েব ডেভেলপমেন্টও করে দিবেন। তখন আমি তাদের কাজ শেষ করে দেবার পর, পেমেন্ট পেলে আমি একটি ছোট reseller hosting কিনেছিলাম।

প্রথম দিকে যেহেতু experience ছিল না, আমি বাহিরের একটা কোম্পানির কাছ থেকে reseller টা নেই। ঐটা নেবার পর প্রায় ১ মাসের মাথায় ঐ কোম্পানিটা চলে যায় মার্কেট ছেড়ে। তো তখন আমি একটা ধাক্কা খাই। কারণ আমার ইনিশিয়াল ইনভেস্টমেন্টটা নষ্ট হয়ে যায়।এরপর আমি আবার আরেকটা কোম্পানির কাছে থেকে reseller hosting নেই। সেই কোম্পানিও কিছু দিন ভালো সার্ভিস দেয়।

কিন্তু ৫-৬মাস পর আবার মার্কেট থেকে চলে যায়। তখন আমার কিছু experience গেদার হয়। তখন আমি জানি কিভাবে ভাল হোস্টিং কোম্পানি চিনতে হয়।কিভাবে প্রভাইডার সিলেক্ট করতে হয়। এসব কিছু নিয়ে knowledge গেদার করি এবং একটা ভালো কোম্পানির কাছ থেকে reseller hosting নেই। এরপর ২০১১ সালের দিকে আমরা নিজস্ব সার্ভারে চলে আসি। বর্তমানে আমরা পৃথিবীর নামকরা ডাটাসেন্টার ব্যবহার করে সার্ভিস দিচ্ছি।

আপনাদের হোস্টিং কোম্পানি, অন্য হোস্টিং কোম্পানি থেকে কেন বেশি বিশ্বাসযোগ্য ?

ExonHost প্রথম থেকেই কাস্টমর সার্ভিসের প্রতি বেশি গুরুত্ব দিয়ে এসেছে। আমরা দেশি এবং বিদেশি টিম মিলে ২৪ঘন্টা কাস্টমার সাপোর্ট দিচ্ছি। অন্যান্য কোম্পানি যেমন,৮ ঘণ্টা, ১৬ ঘণ্টা বা অফিস টাইমে সাপোর্ট দিচ্ছে কিন্তু ExonHost ২৪ঘন্টা সাপোর্ট দিচ্ছে। সাপোর্ট এর ক্ষেত্রে ExonHost one hour response time guaranty দিচ্ছি। যদি one hour এর মধ্যে কাস্টমার response না পায়, তাহলে আমরা compensation হিসেবে কাস্টমারকে credit একাউন্টে দিচ্ছি। মুলত আমরা customer oriented কোম্পানি।

অন্যান্য কোম্পানির চেয়ে আমাদের কোম্পানির speed, support সবদিকেই better। আমাদের এখানে যদি কেউ ওয়েবসাইট হোস্ট করে, তার ওয়েবসাইটটা এক সেকেন্ড বা ২ সেকেন্ডের নিচে এ সময়ের মধ্যেই সাইটটা লোড হয়ে যাবে। আমরা speed এবং customer service এ দুইটাকেই গুরুত্ব দিচ্ছি। অন্যান্য কোম্পানি গুলোর ক্ষেত্রে দেখা যায় one man army।

একজনই সবকিছু। sales, marketing, technical সব কিছুই একজনই করে থাকে। ধরুন, একটা কোম্পানির Owner টা কোন কারণে sick থাকে, সে ক্ষেত্রে কাস্টমার কিন্তু সাপোর্ট পাচ্ছে না। আমাদের এখানে আমরা যদি managment level এর কেউ অনুপস্থিত থাকে। সেই ক্ষেত্রে আমাদের সাপোর্ট টিম সবসময় সাপোর্ট দিচ্ছে। আমাদের strength হচ্ছে কাস্টমার সার্ভিস।

বাংলাদেশের hosting industry নিয়ে কিছু বলুন-

এখন আমরা হোস্টিংকে একটা industry বলতে পারি না। কারণ, industry হবার জন্য হাজার হাজার কোটি টাকার লেনদেন হবার প্রয়োজন এবং বলা যায় যে দেশে বড় কোন হোস্টিং কোম্পানি নাই। তারপর ও আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছে এটাকে একটা industry তে তৈরি করবার। এজন্য ২০১৪সালে bangladesh domain hosting provider association নামে একটা association তৈরি করি। দেশে প্রায় ১০ লাখের উপরে ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন হয়েছে।

এই ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন গুলো কিন্তু এখন বিদেশি provider রা দিচ্ছে। এখন সবাই বিদেশি provider থেকে ডোমেইন রিসেল করতেছে। আমরা ডোমেইন এবং হোস্টিংকে একটা industry হিসেবে গড়বার জন্য ২ বছর ধরে কাজ করে যাচ্ছি।যাতে করে বাংলাদেশী কাস্টমাররা বাংলাদেশী provider দিয়ে ডোমেইন ও হোস্টিং কিনে। আমরা একটা আস্থা তৈরি করবার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি।

আপনাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে আমাদের কিছু বলুন-

'আমরা চাই ভবিষ্যতে মানুষ যখন ডোমেইন হোস্টিং এর কথা চিন্তা করলে যাতে ExonHost এর কথা চিন্তা করে। আমরা এমন একটা level এ ExonHost কে নিয়ে যেতে চাই। আমরা সেই লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের ভবিষ্যতের আরেকটা প্ল্যান হচ্ছে, icann এদের কাছে থেকে accreditation টা নেয়া। যাতে করে, আমরাই সরাসরি ডোমেইন হোস্টিং সেল করতে পারি। হোস্টিং কোম্পানি হিসেবে।নিজের কোম্পানিকে একটা ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানি হিসেবে রূপান্তরিত করাই আমাদের মূল লক্ষ্য।

বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের জন্য কিছু বলুন, যদি তারা এই hosting buisness করতে চায়।

নতুনদের জন্য বলব, তারা যদি ডোমেইন ও হোস্টিং এর ব্যবসায় আসতে চায় তাহলে অবশ্যই টেকনিক্যাল নলেজ অজর্ন করতে হবে। এখন মার্কেটটা অনেক competitive, এখানে সহজেই এমন না যে hosting ব্যবসায় ঢুকবে এবং income করবে। যেহেতু competitive মার্কেট, তাই মার্কেটিং, টেকনিক্যাল বিষয়ের উপর knowledge থাকা লাগবে।

মার্কেট সম্পর্কে আইডিয়া থাকতে হবে, টার্গৈট গ্রুপ ঠিক করে নামতে হবে। শুরুর দিকে যে কেউ reseller hosting দিয়ে শুরু করতে পারে।যদি ভাল fund এর ব্যবস্থা থাকে, যেই ক্ষেত্রে যাতে fund নিয়েই এই ব্যবসায় নামে। ধরেন প্রথম দিকে আপনি কম investment দিয়ে শুরু করলেন আপনি হয়তো বেশি দূর যেতে পারবেন না। তাই একটা ভাল fund এর প্রয়োজন আছে। ছোট করেই শুরু করে ধীরে ধীরে এগিয়ে যেতে হবে।

টেকটিউনস বাংলাদেশের তথ্য প্রযুক্তি খাতে একটি বিপ্লব তৈরি করেছে। এ বিষয়ে আপনার মতামত কি?

টেকটিউনস বাংলাদেশের তথ্য প্রযুক্তি খাতে একটি বিপ্লব তৈরি করেছে, এ কথাটা অনেকখানি সত্য।প্রথম যখন আমরা লিখালিখি শুরু করি, তখন বাংলা প্ল্যাটফরম বলতে ছিল প্রজন্ম ফোরাম এবং টেকটিউনস। অনেকেই টেকটিউনস থেকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয় সহ আরও নানা বিষয় জেনে অনেক উপকৃত হয়েছে বলে আমি মনে করি।দেশের জন্য অবশ্যই এটা উপকারী।

টেকটিউনসে এডভারটাইসিং এবং ব্যান্ডিং করে আপনি কিভাবে উপকৃত হয়েছেন?

টেকটিউনস যখন প্রথম দিকে এডভারটাইসমেন্ট নিয়ে আসে তখন আমি এড দিয়ে ছিলাম। তখন আমার কোম্পানির নাম ছিল সজীব হোস্ট। তখন আমার কোম্পানি মানুষ চিনত না। কিন্তু টেকটিউনসে এড দেবার পর আমি অনেক সাড়া পেয়েছি। আমার সেল অনেক বেড়ে যায়। আমাদের অনেক পরিচিতি বাড়ে।এই টেকটিউনসের এড এর মাধ্যমেই আমার কোম্পানিকে মানুষ চিনেছে।

টেকটিউনস সম্পর্কে কোন পরামর্শ আছে?

টেকটিউনসের বর্তমানের interface টা আরো user friendly করা উচিত। ডিজাইনটা আরও improve করা প্রয়োজন। আরও user friendly এবং modern করা দরকার।

Level 9

আমি টেকটিউনস। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 16 বছর 1 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 127 টি টিউন ও 2877 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 526 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1591 টিউনারকে ফলো করি।

মেতে উঠুন প্রযুক্তির সুরে।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস