পিসি ট্রাবলশ্যুটিং পর্ব-৮:জেনে রাখা ভাল

জেনে রাখুন পিসির কনফিগারেশন

কম্পিউটারের যে কোনো সমস্যা আর হার্ডওয়্যারের সমস্যাতো তো বটেই সবার আগে আপনার প্রয়োজন পড়বে পিসির কনফিগারেশন অর্থাৎ প্রসেসর, র‌্যাম, মাদারবোর্ড, হার্ডডিস্ক, সাউন্ড কার্ড, এজিপি কার্ড কোনটি কোন কোম্পানির কি মানের তা জানার। দেখা যায় যে বেশিরভাগ মানুষই অন্য কারো সহায়তা বা দোকানির পরামর্শে কম্পিউটার কেনেন এবং পরে যখন কোনো সমস্যায় পড়ে অন্য কারো দারস্থ হন তখন আর কনফিগারেশন বলতে পারেন না। এতে সমাধানকারীকে অতিরিক্ত ঝামেলায় পড়তে হয়। এই তথ্যগুলো তাই জেনে নিয়ে দরকার পড়লে লিখে রাখুন। তাহলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সমাধানকারীর জন্য সমস্যার কারণ খুঁজে পাওয়াটা সহজ হয়ে যায়।

এই বেসিক কনফিগারেশনগুলো জানতে বেশ কয়েকটি উপায় রয়েছে। মাই কম্পিউটারে রাইট ক্লিক করে প্রোপ্রার্টিজে গিয়ে জেনারেল ট্যাব থেকে জেনে নিতে পারবেন প্রসেসর, র‌্যাম ও অপারেটিং সিস্টেম সংক্রান্ত তথ্য। গ্রাফিক্স বা ডিসপ্লে প্রোপ্রার্টিজে গিয়ে ইনফরমেশন থেকে জানতে পারবেন গ্রাফিক্সকার্ড সংক্রান্ত তথ্য। আর অনেকক্ষেত্রেই কম্পিউটার কেনার ক্যাশমেমোতেই এসব বিস্তারিত লিখা থাকে। আরেকটি কাজ করতে পারেন। কোনো অভিজ্ঞ ব্যবহারকারীর সহায়তায় জেনে নিতে পারেন তথ্যগুলো। যেভাবেই যাই জানুন না কেন তা ভালোভাবে লিখে যত্নসহকারে রেখে দিন।

বিল্ট ইন

এখন প্রায় সব কম্পিউটারেই বিল্টইন কিছু না কিছু থাকেই। যেমন- এজিপি কার্ড, সাউন্ড কার্ড, ল্যান কার্ড ইত্যাদি। বিল্টইন অর্থ এই হার্ডওয়্যারটি আপনার মাদারবোর্ডে দেয়াই আছে। আপনি আলাদা না কিনে এটি দিয়েই কাজ চালাতে পারেন। কিন্তু কথায় আছে সস্তার দশ অবস্থা। কোম্পানি বা দোকানি যতই গলা ফটাক না কেন এটা বুঝতে খুব বেশি বুদ্ধিমান হবার দরকার পড়ে না যে, পারফরমেন্সে বিল্টইন হার্ডওয়্যারটি কখনই স্বতন্ত্র হার্ডওয়্যারের সমকক্ষ হতে পারে না। তবে যারা সাধারণ বা মাঝারি মানের ব্যবহারকারী তাদের জন্য বিল্টইন সাউন্ড বা এজিপি কার্ডই যথেষ্ঠ। আর বিল্টইন ল্যান কার্ড দিয়ে সমস্যা ছাড়াই কাজ চালাতে পারেন। তবে একটা কথা। যারা ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট লাইন নেন তাদের সবার ল্যান কার্ডের ফিজিকাল বা ম্যাক এড্রেস কিন্তু সংশ্লিষ্ট আইএসপি নিয়ে রেকর্ড করে রাখে।ফলে মাদারবোর্ডে কোনো সমস্যা হলে নেট লাইন নিয়ে বিপদে পড়বেন আপনি। এক্ষেত্রে আইএসপি’র শরণাপন্ন আপনাকে হতেই হবে। আর আলাদা ল্যানে যে বাড়তি সুবিধা একই কারণে পাবেন তা হচ্ছে এটি অন্য পিসিতে লাগিয়ে একই নেট কানেকশন কাজের সময় ব্যবহার করতে পারবেন আপনি।ম্যাক এড্রেস পরিবর্তনের উ্পায় অবশ্য আছে কিন্তু এই টিউনে তা আমার আলোচ্য না।
techtoday4u.blogspot
আর বিল্টইন সাউন্ড কার্ড বা এজিপিতে সমস্যা হলে তা বেশ বিড়ম্বনাকর। অনেকক্ষেত্রে মাদারবোর্ডের উপরই চাপটা পড়ে বেশ জটিলাকার ধারণ করে। তবে মনে রাখবেন, বিল্টইন এজিপি মানেই এটি আপনার সিস্টেম থেকে র‌্যাম শেয়ার করে। তাই বিল্টইন এজিপি ব্যবহার করলে বাড়তি র‌্যাম লাগানোটাই ভালো। নাহলে সিস্টেম স্লো হয়ে যাওয়া বা হ্যাং করাসহ অনেক সমস্যাই হতে পারে আপনার।একটা সহজ পয়েন্ট উল্লেখ করি।ক্রিয়েটিভের ভালোমানের সাউন্ড কার্ডের দাম ৪০০০ টাকার উপরে,এনভিডিয়ার ৯৬০০ জিটি ১ গিগাবাইট র‌্যামবিশিষ্ট এজিপির দাম ১৫০০০ টাকা।আর সুপার-ডুপার সাউন্ড(!),১৭৫৮ মেগাবাইট পর্যন্ত এজিপি বিশিষ্ট মাদারবোর্ড আপনি ৭০০০ টাকাতেই পাবেন!!আর কিছু বলতে হবে?

পাওয়ার,পাওয়ার সাপ্লাই

কম্পিউটারের অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ অংশ এই পাওয়ার সাপ্লাই। এর কারণে অনেক সমস্যাই হতে পারে। ইউপিএস কেন ব্যবহার করবেন, কেন করবেন না এই নিয়ে বেশি কিছু বলব না। শুধু বলব অস্থিতিশীল ভোল্টেজ সাপ্লাই আপনার মূল্যবান হার্ডওয়্যারের মৃত্যু ডেকে আনতে পারে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে আর্থিং। ভালো আর্থিং কম্পিউটারের জন্য অতীব প্রয়োজনীয়। কোনো ইলেকট্রিশিয়ানকে ডেকে আপনার আর্থিং ঠিক আছে কিনা তা চেক করে নিতে পারে। আর্থিং না থাকার কারণে অনেক সময় কোনো কোনো হার্ডওয়্যার ঠিকমতো কাজ নাও করতে পারে। মনিটর কাঁপতে পারে, কেসিং-এর বডি শক করতে পারে; এমনকি মাদারবোর্ড বা হার্ডডিস্কের ক্ষতি পর্যন্ত হতে পারে।

আরেকটি সমস্যা অনেকসময় দেখা যায়। কম্পিউটারের উপর যখন বেশি চাপ পড়ে। হাইএন্ড গেম বা এপ্লিকেশন রান করতে যায় তখন পিসি রিস্টার্ট করে। এর সম্ভাব্য কারণ হতে পারে অপর্যাপ্ত পাওয়ার সাপ্লাই। অর্থাৎ কাজের সময় আপনার পাওয়ার সাপ্লাই মাদারবোর্ডে প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারে না। এক্ষেত্রে আপনাকে পাওয়ার সাপ্লাইটি পরিবর্তন করতে হবে।
70

জানেন কি কম্পিউটারের ভেতরের যাবতীয় হার্ডওয়্যার চলে ডিসি পাওয়ারে? এসি ২২০ ভোল্ট পাওয়ারকে পাওয়ার সাপ্লাই ডিসি ৩.৫ ভোল্ট, ৫ ভোল্ট ও ১২ ভোল্টে রূপান্তর করে মাদারবোর্ডে সরবরাহ করে। ফলে সিপিইউর ভেতর যে কারেন্ট থাকে তা বিপদজনক নয়। তবে যদি পাওয়ার অন করে কখনও কাজ করতে হয় তখন খেয়াল রাখবেন যেন শর্টসার্কিট না হয় এবং আপনার পায়ে যেন শুকনা জুতা থাকে।

পিসি ট্রাবলশ্যুটিং পর্ব-১: কেসিং খোলার হাতেখড়ি

পিসি ট্রাবলশ্যুটিং পর্ব-২: কম্পিউটার ব্যাটা চালুই হচ্ছে না

পিসি ট্রাবলশ্যুটিং পর্ব-৩: হার্ডওয়্যার ট্রাবলশ্যুটিং

পিসি ট্রাবলশ্যুটিং পর্ব-৪: আপডেটিং বিড়ম্বনা

পিসি ট্রাবলশ্যুটিং পর্ব-৫: অপারেটিং সিস্টেম ইন্সটল হচ্ছে না

পিসি ট্রাবলশ্যুটিং পর্ব-৬: পিসি বারবার রিস্টার্ট হচ্ছে

পিসি ট্রাবলশ্যুটিং পর্ব-৭: কম্পিউটার হার্ডডিস্ক না পেলে কি করবেন

পিসি ট্রাবলশ্যুটিং পর্ব-৮: জেনে রাখা ভালো

পিসি ট্রাবলশ্যুটিং পর্ব-৯: যত্ন নিন আপনার পিসির

প্রথম প্রকাশঃ মাসিক টেকনোলজি টুডে

Level New

আমি সেতু। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 15 বছর 6 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 47 টি টিউন ও 466 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

আছি কম্পিউটার আর ইন্টারনেটকে সাথে নিয়ে।ভালোবাসি নতুন আর আনকোরা সফটওয়ার নিয়ে কাজ করতে।ভালো লাগে হার্ডওয়ার নিয়ে ঘাটাঘাটি করতে।পড়ছি বুয়েটে।কাজ করছি টেকনোলজি টুডে'র সহকারি সম্পাদক হিসেবে।কম্পিউটার-এর জগতে শুধু ঘুরেই বেড়াচ্ছি গত প্রায় ১২/১৩ বছর ধরে।কম্পিউটার নিয়েই কাজ করছি ৮/৯ বছর ধরে।জড়িত আছি বিভিন্ন দেশী-বিদেশী সাইট-এর সাথে।মোটামুটি দেশীয় কম্পিউটারের সবক্ষেত্রেই নজর রাখতে...


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

Level 2

amar to laptop
ke korbo

আমার cpu বডি ধরলে আথিং করে।টেস্টার ধরলে বাতি জলে কি সমস্যা আবার মাজে মজে মনিটরে ডিছপ্লে আসেনা ।

Level New

এটা আপনার বাড়ির পাওয়ার সাপ্লাইয়ের সমস্যা হবার সম্ভাবনাই বেশি।নতুবা থ্রি-পিন সকেট ব্যবহার করুন।বাড়ির পাওয়ার সাপ্লাইয়ের সমস্যা হলে অভিজ্ঞ কোনো টেকনিশিয়ানকে দেখান।
আর মনিটরে ডিসেপ্লে না আসার কারন বেশ কিছু হতে পারে,আমার এই লেখার পর্ব ২ ও ৩ দেখুন।

ধন্যবাদ।