ই-কমার্স বিজিনেস শুরু করবেন? আপনার ই-কমার্স বিজিনেস বা অনলাইন বিজিনেসকে আরও বেশি উন্নত করবেন কীভাবে? দেখে নিন সেইসব কিলার মেথড।

অনলাইন বিজিনেসে সফলতা আসলে একটু সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। বর্তমানে যে কোন বিজিনেসে সফলতা পেতে অনলাইন মার্কেটিং সবচেয়ে ভালো উপায়। যদিও এটা একটু সময় সাপেক্ষ ব্যাপার, তবুও অনেক বড় পরিকল্পনা করে এই সেক্টরে আগাতে হবে। তাহলে আপনি অনেক দূর পর্যন্ত যেতে পারবেন।

সঠিক কৌশল এবং পর্যাপ্ত অনলাইন মার্কেটিং ছাড়া আপনি আপনার ব্যবসায় দ্রুত আগাতে পারবেন না।

সেহেতু আপনাকে এই বিষয়ে পর্যাপ্ত জ্ঞান নেওয়া উচিৎ।

আজকের এই লেখায় আমি চেষ্টা করবো কিছু পয়েন্ট ধরিয়ে দেওয়ার যেটা আপনার বিজিনেসকে আরও বেশি উন্নত করতে সহায়তা করবে আশা করি।

আপনার বিজিনেসের জন্য প্রয়োজন কিছু কিলার মেথড

ই-কমার্স বিজিনেস বা অনলাইন বিজিনেসকে আরও বেশি উন্নত করার কিলার মেথডঃ

১) একটা বা দুইটা পণ্যকে বেশি ফোকাস করুনঃ

বর্তমান বাজারের সাথে এগিয়ে যেতে এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এটার জন্য আপনার ওয়েবসাইটে আপনার কোম্পানির একটা অথবা দুইটা পণ্যকে বেশি গুরুত্ব দিন এবং পর্যাপ্ত ফোকাস করুন এবং আপনার কোম্পানির মাধ্যমে সেই পণ্যগুলোর সবচেয়ে ভালো সেবাটা প্রদান করুন।

এই পণ্যগুলোর দ্বারা যখন আপনি বিশ্বস্ত কিছু কাস্টমার পাবেন, তখন সেই কাস্টমারগুলোকে আপনি আপনার কোম্পানির আরও পণ্যর জন্য কাস্টমার বানাতে পারবেন। এখন সব পণ্যের ভালো সেবা যদি আপনি নিচ্চিত করতে পারেন, তাহলে সবসময় ভালো কাস্টমার ধরে পারবেন।

সঠিক পরিকল্পনা আপনাকে এগিয়ে নিতে পারে অনেক দূর

২) বিশ্বস্ততা তৈরি করুনঃ

আপনার কোম্পানিকে বিশ্বস্ত করে তুলতে চেষ্টা করুন সব সময়। বিভিন্ন কালচারাল এবং সামাজিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করুন আপনার কোম্পানির দ্বারা। এটা আপনার কোম্পানিকে ব্রান্ডিং এর জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ।

আর যত ব্র্যান্ড তত বিশ্বাস আসবে আপনার কোম্পানির প্রতি। আপনার কোম্পানির পূর্বের ক্লায়েন্টের ফিডব্যাক রাখুন ওয়েবসাইটে।

বিশ্বস্ততা আপনার বড় মূলধন

৩) আপনার কোম্পানির ব্লগকে সক্রিয় রাখুন এবং পরিচিতি বাড়ানঃ

ব্লগিং আপনার কোম্পানির জন্য বিশ্বস্ততা তৈরি করতে সবচেয়ে সহায়তা করবে। সেহেতু আপনার কোম্পানির সেবা রিলেটেড এবং পণ্যের গুনাগুন বর্ণনা করে একটা সক্রিয় ব্লগ তৈরি করুন।

আপনার কাস্টমার ছাড়াও অন্যদের চেষ্টা করুন আপনার কোম্পানির পণ্য রিলেটেড হেল্প করার এই ব্লগের মাধ্যমে। এটা আপনার কোম্পানির জন্য খুবই জনপ্রিয়তা আনবে এবং সাথে বিশ্বস্ত কিছু কাস্টমার।

আপনার কোম্পানিকে অন্য ব্লগেও অংশগ্রহণ করতে হবে, যে ব্লগ আপনার কোম্পানির প্রডাক্টের সাথে যাবে।

(ব্লগিং (ইংরেজি), মার্কেটিং হেল্প লাগলে আমাকে নক করতে পারেন)

ব্লগিং আপনার প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে দিবে হাজার মাইল দূরে

৪) আপনার কোম্পানির জন্য বিশ্বস্ত ই-মেইল লিস্ট তৈরি করুন এবং সংগ্রহ করুনঃ

আপনার কাস্টমারের ই-মেইল লিস্ট সংগ্রহ করতে পারলে আপনি ভবিষ্যতে তাদেরকে আপনার কোম্পানি বিভিন্ন নতুন প্রডাক্ট সম্পর্কে ধারণা দিতে  পারবেন। সেই সাথে আপনি আপনার কোম্পানির নতুন অফার এবং প্রমোশন নিয়েও তাদেরকে ইনফরম করতে পারবেন।

৫) বিভিন্ন উপকারিতা ফোকাস করুনঃ

কাস্টমাররা কেন আপনার প্রতিষ্ঠানের পণ্য কিনবে বা ব্যবহার করবে, সেজন্য আপনার কোম্পানির প্রডাক্টের সুবিধাগুলো উল্লেখ করুন আপনার কোম্পানির ওয়েবসাইট এবং সেই সাথে আপনার কোম্পানির ব্লগে।

৬) কখনো কপি পেস্ট করবেন নাঃ

অন্য কোন কোম্পানির আর্টিকেল অথবা পরিকল্পনা কখনো কপি করবেন না। এটা আপনার কোম্পানির প্রতি বিশ্বস্ততা হারাবে। সেহেতু আপনি প্রতিজগিতায় হেরে যাবেন মার্কেটে।

১০০% কপি-পেস্টমুক্ত ব্লগ আপনার বিজিনেসকে এগিয়ে নিবে হাজার হাজার মাইল দূরে

৭) সর্বোত্তম কাস্টমার সাপোর্ট প্রদান করুনঃ

একটা কোম্পানির জন্য কাস্টমার যেহেতু সবকিছু সেহেতু তাদের সেবা নিচ্চিত করা আপনার প্রধান কাজ হওয়া উচিৎ। যথাসম্ভব চেষ্টা করুন সর্বোত্তম কাস্টমার সেবা দিতে অন্যদের থেকে।

তাহলে আপনি টিকে থাকতে পারবেন এই প্রতিজগিতামূলক বাজারে।

কাস্টমার সাপোর্ট বিজিনেসের বড় অধ্যায়

৮) আকর্ষণীয় কিছু অফার তৈরি করুনঃ

বিশেষ কিছু উপলক্ষ দেখে আপনার কোম্পানির জন্য আকর্ষণীয় কিছু অফার তৈরি করুন। এটা যেমন আপনার প্রচার করবে তেমন সেল বৃদ্ধি করবে। সাথে সাথে পাবেন এক্সট্রা কিছু জনপ্রিয়তা এবং বিশ্বস্ত কিছু নতুন কাস্টমার।

৯) সার্চইঞ্জিনকে টার্গেট করুনঃ

দেশ-বিদেশ থেকে ভালো কিছু কাস্টমার পেতে সার্চ ইঞ্জিনকে (গুগল) টার্গেট করুন। সার্চ ইঞ্জিন আপনার কোম্পানির জন্য অনেক ভিজিটর আনতে পারে। তাছাড়া এটা আপনার সাইটের Rank এর জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। আর গুগল Rank আপনার অনলাইন ব্র্যান্ডিং এ সহয়তা করবে।

যখন আপনি আপনার কোম্পানির জন্য অনেক ভালো একটা ব্লগ তৈরি করবেন এবং নিয়মিত ইউনিক আর্টিকেল সেখানে প্রকাশ করবেন, তখনই কেবল আপনি ভালো সার্চ Rank এবং নিয়মিত ভালো টার্গেটেড ভিজিটর পাবেন।

এরকম চান কিনা আপনার বিজিনেসে?

যেহেতু আপনি অনলাইন বিজিনেসম্যান সেহেতু এই দিকে আপনাকে ভালো দৃষ্টি দিতেই হবে।

(সার্চ ইঞ্জিন নিয়ে ভালো কিছু লেখা চেইন আকারে দেওয়ার ইচ্ছা আছে)

১০) সোশ্যাল মিডিয়াতে কোম্পানিকে জনপ্রিয় করুনঃ

এখন আমরা অনেক বেশি সোশ্যাল মিডিয়া নির্ভর। সেহেতু চেষ্টা করুন আপনার কোম্পানিকে এবং পারলে নিজেকেও সোশ্যাল মিডিয়াতে জনপ্রিয় করে তুলতে।

তবে সোশ্যাল মিডিয়াতে জনপ্রিয় হওয়া খুব সহজ না, এজন্য আপনাকে এক্সপার্টদের সহায়তা নিতে পারেন।

সঠিক পরিকল্পনা আপনার বিজিনেসের মূল শর্ত

সবশেষে বলবো উপরের সকল ক্রিটিরিয়া আপনার কোম্পানির জন্য যদি ফুলফিল করতে পারেন, আপনি সফল হতে পারবেন আপনার অনলাইন বিজিনেসে।

সবসময় মনে রাখবেন, অনলাইন বিজিনেস দাড় করতে একটু বেশি সময় দিতে হয়, তবে একবার ভালো পজিশন করতে পারলে খুব ভালোভাবে সেটা চলতে থাকে।

ই-কমার্স নিয়ে খুব সম্ভবত এটাই বাংলাতে লেখা প্রথম পূর্ণাঙ্গ কিলার টিপস!

তথ্য-সুত্রঃ লেখাটি আমার ইংরেজি লেখার বাংলা (যদিও ইংরেজি লেখাটা এখনও পাবলিশ করা হয় নাই) 

অনেক কষ্ট করে তথ্য সংগ্রহ করে লিখলাম। ভবিষ্যতে আমি আসছি ঠিক এরকমই তথ্যবহুল কিছু লেখা নিয়ে।

কমেন্ট, শেয়ার করতে ভুলবেন না।

শেষ কথা

আসুন আমরা কপি পেস্ট করা বর্জন করি এবং অপরকেও কপি পেস্ট টিউন করতে নিরুৎসাহিত করি। খারাপ হোক/মানুষ হাসাহাসি করুক তারপরও ধীরে ধীরে নিজে লিখতে থাকলে একদিন আপনিও ভালো টিউন রাইটার হবেন। আজ যারা ভালো টিউন করে সবাই সেভাবে হয়েছে।

আমি কপি-পেস্ট কোন টিউন করবো না ওয়াদা করেছি, আপনি করেছেন তো? 

আমি ফেসবুক | টুইটার | গুগল প্লাস | আমার ব্লগ 

Level 2

আমি আইটি সরদার। Web Programmer, iCode বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 1 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 261 টি টিউন ও 1750 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 22 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

আমি ইমরান তপু সরদার (আইটি সরদার),পড়াশুনা করেছি কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি নিয়ে; পেশা কন্টেন্ট রাইটার এবং মার্কেটার। লেখালেখি করি নেশা থেকে ফেব্রুয়ারি ২০১৩ থেকে। লেখালেখির প্রতি শৈশব থেকেই কেন জানি অন্যরকম একটা মমতা কাজ করে। আর প্রযুক্তি সেটা তো একাডেমিকভাবেই রক্তে মিশিয়ে দিয়েছে। ফলস্বরুপ এখন আমার ধ্যান, জ্ঞান, নেশা সবকিছু...


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

দুই একটি নির্দিষ্ট সঠিক চাহিদা সম্পন্ন পন্যই নিয়ে নামা ভালো। যেমনটি নেমে রকমারি ডট কম উঠে গেল শীর্ষে। ধন্যবাদ ভাই সুন্দর সব টিপসের জন্য।

    @ব্লগার মারুফ: হ্যাঁ রকমারি ডট কম প্রথমে এক ধরণের প্রডাক্ট নিয়ে নেমে এখন আরও কিছু অ্যাড করছে, বাট ওরা কিন্তু শীর্ষ স্থান ধরে আছে। কিন্তু আমরা অনেকে ভুল করি অনেক প্রডাক্ট লাউঞ্চ করে। একটি – দুইটা নিয়ে বেশি মার্কেটিং করা উচিৎ।
    ধন্যবাদ মারুফ। 🙂

      @আই,টি সরদার: আসলেই ভাই। এত্ত এত্ত প্রতিষ্ঠিত ই-কমার্স সাইট আছে (এখনই, প্রিয়শপ, কায়মু ইত্যাদি) তবুও কেন জানি রকমারি কেই আমার এক মাত্র সফল ই-কমার্স সাইট মনে হয়। তারাই বুঝিয়েছে কেন ঘরে বসে অনলাইনে কিনব। আমার কাছে প্রথম ই-কমার্সের চাহিদা সফলভাবে তুলে ধরেছে এই রকমারিই। আমিও রকমারির পলিসি ইউজ করেছি আমার ব্লগে। আগে শুধু লাউ খাওয়াতাম এখন সবাই খায় দেখে লাউয়ের সাথে কুমড়াও খাওয়াই। (মজা করলাম ভাই 😛 )

তথ্যবহুল পোষ্ট। ধন্যবাদ ভাইয়া শেয়ার করার জন্য। পরবর্তি টিউন এর অপেক্ষায় রইলাম

সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করার জন্য ধন্যবাদ। এখনকার কিছু টিউনার বাদে বাকিরা তো লিখতেই চায়না, শুধু কপি পেস্টের ধান্দায় আছে…

ঠিক ই বলেছেন । সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট কোণটা ? একটা বা দুইটা পণ্যকে বেশি ফোকাস নাকি সোশাল মিডিয়া তে পরিচিতি !

    @নীলোৎপল বেদী: উপরের সব গুলো পয়েন্টই একটার সাথে একটা রিলেটেড। তবে আপনাকে ভাবতে হবে আপনার প্রডাক্ট অনুসারে কোনটা আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ধন্যবাদ।
    আরও কিছু জানার থাকলে প্রশ্ন করতে পারেন।

দারুন হয়েছে।