বেস্ট ফ্রি পাসওর্য়াড ম্যানেজার

টিউন বিভাগ টিপস এন্ড ট্রিকস
প্রকাশিত
জোসস করেছেন

বর্তমান যুগ ইন্টারনেটের যুগ। আগের যুগে আমাদেরকে আমাদের সিন্দুকের লকের কম্বিনেশনটা মনে রাখার প্রয়োজন হতো কিংবা আলমারির লকের জিনিসটাও মনে রাখতে হতো। আর এবার ইন্টারনেটের যুগে এসে আমাদেরকে পাসওর্য়াড মনে রাখতে হয়। আমরা ইন্টারনেটের এই দুনিয়ায় প্রতিনিয়তই অনেকগুলো পাসওর্য়াডের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হয়। আর আমরা যদি আমাদের সকল ওয়েবসাইটেই ১২৩৪৫৬ কিংবা আমরা সহজে মনে রাখতে পারি এইরকম পাসওর্য়াড ব্যবহার করে থাকি তাহলে সেটা আমাদের তথ্যপ্রযুক্তির যুগে একটি বড় ভুলের কারণ হিসেবে ধরা যেতে পারে। আবার প্রতিটি গুরুর্ত্বপূর্ণ সাইটের জন্য আলাদা ইউনিক পাসওর্য়াড মনে রাখাটাও আমাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়ে। তাই আজ আমি নিয়ে এসেছি ২০১৮ সালের বেস্ট কয়েকটি পাসওর্য়াড ম্যানেজার যেগুলো আপনার গুরুত্বপূর্ণ ওয়েবসাইটের জন্য ইউনিক সব পাসওর্য়াড তৈরি করবে এবং সেটা আপনার জন্য মনে রাখবে! বর্তমান তথ্য প্রযুক্তি যুগে আমাদের আর্থিক সব কার্যবলি যেমন ব্যাকিং, টাকা আদান প্রদান ইত্যাদি কাজগুলোও আমরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে আজকাল করে থাকি। এখন যদি আপনার ব্যাংকের পাসওর্য়াড আপনার বাসার পালিত বিড়ালের নামে হয়ে থাকে, কিংবা ইমেইলে লগইন করার সময় আপনার জন্মসালটি ব্যবহার করে থাকেন, আবার নিজের বউয়ের নামে ক্রেডিট কার্ডের পাসওর্য়াড যদি আপনি বানিয়ে থাকেন তাহলে আপনার এই সকল সাইটগুলোর পাসওর্য়াড হ্যাকের সম্ভাবনা বেশি থেকে থাকবে। কারণ আপনার মনে রাখার সুবির্ধাথে আপনি এইসকল সহজ শব্দ বেছে নেন কিন্তু আপনি  হয়তো জানবেন না যে আপনার এই সহজ শব্দগুলোকেই অতি সহজেই ক্রাক করা যাবে। আর একই পাসওর্য়াডকে যদি আপনার সকল সাইটে ব্যবহার করে থাকেন তাহলে সেক্ষেত্রে একটি মাত্র পাসওর্য়াড হ্যাকড হয়ে গেলেই অনান্য সাইটগুলোও একই রকম রিস্কে থাকবে।

এই সমস্যার সমাধান হিসেবে আপনি ব্যবহার করতে পারেন পাসওর্য়াড ম্যানেজার। পাসওর্য়াড ম্যানেজারের মাধ্যমে আপনি নতুন নতুন সব ইউনিক এবং শক্তিশালি পাসওর্য়াড জেনারেট করতে পারবেন এবং সকল সাইটের জন্য আলাদা আলাদা করে পাসওর্য়াড মনে রাখার কাজটিও করিয়ে নিতে পারবেন।

আর যেখানে আপনি প্রিমিয়াম সকল কাজের জন্য সফটওয়্যারগুলোকে ফ্রিতে ব্যবহার করে থাকেন সেখানে পাসওর্য়াডের জন্য আপনি টাকা খরচ করে সফটওয়্যার কিনবেন? তাই আজ আমি টিউনার গেমওয়ালা টেকটিউনসে আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি ২০১৮ সালের জন্য বেস্ট কয়েকটি ফ্রি পাসওর্য়াড ম্যানেজার যেগুলো ব্যবহার করে আপনার পাসওর্য়াডগুলোকে আরো শক্তিশালি ও সুরক্ষিত করে রাখতে পারবেন। তো চলুন আর ভূমিকায় কথা না বাড়িয়ে সরাসরি টিউনে চলে যাই:

বেসিক ফিচারসমূহ:

প্রায় সকল ফ্রি পাসওর্য়াড ম্যানেজার দিয়ে আপনি বেসিক কিছু ফিচার পাবেন যেগুলো সকল পাসওয়ার্ড ম্যানেজারের ক্ষেত্রে প্রায় একই রকম থাকবে। আমাদের পাসওর্য়াড ম্যানেজাররা আমরা যখন কোনো ওয়েবসাইটে ঢুকি আর ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করে থাকি তখন এরা উক্ত ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ডকে স্টোর করে রাখবে। আবার আপনি যখন উক্ত ওয়েবসাইটের ইউজারনেম কিংবা পাসওর্য়াড যদি পরিবর্তন করে থাকেন তখন পাসওর্য়াড ম্যানেজারটিও আপনার স্টোরকৃত পাসওর্য়াড বা ইউজারনেমটি আপগ্রেড করে নেবার জন্য আপনাকে বলবে।  সাধারণত সিকিউর ওয়েবসাইটগুলোতে (HTTPS) সাইটগুলোতে পাসওয়ার্ডগুলো এভাবে সংরক্ষিতভাবে থাকতে পারে কিন্তু অনান্য সাইটগুলোর জন্য এভাবে পাসওয়ার্ড ম্যানেজার কাজ নাও করতে পারে। এই সমস্যার সমাধানের জন্য কিছু কিছু পাসওর্য়াড ম্যানেজার আপনাকে নিজে নিজে ম্যানুয়ালি ভাবে পাসওর্য়াড ক্যাপচার করার সুযোগ করে দেয়। আর স্টোরকৃত পাসওর্য়াডযুক্ত সাইটে আপনি পরবর্তীতে রিভিজিট করার সময় এই পাসওয়ার্ড ম্যানেজারটি আপনার জন্য ডাটাগুলোকে আগে থেকে সঠিক তথ্য দিয়ে ফিলআপ করে রাখবে। যাতে আপনি একটি ক্লিকেই লগইন করে নিতে পারেন। এই কাজটি শুধুমাত্র পাসওর্য়াডের ক্ষেত্রেই নয় যারা সার্ভের কাজ করে থাকেন এবং প্রতিটি সার্ভে ফর্মে একই তথ্য বারবার ইনপুট করে থাকেন তাদের জন্যও এইসকল পাসওর্য়াড ম্যানেজার বেশ কাজে দেবে।

এডভান্স ফিচার!

আপনি পাসওর্য়াড ম্যানেজার কেন ব্যবহার করবেন? এই প্রশ্নের উত্তরে প্রথমেই যেটা বলবেন সেটা হলো আপনার বর্তমান দুর্বল পাসওর্য়াডকে শক্তিশালি পাসওর্য়াডের সাথে পরিবর্তন করিয়ে নেওয়া এবং অনেক গুলো সাইটের জন্য অনেক ধরনের ইউনিক এবং শক্তিশালি পাসওয়ার্ডগুলোকে স্টোর করে রাখা। এরা শক্তিশালি পাসওয়ার্ড জেনারেট করলেও শেষে গিয়ে আপনাকেই পাসওর্য়াডটির অক্ষরগুলো পরিবর্তন এবং পাসওর্য়াডের ছোট বা বড় এই সিদ্ধান্তগুলো আপনার উপরই বর্তাবে।

আর আপনি যখন আপনার সকল পাসওর্য়াডগুলোকে একই জায়গায় স্টোর বা জমা করে রাখবেন তখন উক্ত জায়গাটির নিজের সুরক্ষার ব্যবস্থা করাটাও আপনার একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হিসেবে বিবেচনা করার দরকার হবে। আর তাই পাসওর্য়াড ম্যানেজারের সুরক্ষার জন্য তার জন্য একটি মাস্টার পাসওর্য়াড তৈরি করে রাখতে পারেন যেটি দিয়ে আপনি উক্ত পাসওর্য়াড ম্যানেজারে প্রতিবার প্রবেশ করবার সময় ইনপুট দিয়ে তারপর ঢুকতে হবে। এভাবে আপনি আপনার পাসওর্য়াড ম্যানেজারকে আরো সুরক্ষিত করে রাখতে পারেন।

আর তার থেকেও বড়সড় ধরনের সিকুরিটির প্রয়োজন হলে আপনি টু-ফেক্টর অথেনটিকেটর ব্যবহার করতে পারেন। যেখানে আপনি বায়োমেট্রিক, ফিঙ্গারপ্রিন্ট কিংবা ভয়েস পাসওর্য়াডও ব্যবহার করতে পারেন। অনেক পাসওর্য়াড ম্যানেজারের এডভান্সড ফিচারে গুগল অথেনটিকেটরও থেকে থাকে। যার মাধ্যমে প্রতিবার লগইন করার জন্য আপনার মোবাইল নাম্বারে গুগল থেকে একটি কোড চলে যাবে আর সেটি সঠিক ভাবে প্রবেশ না করালে আপনি আর লগইন করতে পারবেন না।

তো পাসওর্য়াড ম্যানেজার কী এবং তাদের মূল কাজ কি সেটা নিয়ে আশা করি আর কোনো প্রশ্ন থাকবে না আপনাদের মনে। তবে এরপরেও যদি কোনো প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই সেটা টিউনের নিচে টিউমেন্টে আমাকে জানাবেন আমি সেটার উত্তর দিতে চেষ্টা করবো। আর এখন ২০১৮ সালে ব্যবহার করার জন্য বেস্ট ৭টি ফ্রি পাসওর্য়াড ম্যানেজার এর লিস্ট আমি নিচে আপনাদের জন্য উপস্থাপন করছি:

১) লাস্টপাস

আমাদের আজকের লিস্টে একদম প্রথম স্থানে রয়েছে LastPass পাসওর্য়াড ম্যানেজার। ফ্রিতে যদি আপনি কোনো পাসওর্য়াড ম্যানেজার ব্যবহার করে থাকেন তাহলে লাস্টপাসের থেকে ভালো সার্ভিস আপনি আর অন্য কোথাও পাবেন না। একটি ফ্রি সার্ভিস হিসেবে লাস্টপাস উইন্ডোজ, ম্যাকওএস, অ্যান্ড্রয়েড, আইওএস ডিভাইসেও তাদের সার্ভিসটি আপনার জন্য অফার করবে। তবে কোনো কিছুই ১০০% পারফেক্ট নয়। ঠিক তেমনটি এই লাস্টপাস ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার এবং অপেরা ব্রাউজারগুলো সার্পোট করে না। তবে আপনি চাইলে এগুলো দিয়ে ট্রাই করে দেখতে পারেন।

যে কারণে আজকের আমাদের লিস্টে লাস্টপাস এক নম্বরে রয়েছে তার কারণ হচ্ছে লাস্টপাস তাদের ফ্রি সার্ভিসে বিভিন্ন এডভান্সড পাসওর্য়াড ম্যানেজমেন্ট ফিচারগুলো দিয়ে থাকে তাই।

বর্তমানে লাস্টপাসের ৪র্থ তম সংষ্করণ বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। লাস্টপাস সফটওয়্যারটি তাদের অফিসিয়াল লিংক থেকে ডাউনলোড করে নিন। এবার আপনাকে লাস্টপাসের ওয়েবসাইট থেকে একটি ফ্রি একাউন্ট খুলে নিতে হবে। এবার একাউন্টটি দিয়ে আপনি লাস্টপাসের ফ্রি সংস্করণটি ব্যবহার করা শুরু করে দিতে পারেন। তবে এর আগে আপনাকে একটি মাস্টার পাসওর্য়াড বেছে নিতে হবে। মাস্টার পাসওর্য়াড ব্যাতিত আপনি পরবর্তীতে আর লাস্টপাস ব্যবহার করতে পারবেন না তাই মাস্টার পাসওর্য়াড নির্বাচন করার আগে ভালো করে ভেবে চিন্তে নিবেন।

মাস্টার পাসওর্য়াডটি কমপক্ষে ৮ ডিজিটের হতে হবে। আর প্রথমবার ব্যবহারের জন্য লাস্টপাস প্রতিবার পপআপ মেসেজের মাধ্যমে আপনাকে সবকিছু বুঝিয়ে দিয়ে যাবে। এছাড়াও লাস্টপাস প্রথমবার ইন্সটলের সময় এটি আপনার ব্রাউজার থেকে পাসওর্য়াড ইম্পোর্ট করার জন্য অনুমতি চাইবে এবং ব্রাউজারে পাসওর্য়াড ক্যাপচার বন্ধ করার জন্যে বলবে। এবার এগুলোর সেটিংস আপনার পছন্দ মতো করে নিয়ে নিবেন।

➡ LastPass ডাউনলোড করার জন্য তাদের অফিসিয়াল সাইট হতে ঘুরে আসুন এখানে ক্লিক করে।

২) লগমিওয়ান্স পাসওর্য়াড ম্যানেজমেন্ট সুইট!

আমাদের আজকের ফ্রি পাসওর্য়াড ম্যানেজারের লিস্টে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে এই LogMeOnce Password Management Suite Premium এর ফ্রি সংস্করণটি। লাস্টপাসের মতোই এটারও একটি ফ্রি সংস্করণ বাজারে রয়েছে। আর লগমিওয়ান্স এর ও রয়েছে উইন্ডোজ, ম্যাকওএস, লিনাক্স, আইওএস এবং অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসগুলোতেও তাদের এই সফটওয়্যারটি আপনি পেয়ে যাবেন। এই সফটওয়্যারে অথেনটিকেশনের জন্য রয়েছে অনেকগুলো অপশন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য অপশনটি হচ্ছে Two-factor authentication সিস্টেম। ক্রেডিট কার্ডের জন্য রয়েছে সিকিউর ওয়ালেট ফিচার, রয়েছে অটোমেটিক্যালী পাসওর্য়াড পরিবর্তনের সুবিধা ইত্যাদি। তবে SMS এর মাধ্যমে Two-factor Authenticaiton ফিচারটি ব্যবহার করলে আপনার মোবাইলে এসএমএস চার্জ কাটতে পারে।

তবে লগমিওয়ান্সের নতুন সংস্করণে রয়েছে পাসওর্য়াড ফ্রি-অথেনটিকেশন সিস্টেম, মানে এবার আর আপনাকে মাস্টার পাসওর্য়াডটাও মনে রাখতে হবে না, আপনি নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে এই সফটওয়্যারটি কোনো প্রকার পাসওর্য়াড মনে না রেখেই চালিয়ে যেতে পারবেন। আপনার যদি কোনো স্মার্টফোন থাকে তাহলে সেটার সাহায্যেই মাস্টার পাসওয়ার্ডটিকে আর আপনার মনে রাখার প্রয়োজন হবে না, তবে আপনার এই স্মার্টফোনকে এরপর থেকে একটু সর্তকতার সাথে ব্যবহার করতে হবে কারণ আপনার স্মার্টফোনটিই এখন থেকে মাস্টার পাসওর্য়াডের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হবে এই লগ-মি-ওয়ান্স পাসওর্য়াড ম্যানেজারে। লাস্টপাসের মতো এই সফটওয়্যারটিও একদম ফ্রিতে আপনি ব্যবহার করতে পারবেন যেখানে কতগুলো পাসওর্য়াড সংস্করণ করে রাখতে পারবেন সেটার কোনো লিমিট থাকছে না। তবে এটার একটি প্রিমিয়াম সংস্করণ রয়েছে যেটার সুবিধাগুলো উপভোগ করতে হলে LogMeOnce Password Management Suite Ultimate প্যাকেজটি কিনে নিতে হবে।

লগ-মি-ওয়ান্স পাসওর্য়াড ম্যানেজারে আপনি লাস্টপাস, ড্যাসল্যান, রোবোফর্ম সহ প্রায় ১৯টি পাসওর্য়াড ম্যানেজার থেকে পাসওর্য়াড ইম্পোর্ট করে নিতে পারবেন।

অনান্য পাসওর্য়াড ম্যানেজারে মতোই প্রথমে আপনাকে তাদের অফিসয়াল ওয়েবাসাইটে গিয়ে একটি ফ্রি একাউন্ট খুলে নিতে হবে। নিজের নাম, ইমেইল এড্রেস দিয়ে একাউন্ট তৈরির প্রথম ধাপটি সম্পূর্ণ করে নিন। এবার দ্বিতীয় ধাপে আপনার সামনে একটি অপার রাখা হবে আর সেটি হলো আপনি কোনো মাস্টার পাসওর্য়াড ব্যবহার করতে চান কিনা। মাস্টার পাসওর্য়াড ব্যবহার করতে না চাইলে আপনাকে একটি স্মার্টফোনের সাহায্য নিতে হবে। আমি টেস্টিং করার জন্য মাস্টার পাসওর্য়াড বিহীন একটি একাউন্ট খুলতে গেলে সেটি আমার আইফোন ৬ ডিভাইসে একটি টেক্স পাঠায় যেখানে কিছু কোড এবং লগ-মি-ওয়ান্স এর একটি লিংক ছিলো, কোডটি একাউন্ট খুলার জায়গায় বসিয়ে ডিভাইস থেকে লিংকে গিয়ে ডিভাইসটিকে মাস্টার পাসওর্য়াডের বিকল্প হিসেবে আমি সেট করে নিতে পারলাম। তবে আপনাদের কাছে এই প্রক্রিয়াটি ঝামেলাপূর্ণ মনে হলে আপনি একটি মাস্টার পাসওর্য়াডযুক্ত একাউন্ট খুলে নিতে পারেন।

➡ LogMeOnce Password Management Suite সফটওয়্যারটি ডাউনলোড করতে এদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে চলে যান এখানে ক্লিক করে।

৩) ১ইউ পাসওয়ার্ড ম্যানেজার।

আমাদের আজকের লিস্টের ৩য় স্থানে রয়েছে 1U Password Manager, অনান্য পাসওর্য়াড ম্যানেজারের মতোই এটারও রয়েছে একটি ফ্রি সংস্করণ এবং প্রিমিয়াম সংস্করণ।

১ইউ পাসওর্য়াড ম্যানেজারের রয়েছে কয়েকটি উচ্চপ্রযুক্তির অথেনটিকেশন সিস্টেম, যার মধ্যে রয়েছে ফেসিয়াল বায়োমেট্রিক সিস্টেম, রয়েছৈ ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার অথেনটিকেশন সিস্টেম, রয়েছে liveness detection ইত্যাদি। এছাড়াও একটি আইওএস কিংবা অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস দিয়ে আপনি মাল্টিপল পিসি বা ডেক্সটপে সিংঙ্ক করিয়ে নিতে পারবেন। তবে এর দুর্বল দিকগুলোর মধ্যে একটি হলো এটিতে আপনি অন্য কোনো পাসওর্য়াড ম্যানেজারের থেকে পাসওর্য়াড ইম্পোর্ট করাতে পারবেন না আর সিংঙ্কিং সিস্টেমটি সম্পূর্ণ অটোমেটিক ফিচারটিও এখানে নেই। আর সফটওয়্যারটির কিছু গুরুত্বপূর্ণ ফিচারগুলো শুধুমাত্র মোবাইল ডিভাইস ভিক্তিক হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। রয়েছে দুর্বল পাসওর্য়াড জেনারেটর এবং কোনো password-strength rating নেই সফটওয়্যারটিতে। তবে এর পাওয়ারফুল বায়োমেট্রিক ফিচারের কারণে এটি আজ আমাদের লিস্টে ৩য় স্থানে রয়েছে।

সফটওয়্যারটি ইন্সটল করতে হলে এবং ব্যবহার করতে হলে আপনার কাছে অবশ্যই একটি স্মার্টফোন থাকতে হবে। প্রথমে আইটিউনস স্টোর কিংবা গুগল প্লে-স্টোর থেকে 1U এপটি আপনার ডিভাইসে ডাউনলোড করে নিতে হবে। তারপর একটি ফ্রি একাউন্ট খুলে নিতে হবে আপনার মোবাইল নাম্বার নিয়ে। তারপর আশাকরিয়ে নিতে পারবেন।

➡ 1U Password Manager ডাউনলোড করলে চাইলে চলে যান তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে এখানে ক্লিক করে।

৪) এনপাস পাসওয়ার্ড ম্যানেজার ৫

আমাদের আজকের লিস্টে ৪র্থ স্থানে রয়েছে Enpass Password Manager 5. আর অনান্য পাসওয়ার্ড ম্যানেজারের মতোই এটাতেও রয়েছে একটি ফ্রি সংস্করণ এবং প্রিমিয়াম সংস্করণ। এই এনপাস পাসওর্য়াড ম্যানেজারের সুবিধাগুলো হলো এতে রয়েছে অটোমেটিক পাসওয়ার্ড ক্যাপচার, অটোমেটিক রিপ্লে, রয়েছে বিভিন্ন প্লাটফর্মের সার্পোটের সুবিধা, শক্তিশালি পাসওর্য়াড জেনারেটর, ক্লাউড ভিক্তিক সিংঙ্কি সিস্টেম সহ আরো বেশ কিছু ফিচার রয়েছে এনপাস পাসওর্য়াড ম্যানেজারে। তবে এটির মোবাইল ডিভাইসের সার্পোটটি ফ্রি সংষ্করণে নেই, আর পাসওর্য়াড ইম্পোট ফিচারটি মাঝে

মাঝে ফেইল দেখাচ্ছে। তবে ফ্রিতে ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য এটি যথেষ্ট ভালো। এটি বর্তমানে উইন্ডোজ, ম্যাকওএস, লিনাক্স, আইওএস, অ্যান্ড্রয়েড, উইন্ডোজ ফোন, ব্ল্যাকবেরি সহ বিভিন্ন প্লাটফর্মের জন্য আপনি ব্যবহার করতে পারবেন।

➡ Enpass Password Manager ডাউনলোড করে নিন এখান থেকে।

৫) কিপাস ২.৩৪!

আমাদের আজকের লিস্টের পঞ্চম স্থানে রয়েছে KeePass পাসওর্য়াড ম্যানেজার সফটওয়্যারটি। এবং অনান্য পাসওর্য়াড ম্যানেজারের মতোই কিপাসে রয়েছে একটি ফ্রি সংস্করণ এবং প্রিমিয়াম পেইড সংস্করণ। কিপাস দিয়ে আপনি যেকোনো ওয়েবসাইটের পাশাপাশি যেকোনো এপ্লিকেশনেরও পাসওর্য়াডগুলোকে স্টোর করে রাখতে পারবেন খুব সহজেই। এতে রয়েছে শক্তিশালি পাসওর্য়াড জেনারেটর, রয়েছে Two-factor অথেনটিকেশন, অনান্য পাসওর্য়াড ম্যানেজার থেকে পাসওর্য়াড ইর্ম্পোটের সুবিধা, ব্রাউজারের ১০০টির বেশি প্লাগইন ইন্সটলের সুবিধাসহ আরো অনেক কিছু্। আর দুবর্লতার দিক থেকে বলতে গেলে বলা যায় যে কিপাস সফটওয়্যারে অটোমেটিক পাসওর্য়াড ক্যাপচার ফিচারটি নেই, নেই পাসওর্য়াড রিপ্লে লাঞ্চ ফিচারটি আর মোবাইল সার্পোট আপনি এখানে পাচ্ছেন না আর অনান্য ডিভাইসে সিংঙ্কিং পদ্ধতিটিও বেশ ঝামেলাপূর্ণ। তবে ফ্রিতে পাসওর্য়াড ম্যানেজার হিসেবে কিপাস তেমন মন্দ নয় তবে এটি থার্ড পাটিং প্লাগইনসের উপর বেশি নির্ভরশীল।

➡ KeePass 2.34 সফটওয়্যারটি ডাউনলোড করে নিন তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে এখানে ক্লিক করে।

৬) ওয়ানআইডি।

আমাদের আজকের লিস্টে শেষের দিকে রয়েছে oneID পাসওয়ার্ড ম্যানেজার। তবে এটার কোনো পেইড বা প্রিমিয়াম সংস্করণ নেই তাই এটার ফিচারগুলোও সীমিত আকারে দেওয়া রয়েছে। এতে সুবিধা হিসেবে রয়েছে মাস্টার পাসওর্য়াড নেই বা মাস্টার পাসওয়ার্ড এই ওয়ানআইডি সফটওয়্যারে দেওয়ার প্রয়োজন হয় না, শুধুমাত্র ফোন কনফার্মেশনের মাধ্যমেই সফটওয়্যারে এবং প্রতিটি সাইটের পাসওর্য়াডগুলোকে সংরক্ষিত করে রাখা হয়ে থাকে, এবং আনইউজুয়াল লগইনগুলোকেও এটি প্রতিরোধ করতে সক্ষম। এছাড়াও সফটওয়্যারটির মোবাইল সংষ্করণও বাজারে রয়েছে।

অন্যদিকে এর দুর্বলদিক হলো শুধুমাত্র ডিভাইস অনলি অথেনটিকেশন সিস্টেম, যেটার কারণে আপনার ডিভাইসে এক্সট্রা সিকুরিটির দিকে আপনার নজর দেওয়ার প্রয়োজন হয়, অন্য কোনো পাসওয়ার্ড ম্যানেজার থেকে পাসওর্য়াড ইম্পোর্ট বা এক্সপোর্টের সুবিধা নেই, নেই পাসওয়ার্ড জেনারেটর, নেই পাসওর্য়াড স্ট্রেন্থ রেটিং, নেই কোনো ওয়েব ফরম ফিলিং।

তো শেষে এসে বলা যায় যে ডিভাইস অনলি অথেটিকেশন ব্যাপারটি এই সফটওয়্যারের জন্য যেমন প্লাস পয়েন্ট ঠিক তেমনটি নেগেটিভ পয়েন্টও বটে। তবে ফ্রিতে এবং সহজে ব্যবহারযোগ্য বিধায় ওয়ানআইডি পাসওয়ার্ড ম্যানেজারটি আমাদের আজকের লিস্টের শেষের দিকে রয়েছে।

➡ oneID সফটওয়্যারটি ডাউনলোড করে নিন এখানে ক্লিক করে।

৭) সিমানটেক নরটন আইডেন্টিটি সেইফ

আজ আমাদের লিস্টের সর্বশেষে রয়েছে Symantec Norton Identity Safe এন্টিভাইরাস হিসেবে আমরা অনেকেই নরটর ব্যবহার করে আসছি কিংবা অতীতে আমরা কোনো একসময় নরটর এন্টিভাইরাস ব্যবহার করতাম। এবার পাসওর্য়াড ম্যানেজার সেক্টরেও আপনি নরটনের একটি প্রডাক্ট পাচ্ছেন। তাও আবার ফ্রিতে! তবে নরটনের প্রিমিয়াম এন্টিভাইরাস প্যাকেজেও আপনি এই ফিচারটি ফ্রিতে পেয়ে থাকতেন কিন্তু এভাবে আপনি চাইলে আলাদা ভাবে ব্যবহার করতে পারছেন। তবে প্রিমিয়াম এন্টিভাইরাস প্যাকেজের সাথে এটা কিছু পার্থক্য রয়েছে।

এর উল্লেখযোগ্য ফিচারের মধ্যে রয়েছে এটি ফ্রি, রয়েছে অটোমেটিক পাসওয়ার্ড ক্যাপচার এবং রিপ্লে সুবিধা, ওয়েব ফর্ম ফিলআপের সুবিধা, এছাড়াও উইন্ডোজ, আইওএস, অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসের সাথে সিংঙ্ক এর সুবিধাসহ ওয়েবসাইট সেফটির জন্য রয়েছে নরটন টুলবার। আর দুর্বলতার ক্ষেত্রে রয়েছে ফায়ারফক্সের নতুন সংস্করণের সাথে খাপ খাওয়াতে পারবে না, লিমিটেড পাসওর্য়াড ইম্পোর্ট সুবিধা, পাসওর্য়াড জেনারেটর বেশি শক্তিশালি নয়। আর প্রিমিয়াম অনান্য পাসওর্য়াড ম্যানেজারের সাথে এটার অনেক ফিচারের পার্থক্য রয়েছে। তবে ফ্রিতে বেসিক কাজকর্ম সেরে নেবার জন্য নরটর আইডেন্টিটি সেইফ আপনার হয়ে যাবে। চাইলে আজই এটা ট্রাই করে দেখতে পারেন।

➡ Symantec Norton Identiy Safe ডাউনলোড করে নিন এদের অফিসিয়াল সাইট থেকে।

তো এই ছিল আজকের আমাদের ফ্রি পাসওর্য়াড ম্যানেজারের ২০১৮ সালের টপ ৭টি লিস্ট। এইসকল ফ্রি পাসওর্য়াড ম্যানেজার দিয়ে আপনি আপনার সকল পাসওর্য়াডকে শক্তিশালি এবং সুরক্ষিতভাবে সংরক্ষণ করে রাখতে পারবেন। এদের নিয়ে কোনো সমস্যা বা টিউন সম্পর্কে আপনার কোনো মতামত থাকলে সেটা অবশ্যই নিচের টিউমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। তো আজ এ পর্যন্তই থাক। আগামীকাল অন্য কোনো টপিক নিয়ে আমি টিউনার গেমওয়াল চলে আসবো আপনাদেরই প্রিয় বাংলা টেকনোলজি ব্লক টেকটিউনসে।

Level 10

আমি ফাহাদ হোসেন। Supreme Top Tuner, Techtunes, Dhaka। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 661 টি টিউন ও 428 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 149 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

যার কেউ নাই তার কম্পিউটার আছে!


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস