অনলাইনে পাসপোর্ট করার এ টু জেড

কেমন আছেন সবাই? অনেকদিন আমার প্রিয় টেকনিউটস ব্লগটিতে লিখা হয়না। নানা কাজের চাপে প্রিয় এই ব্লগটিতে আশা হত না। তাই আশা করছি এবার নিয়মিত হব টেকটিউনসে। কথা না বাড়িয়ে কাজে কথা আসি।

দেশের বাইরে যেতে চাইলে সবার আগে পাসপোর্ট করতে হবে। এটা সবার জানা। তবে পাসপোর্ট করতে গিয়ে নানা ঝামেলা পোহাতে হয় এমন ধারণাই জন্মেছে সবার মধ্যে। তবে সময়ে বদলিয়েছে। প্রযুক্তির উন্নয়নে এখন আর আগের মত কষ্ট পোহাতে হয় না।

অনলাইনের সুবিধা যোগ হওয়ায় এখন ঘরে বসে পাসপোর্ট তৈরির প্রাথমিক সব কাজ সেরে ফেলা যায়। এতে যেমন সময় বাঁচে, তেমনি অহেতুক দৌড়াদৌড়ির ঝামেলাও থাকে না। দালাল ধরার উটকো ঝামেলা থেকেও মুক্তি মেলে।

সম্প্রতি কয়েকটি নির্দিষ্ট ব্যাংকেও অনলাইনে পাসপোর্টে টাকা জমা দেওয়ার ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। যা এ প্রক্রিয়াকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে।

Pasport-techshohor

কয়েকটি ধাপ অবলম্বন করে অনলাইনে খুব সহজে পাসপোর্টের জন্য আবদেন করা যায়। এ টিউটোরিয়ালে তুলে ধরা হলো অনলাইনে পাসপোর্টের আবেদন করার পুরো প্রক্রিয়াটি।

১ম ধাপ : টাকা জমা দেওয়া

অনলাইনে পাসপোর্ট করতে হলে প্রথমে টাকা জমা দিতে হবে। কেননা অনলাইনে ফর্ম পূরণ করার সময় টাকা জমা দেওয়ার তারিখ এবং জমা দানের রিসিটের নম্বর উল্লেখ করার প্রয়োজন হয়। তাই ফর্ম পূরণের আগে টাকা জমা দিতে হবে।

রেগুলার ফি ৩ হাজার টাকা এবং জরুরি পাসপোর্ট করতে হলে তার ফি ৬ হাজার টাকা। রেগুলার ফিতে পাসপোর্ট পেতে সময় লাগবে এক মাস। জরুরিভিত্তিতে করতে চাইল ১৫ দিনের মত সময় লাগবে।

২য় ধাপ : অনলাইনে ফর্ম পূরণ করা

এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। খুব মনোযোগ দিয়ে অনলাইনের ফর্ম পূরণ করতে হবে। যেন কোনো ভুল ক্রুটি না হয়।

অনলাইনে ফর্মপূরণের জন্য প্রথমে পাসপোর্ট অফিসের এ সাইটে যেতে হবে।

pasport-techshohor

তারপর “I have read the above information and the relevant guidance notes” টিক চিহ্ন দিয়ে “continue to online enrollment” এ ক্লিক করতে হবে।

আপনার নাম ও ব্যক্তিগত তথ্যাদি- যেমন: নামের বানান,  পিতা-মাতার নাম যেন শিক্ষাগত সার্টিফিকেট কিংবা জাতীয় পরিচয়পত্রের মতো একই হয়। কোনো তথ্য ভুল হলে পাসপোর্টে হতে সমস্যা হবে।

মেইল অ্যাড্রেস ও মোবাইল নম্বার দেওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই যেটি ব্যবহৃত হচ্ছে সেটি দেওয়া উচিত।
টাকা জমা দেওয়ার তারিখ এবং রিসিট নম্বর দিতে হবে। পার্সপোট টাইপ দিতে হবে “ordinary”। যে অংশগুলো লাল স্টার মার্ক দেওয়া রয়েছে, সেগুলো অবশ্যই পূরণ করতে হবে।

online-techshohro

Delivery Type অংশে ৩০ দিনের জন্য হলে Regular এবং ১৫ দিনের জন্য হলে Express সিলেক্ট করতে হবে।

সম্পূর্ণ ফর্মটি পূরণ হলে পুনরায় এটি চেক করতে হবে। সব তথ্য টিক আছে কি না, তা যাচাই করে পরবর্তী ধাপে যেতে হবে।

সবশেষে পূরণ করা ফর্মটি সাবমিট করতে হবে। সফলভাবে সাবমিট করা হলে পূরণ করা ফর্মের একটি পিডিএফ কপি যে ই-মেইল আইডি দিয়ে ফর্ম পূরণ করা হয়েছে, সেখানে চলে আসবে।

৩য় ধাপ : ফর্মের প্রিন্ট এবং সত্যায়ন

এবার মেইলে আসা পিডিএফ কপির ২ কপি কালার প্রিন্ট করতে হবে। এতে আবেদনকারীর স্বাক্ষর করার স্থনে সই করতে হবে।

এবার নিজের চার কপি ছবি, জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি এবং পাসপোর্ট ফর্ম নিয়ে পরিচিত কোনো প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তার কাছ থেকে সত্যায়িত করে নিতে হবে। পরিচিত কাউকে দিয়ে সত্যায়ন করালে ভাল। কারণ ওই কর্মকর্তার নাম, যোগাযোগ ও ফোন নম্বার এবং জাতীয় পরিচয় পত্রের নম্বর ফর্মে লিখতে হয়।

৪র্থ ধাপ : সত্যায়ন শেষে পুরো ফর্মটি রিচেক করা

সত্যায়িত ছবি এবং ব্যাংকের রিসিট আঠা দিয়ে ফর্মের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে। জাতীয় পরিচয়পত্রের সত্যায়িত কপিটিও প্রিন্ট করা ফর্মটির সঙ্গে যুক্ত করে দিতে হবে।

যদি ছাত্র হিসাবে আবেদন করলে অবশ্যই স্টুডেন্ট আইডি কার্ডের ফটোকপি সত্যয়িত করে ফর্মের সঙ্গে যুক্ত করতে দিতে হবে।

এসব ধাপ শেষ করলে ফর্মটি জমা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত।

৫ম ধাপ : ফর্ম জমা দেওয়া  এবং ছবি তোলা

অনলাইনে ফর্ম পূরণের জন্য ১৫ দিনের মধ্যে ফর্মের প্রিন্ট কপি, সত্যায়িত ছবি, জাতীয় পরিচয়পত্র এবং স্টুডেন্ট আইডি কার্ডের ফটোকপি নিয়ে যেতে হবে পাসপোর্ট অফিসে।

পাসপোর্ট অফিসে যাওয়ার সময় অবশ্যই সাদা পোশাক পড়া উচিত নয়। কেননা ছবি তুললে সাদা পোশাকে তা ভালো হবে না। এ কারণে অন্য রংয়ের পোশাক পড়ে গেলে ছবি ভালো হবে।

সকালের দিকে পাসপোর্ট অফিসে গেলে ভালো হয়। তখন লাইনে ভিড় কম থাকে। সরাসরি মেইন গেইট দিয়ে মূল অফিসে ঢুকতে হবে। সেখানে দায়িত্বরত সেনা সদস্যকে জিজ্ঞেস করুণ কোন রুমে যেতে হবে। সাইন শেষে জানিয়ে দেওয়া হবে ছবি তোলার জন্য কোন রুমে যেতে হবে।

resize_1401692974

এরপর নির্দিষ্ট রুমে গিয়ে সিরিয়াল আসলে ছবি তোলার জন্য ডাক পড়বে। ছবি তোলার পর ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিতে হবে।

এবার পাসপোর্ট রিসিভের একটা রিসিট দেওয়া হবে। পুলিশ ভেরিফিকেশন সাপেক্ষে, রিসিট পাওয়ার একমাস বা ১৫ দিনের মধ্যেই আপনি পাসপোর্ট পাবেন।

নির্ধারিত দিনে রিসিভটি নিয়ে পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে হবে।
আশা করি কাজে লাগবে। যদি এরপর ও কোন সমস্যা থাকে তাহলে মন্তব্যে জানান। চেষ্টা করব সমাধান দেয়ার জন্য যদি তা আমার জানা থাকে।

লেখাটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল এখানে

Level 0

আমি তুসিন আহমেদ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 14 বছর 1 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 49 টি টিউন ও 555 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

আমি তুসিন আহমেদ । আমার ব্লগ http://tusin.wordpress.com/ফেইসবুকে আমি facebook.com/tusin.ahmed and yahoo তে [email protected]


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

Level 0

ভাইজান লিংকগুলো ঠিক করেন একটা লিংকও ঠিক নাই।

    @zahid20: লিংকটি ঠিক হয়েছে। এবার দেখুন। দু:খিত লিংকটি সঠিকভাবে কাজ না করার জন্য।

একটা লিংক ও কাজ করে না

    @ratjaga pakhi: লিংকটি ঠিক হয়েছে। এবার দেখুন। দু:খিত লিংকটি সঠিকভাবে কাজ না করার জন্য।

Please Update/Repair the links….

    @জুমায়েদ তানবীন: লিংকটি ঠিক হয়েছে। এবার দেখুন। দু:খিত লিংকটি সঠিকভাবে কাজ না করার জন্য।

Level 0

আমিও একটি লিংক ও ওপেন করতে পারিনি।

লিংকটি ঠিক হয়েছে। এবার দেখুন। দু:খিত লিংকটি সঠিকভাবে কাজ না করার জন্য।

Level 0

Very nice post. I do not understand, if I have to go bank, color print, First class officer attastted and long line, why I will go online?

Another thing, I saw few comments here, they are not say anything about this long job tune, but they are busy about link not working. Strange!